সবুজ ক্যাম্পাসে গুলির শব্দ by আশ্রাফ আন নূর
ক্যাম্পাস! শব্দটি শুনলেই জ্ঞানপিপাসুরা আহ্লাদে ফুটকড়াই। তখন তাদের চোখে-মুখে ভেসে ওঠে স্বপ্নের স্রোতধারা। এখানে প্রভাতের সূর্যের আগমনে, সবুজ সমারোহ ক্যাম্পাসে, কোনো এক প্রকৃতিপ্রেমী যেন নিত্যদিন সবুজের আলপনা আঁকে।
তদুপরি পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ, বাতাসের শনশন আওয়াজ, রোদেলা দুপুরে আকাশ থেকে খসে পরা হালকা মেঘ খণ্ড, ক্যাম্পাসের শ্রীকে আরও বাড়িয়ে তোলে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতেই মূলত এ রকম দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এর মধ্যে ঢাবি, চবি, রাবি, জাবি ও জবি অন্যতম। ফলে দেশ-বিদেশের অনেক ছাত্রছাত্রী এখানে আসে অধ্যয়ন করতে, যা এখন খুবই অপ্রতুল। এ রকম নির্মল পরিবেশে স্বপ্নময় ক্যাম্পাস যেখানে দণ্ডায়মান, সেখানে ক্ষমতাসীন দলের চেলা-মোসাহেবরা অশান্ত করছে দিনের পর দিন। শুরু হয় যুদ্ধ। এ যুদ্ধ মূলত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। কখনও কখনও লড়াই হয় নিজেদের মধ্যেও। অনেক আগ থেকেই শুরু হয় এ লড়াই। বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় আসার পরও তা থেমে নেই। এ যুদ্ধের জন্য প্রয়োজন অস্ত্র। তাদের অস্ত্রের তালিকায় প্রাক-ঐতিহাসিক যুগের লাঠি-কাস্তে-ফলা-বল্লম-রামদা-চাপাতিসহ আধুনিক যুগের আগ্নেয়াস্ত্রও পাওয়া যায়। সম্প্রতি কলামিস্ট আবুল মকসুদ চাপাতিকে মহাচাপাতি বলেছেন। কারণ হলো সংঘর্ষের সময় এই মহাচাপাতি যেন মহাপ্রয়োজন হয়ে পড়ে ক্যাডারদের কাছে। ফলে এ চাপাতির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয় অনেক মেধাবী ছাত্রকে। যে ছাত্রটি ছিল পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্রের মূল্যবান সম্পদ। কখনও ভাবতে পারেনি বাবা-মা, তার ছেলেকে একদিন ক্যাম্পাস থেকে এভাবেই লাশ হয়ে ফিরে আসতে হবে। যাদের স্বপ্ন ছিল যে, সমাজ-রাষ্ট্রের উজ্জ্বল মূর্তমান প্রতীক হবে। বাবার এত দিনের পরিশ্রম ঘুচানোর স্বপ্ন, বোনের নানা আবদার, মায়ের মুখে ফোটাবে হাসি। কিন্তু স্বপ্ন যেন স্বপ্নই থেকে যায়। আর এভাবেই ক্যাম্পাসে দুঃস্বপ্নের হাতে বলি হতে থাকে শত আবু বকর।
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের টেন্ডারবাজি ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে ক্যাম্পাস অচল। ফলে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হয় এক রণক্ষেত্র। লড়াইটি ছিল মূলত ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবিরের মধ্যে। এ ক্যাম্পাসে প্রায়ই রণক্ষেত্র হয়, শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাস থেকে বিদায় হওয়ার পর সম্প্রতি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান, আগ্নেয়াস্ত্রধারী ছাত্রলীগের সঙ্গে মহড়া দিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া, এই শক্তিমত্তার প্রমাণ। এভাবেই ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-শিবিরের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ফলে সবুজ ক্যাম্পাস রক্তাক্ত হচ্ছে দিনের পর দিন। নষ্ট হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার পরিবেশ। ক্যাম্পাস হচ্ছে ধীরে ধীরে ভয়ের নগরী। আজ আমরা যারা আমজনতা এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রী তারা শঙ্কিত, কখন জানি একটা বুলেট এসে আমাদের সারা জীবনের লালিত স্বপ্ন ধ্বংস করে দেয়। তাই আমরা বলতে চাই, বর্তমান সরকার যেন ক্যাম্পাসগুলোতে অস্ত্রের মহড়া বন্ধ, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর যেন শুনতে না হয় সবুজ ক্যাম্পাসে বুলেটের আওয়াজ।
য় আশ্রাফ আন নূর : শিক্ষার্থী
ইতিহাস বিভাগ, ঢাবি
ashrafali750@gmail.com
সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের টেন্ডারবাজি ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে ক্যাম্পাস অচল। ফলে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। আর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হয় এক রণক্ষেত্র। লড়াইটি ছিল মূলত ছাত্রলীগ-ছাত্রশিবিরের মধ্যে। এ ক্যাম্পাসে প্রায়ই রণক্ষেত্র হয়, শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ক্যাম্পাস থেকে বিদায় হওয়ার পর সম্প্রতি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান, আগ্নেয়াস্ত্রধারী ছাত্রলীগের সঙ্গে মহড়া দিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া, এই শক্তিমত্তার প্রমাণ। এভাবেই ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-শিবিরের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ফলে সবুজ ক্যাম্পাস রক্তাক্ত হচ্ছে দিনের পর দিন। নষ্ট হচ্ছে কাঙ্ক্ষিত শিক্ষার পরিবেশ। ক্যাম্পাস হচ্ছে ধীরে ধীরে ভয়ের নগরী। আজ আমরা যারা আমজনতা এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রী তারা শঙ্কিত, কখন জানি একটা বুলেট এসে আমাদের সারা জীবনের লালিত স্বপ্ন ধ্বংস করে দেয়। তাই আমরা বলতে চাই, বর্তমান সরকার যেন ক্যাম্পাসগুলোতে অস্ত্রের মহড়া বন্ধ, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর যেন শুনতে না হয় সবুজ ক্যাম্পাসে বুলেটের আওয়াজ।
য় আশ্রাফ আন নূর : শিক্ষার্থী
ইতিহাস বিভাগ, ঢাবি
ashrafali750@gmail.com
No comments