বাংলাদেশ-ভারত বৈঠক-আলোচনায় চরম উদ্বেগ, যৌথ বিবৃতিতে সন্তুষ্টি! by মেহেদী হাসান
সীমান্তে গুলির ঘটনায় ভারতের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে 'চরম উদ্বেগ' জানিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে সীমান্তে গুলির ঘটনা কমায় বাংলাদেশ ও ভারতের সন্তুষ্টির কথা স্থান পেয়েছে। বহু প্রত্যাশিত স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি এ দেশের অন্যতম প্রধান ইস্যু হলেও ১৪ অনুচ্ছেদের বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গের
জায়গা হয়েছে ১৩তম অনুচ্ছেদে। বাংলাদেশে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতি আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো স্বীকার করা না হলেও এবারের যৌথ বিবৃতিতে তা স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যৌথ বিবৃতিতে ভারতের প্রত্যাশারই প্রতিফলন ঘটেছে। স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের মতো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বিবৃতির প্রথম দিকে রাখতে না পারায় জাতীয় স্বার্থকে বিকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের অভিমত।
সূত্র জানায়, খসড়া বিবৃতিতে ওপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো এভাবে ছিল না। শেষ মুহূর্তে সংশ্লিষ্টদের না জানিয়েই এটি করা হয়। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রসচিব সি কিউ কে মুশতাক আহমেদের বক্তব্য চরম বিস্ময় ও গভীর হতাশা সৃষ্টি করেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তরে বন্দিবিনিময় চুক্তি না থাকা কোনো বাধা নয়- এমন ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একপর্যায়ে তিনি বলেন, 'ইতিপূর্বে (হস্তান্তরের) দুতিনটি ঘটনা ঘটেছে।'
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপারে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রশংসা বারবার করছে নয়াদিল্লি। ভারতের আদালতে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে ধরা পড়ার পর তাদের ভারতের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো স্বীকার করেনি ঢাকা বা নয়াদিল্লি। কিন্তু মঙ্গলবার ঢাকায় স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রসচিব কার্যত তা স্বীকার করেছেন।
যৌথ বিবৃতির তৃতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'উভয় পক্ষ সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতর ইন্টিগ্রেটেড চেক পয়েন্ট (আইসিপি)/ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নকাজের অনুমতি দিতে রাজি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, এর মাধ্যমে ভারতকে 'ব্ল্যাংক চেক' দেওয়া হয়েছে। এত দিন ক্ষেত্রবিশেষে বিবেচনা করে বাংলাদেশ এ অনুমতি দিত।
পঞ্চম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ভারতের নিরাপত্তাবিষয়ক উদ্বেগ নিরসনে, বিশেষ করে সে দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব তাঁর সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেছেন। সূত্র বলেছে, পঞ্চম অনুচ্ছেদের ওই বাক্যে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে নিয়েছে, এ দেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতি রয়েছে। অতীতে কখনো এত স্পষ্ট করে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতির কথা বলা হয়নি।
সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি চালানোর বিরোধী। বাংলাদেশ বারবার ভারতীয় পক্ষকে বলেছে, কেউ অপরাধী হলেও তার ওপর যেন গুলি চালানো না হয়; তাকে যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তে গুলির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু যৌথ ঘোষণায় বাংলাদেশের এ উদ্বেগ স্থান পায়নি। উপরন্তু বলা হয়েছে, যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) বাস্তবায়নের ফলে সীমান্তে গুলি ও অন্যান্য ঘটনা কমেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে এ বছর মাত্র ছয়জনের নিহত হওয়ার কথা বললেও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির হিসাবে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্তে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২৮। তাঁদের ১৯ জন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন; অন্যরা নিহত হয়েছেন ভারতীয় নাগরিকদের হাতে।
সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তি (মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি) ও ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত প্রটোকল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে সুস্পষ্ট সময়সীমা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় সব বৈঠকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি তোলা হয়। ভারতীয় পক্ষ পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে তোলার আশ্বাস দিয়েছে বারবার। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলোর অন্যতম হলেও বাংলাদেশ তা যৌথ ঘোষণার প্রথম দিকে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। জানা গেছে, যৌথ ঘোষণার খসড়ায় পরিবর্তন আনা হলেও তাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যৌথ বিবৃতিতে ভারতের প্রত্যাশারই প্রতিফলন ঘটেছে। স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের মতো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু বিবৃতির প্রথম দিকে রাখতে না পারায় জাতীয় স্বার্থকে বিকিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের অভিমত।
সূত্র জানায়, খসড়া বিবৃতিতে ওপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো এভাবে ছিল না। শেষ মুহূর্তে সংশ্লিষ্টদের না জানিয়েই এটি করা হয়। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রসচিব সি কিউ কে মুশতাক আহমেদের বক্তব্য চরম বিস্ময় ও গভীর হতাশা সৃষ্টি করেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের কাছে হস্তান্তরে বন্দিবিনিময় চুক্তি না থাকা কোনো বাধা নয়- এমন ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে একপর্যায়ে তিনি বলেন, 'ইতিপূর্বে (হস্তান্তরের) দুতিনটি ঘটনা ঘটেছে।'
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপারে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের কঠোর অবস্থানের প্রশংসা বারবার করছে নয়াদিল্লি। ভারতের আদালতে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে ধরা পড়ার পর তাদের ভারতের কাছে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো স্বীকার করেনি ঢাকা বা নয়াদিল্লি। কিন্তু মঙ্গলবার ঢাকায় স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রসচিব কার্যত তা স্বীকার করেছেন।
যৌথ বিবৃতির তৃতীয় অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, 'উভয় পক্ষ সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতর ইন্টিগ্রেটেড চেক পয়েন্ট (আইসিপি)/ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নকাজের অনুমতি দিতে রাজি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, এর মাধ্যমে ভারতকে 'ব্ল্যাংক চেক' দেওয়া হয়েছে। এত দিন ক্ষেত্রবিশেষে বিবেচনা করে বাংলাদেশ এ অনুমতি দিত।
পঞ্চম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ভারতের নিরাপত্তাবিষয়ক উদ্বেগ নিরসনে, বিশেষ করে সে দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব তাঁর সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেছেন। সূত্র বলেছে, পঞ্চম অনুচ্ছেদের ওই বাক্যে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে নিয়েছে, এ দেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতি রয়েছে। অতীতে কখনো এত স্পষ্ট করে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উপস্থিতির কথা বলা হয়নি।
সূত্র আরো জানায়, বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি চালানোর বিরোধী। বাংলাদেশ বারবার ভারতীয় পক্ষকে বলেছে, কেউ অপরাধী হলেও তার ওপর যেন গুলি চালানো না হয়; তাকে যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তে গুলির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিন্তু যৌথ ঘোষণায় বাংলাদেশের এ উদ্বেগ স্থান পায়নি। উপরন্তু বলা হয়েছে, যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) বাস্তবায়নের ফলে সীমান্তে গুলি ও অন্যান্য ঘটনা কমেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ভারতের স্বরাষ্ট্রসচিব মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে এ বছর মাত্র ছয়জনের নিহত হওয়ার কথা বললেও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির হিসাবে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমান্তে নিহত বাংলাদেশির সংখ্যা ২৮। তাঁদের ১৯ জন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে নিহত হয়েছেন; অন্যরা নিহত হয়েছেন ভারতীয় নাগরিকদের হাতে।
সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তি (মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি) ও ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত প্রটোকল বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে সুস্পষ্ট সময়সীমা আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় সব বৈঠকেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টি তোলা হয়। ভারতীয় পক্ষ পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে তোলার আশ্বাস দিয়েছে বারবার। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে অগ্রাধিকার পাওয়া বিষয়গুলোর অন্যতম হলেও বাংলাদেশ তা যৌথ ঘোষণার প্রথম দিকে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। জানা গেছে, যৌথ ঘোষণার খসড়ায় পরিবর্তন আনা হলেও তাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়নি।
No comments