চারশিল্প: বেঙ্গল গ্যালারি- স্বপ্নের চিত্রায়ণ by জাফরিন গুলশান
শিল্পী রনজিৎ দাসের একক চিত্রকলা প্রদর্শনী চলছে বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে। প্রদর্শনীর নাম ‘রেম’, যার ইংরেজি ব্যাখ্যা হলো র্যাপিড আই মুভমেন্ট, একটু বিশদ করে বললে মানুষ যখন গভীর, নিশ্চিন্ত ঘুমের গহনে থাকে, স্বপ্ন দেখে, তখন বন্ধ চোখের পাতায় বয়ে যায় অতি দ্রুততর সব কম্পন।
সংগত কারণেই শিল্পী রনজিৎ দাস এই প্রদর্শনীর নামকরণ করেছেন রেম। তাঁর ওই রেম বা স্বপ্নাস্তরে বিচরণের অভিজ্ঞতার কথাই বলেছেন বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জের ক্যাটরিনা ডন। তবে প্রদর্শনীর ছবি দেখে পাশাপাশি কারও কারও এই অনুভূতিও হতে পারে যে তাঁরা শিল্পীর বিভিন্ন স্বপ্নদৃশ্যের খণ্ড খণ্ড চিত্রায়ণ দেখতে পাচ্ছেন তাঁদের সামনে। বিগত কাজগুলোর তুলনায় শিল্পীর এ প্রদর্শনীর কাজগুলো যেন আরও সাহসী-দুর্দমনীয়। রঙের ব্যবহারেও দারুণ রকম উচ্চকিত। তাঁর ছবি দেখতে দেখতে নিজের অজান্তেই যেন চোখ ক্যানভাসের এক অংশ থেকে অন্য অংশে বিচরণ করে নির্দ্বিধায়। চোখ কখনো এক জায়গায় নিবদ্ধ হয়তো, একটু থেমে আবার অন্য জায়গায় স্থির হয়। তখন মনে প্রশ্ন জাগে, এটা কি ঘুমের মধ্যে স্বপ্নে বিচরণের মতোই কোনো ভ্রমণ! হয়তো। এবং এই বিবেচনা থেকেও হয়তো শিল্পী রনজিৎ দাস প্রদর্শনীর নাম দিয়েছেন রেম।
অস্থির চোখের পাতার কম্পনের মতোই শিল্পীর মোটা তুলির ব্যবহারে আছে অনেক বেশি গতি। অনেক শিল্পীর কাছেই মোটা তুলিতে কাজ করাটা সাহসিকতার বিষয়। সাধারণত এশীয় শিল্পীদের মধ্যে এই প্রবণতা নেই বললেই চলে। পশ্চিমা শিল্পীদের কাজে এ রকম নজির আছে ঠিক। কাজেই এ কথা বলা যায়, রনজিৎ দাসের এবারের কাজগুলোয় পশ্চিমা শিল্পের প্রভাব বেশ প্রকট কিন্তু সেটা কিছুতেই এশীয় ঐতিহ্যকে নাকচ করে দিয়ে কিংবা বিস্মৃত হয়ে নয়। তাঁর ক্যানভাসের উপরিতলেই তার প্রমাণ আছে, উড ব্লক প্রিন্টের ব্যবহার।
রনজিৎ দাসের কাজে আরেকটি বিষয়ও চোখে পড়ার মতো। তিনি যতটাই আলংকারিক হতে চেয়েছেন, ঠিক ততটাই যেন বিমূর্ত হওয়ার চেষ্টাও মূর্তমান। মূর্ত ও বিমূর্ত কাজের উদ্যোগকেও অনেকে সাহসী কাজের স্বীকৃতি দেয়।
শিল্পী রনজিৎ দাসের অবয়ব, অলংকার কখনো একেবারে ক্যানভাসের মাঝখানে, কখনো আবার কোণে, কখনো পাশে চোখ টেনে নেয়, পটভূমিকায় সব সময়ই উপস্থিত থাকে বিমূর্ততা ।
রনজিৎ দাসের কাজ যেন অনেকটা চলচ্চিত্রের মতো, একের পর এক ফ্রেমের ব্যবহার হয়েছে যেন অসম্ভব কুশলতায়। একটার পর একটা চলমান স্লাইড। কখনো জুম ইন, কখনো জুম আউট, কখনো ছোট ছোট পেঁচানো অক্ষরে লেখা কোনো টেক্সট—দর্শকের পুরো মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে। তাঁর ছবিতে শিল্পীর যে সৃষ্টির শ্রম, তা-ও চোখে পড়ে ক্যানভাসে ক্রমান্বয়ে গড়ে তোলা রং আর টেক্সচার (বুনট) তৈরির প্রক্রিয়ায়। মোটা ব্রাশের পাশাপাশি বিভিন্ন আকৃতির ব্রাশের স্বাধীন চলাচলে ক্যানভাসের গায়ে তৈরি হয়েছে এলোমেলো অসংখ্য রেখার।
রনজিৎ দাসের চিত্রকর্মগুলো আবার বিষয়গত দিক থেকে অতি ব্যক্তিবাদীও। কিছু ছবিতে একধরনের ‘টেনশন’ বা অস্থিরতা যেন ইচ্ছা করেই তৈরি করার প্রয়াস পেয়েছেন শিল্পী। অথবা এভাবেও বলা যায়, অবচেতনভাবে শিল্পী মন বা মস্তিষ্কপ্রসূত চিন্তাগুলোই ক্যানভাসে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করেছেন। এভাবে তিনি হয়তো এ সময়ের সমাজের অস্থিরতার কথাই বলতে চেয়েছেন।
এটা শিল্পী রনজিৎ দাসের তৃতীয় একক প্রদর্শনী। এর আগের প্রদর্শনীগুলোও বোদ্ধামহলে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়ায়। তাঁর আঁকা কাজ বাংলাদেশের অনেকের ব্যক্তিগত সংগ্রহে স্থান পেয়েছে। সংরক্ষিত আছে জাতীয় জাদুঘরেও। ১৯৯৫ সালে এই শিল্পী সপ্তম এশিয়ান বিয়ান্নালেতে প্রথম পুরস্কার পান।
রনজিৎ দাস: জন্ম: ১৯৫৬, টাঙ্গাইলে। বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াশোনা। এ পর্যন্ত দেশে ও বিদেশে তাঁর ১৬টি একক প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে এবং বহু দলবদ্ধ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন।
অস্থির চোখের পাতার কম্পনের মতোই শিল্পীর মোটা তুলির ব্যবহারে আছে অনেক বেশি গতি। অনেক শিল্পীর কাছেই মোটা তুলিতে কাজ করাটা সাহসিকতার বিষয়। সাধারণত এশীয় শিল্পীদের মধ্যে এই প্রবণতা নেই বললেই চলে। পশ্চিমা শিল্পীদের কাজে এ রকম নজির আছে ঠিক। কাজেই এ কথা বলা যায়, রনজিৎ দাসের এবারের কাজগুলোয় পশ্চিমা শিল্পের প্রভাব বেশ প্রকট কিন্তু সেটা কিছুতেই এশীয় ঐতিহ্যকে নাকচ করে দিয়ে কিংবা বিস্মৃত হয়ে নয়। তাঁর ক্যানভাসের উপরিতলেই তার প্রমাণ আছে, উড ব্লক প্রিন্টের ব্যবহার।
রনজিৎ দাসের কাজে আরেকটি বিষয়ও চোখে পড়ার মতো। তিনি যতটাই আলংকারিক হতে চেয়েছেন, ঠিক ততটাই যেন বিমূর্ত হওয়ার চেষ্টাও মূর্তমান। মূর্ত ও বিমূর্ত কাজের উদ্যোগকেও অনেকে সাহসী কাজের স্বীকৃতি দেয়।
শিল্পী রনজিৎ দাসের অবয়ব, অলংকার কখনো একেবারে ক্যানভাসের মাঝখানে, কখনো আবার কোণে, কখনো পাশে চোখ টেনে নেয়, পটভূমিকায় সব সময়ই উপস্থিত থাকে বিমূর্ততা ।
রনজিৎ দাসের কাজ যেন অনেকটা চলচ্চিত্রের মতো, একের পর এক ফ্রেমের ব্যবহার হয়েছে যেন অসম্ভব কুশলতায়। একটার পর একটা চলমান স্লাইড। কখনো জুম ইন, কখনো জুম আউট, কখনো ছোট ছোট পেঁচানো অক্ষরে লেখা কোনো টেক্সট—দর্শকের পুরো মনোযোগ কেড়ে নিচ্ছে। তাঁর ছবিতে শিল্পীর যে সৃষ্টির শ্রম, তা-ও চোখে পড়ে ক্যানভাসে ক্রমান্বয়ে গড়ে তোলা রং আর টেক্সচার (বুনট) তৈরির প্রক্রিয়ায়। মোটা ব্রাশের পাশাপাশি বিভিন্ন আকৃতির ব্রাশের স্বাধীন চলাচলে ক্যানভাসের গায়ে তৈরি হয়েছে এলোমেলো অসংখ্য রেখার।
রনজিৎ দাসের চিত্রকর্মগুলো আবার বিষয়গত দিক থেকে অতি ব্যক্তিবাদীও। কিছু ছবিতে একধরনের ‘টেনশন’ বা অস্থিরতা যেন ইচ্ছা করেই তৈরি করার প্রয়াস পেয়েছেন শিল্পী। অথবা এভাবেও বলা যায়, অবচেতনভাবে শিল্পী মন বা মস্তিষ্কপ্রসূত চিন্তাগুলোই ক্যানভাসে প্রতিফলিত করার চেষ্টা করেছেন। এভাবে তিনি হয়তো এ সময়ের সমাজের অস্থিরতার কথাই বলতে চেয়েছেন।
এটা শিল্পী রনজিৎ দাসের তৃতীয় একক প্রদর্শনী। এর আগের প্রদর্শনীগুলোও বোদ্ধামহলে যথেষ্ট প্রশংসা কুড়ায়। তাঁর আঁকা কাজ বাংলাদেশের অনেকের ব্যক্তিগত সংগ্রহে স্থান পেয়েছে। সংরক্ষিত আছে জাতীয় জাদুঘরেও। ১৯৯৫ সালে এই শিল্পী সপ্তম এশিয়ান বিয়ান্নালেতে প্রথম পুরস্কার পান।
রনজিৎ দাস: জন্ম: ১৯৫৬, টাঙ্গাইলে। বর্তমান চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াশোনা। এ পর্যন্ত দেশে ও বিদেশে তাঁর ১৬টি একক প্রদর্শনী আয়োজিত হয়েছে এবং বহু দলবদ্ধ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন। তিনি ২০১১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে ফ্রিল্যান্স শিল্পী হিসেবে কাজ করছেন।
No comments