ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও নিয়োগ-বাণিজ্য চলতেই থাকবে?- এবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা ও রাজশাহীর পর এবার সরকার-সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীরা কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁরা প্রতিপক্ষ ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন নিজস্ব আধিপত্য বজায় রাখতে।


কিন্তু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাটির সঙ্গে প্রতিপক্ষ ছাত্র সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই। যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক নিয়োগের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখতিয়ার। আইন অনুযায়ী মেধাবী ও যোগ্যতরেরা নিয়োগ পাবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সরকার-সমর্থক ছাত্র সংগঠনটি তাদের পছন্দ অনুযায়ী ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি চাপ প্রয়োগ করে যখন ব্যর্থ হলো, তখনই সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়। বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অ্যাম্বুলেন্সে ভাঙচুর করার পর রাত ১২টায় শিক্ষকদের আবাসিক ভবন এলাকায় একটি বোমা বিস্ফোরিত হলে শিক্ষকদের বহনকারী একটি বাস পুড়ে যায়। চাকরিবঞ্চিত ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ভবনে আগুন লাগায় বলেও অভিযোগ আছে। এই চাকরিবঞ্চিত ব্যক্তিরা আবার ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মী।
সন্ত্রাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরিবহন বাইরে থেকে ক্যাম্পাসে আসতে না পারায় বৃহস্পতিবার ক্লাস-পরীক্ষার পাশাপাশি প্রশাসনিক কাজও বন্ধ ছিল। এর দায় কে নেবে? শিক্ষক সমিতির সভাপতির অভিযোগ, নিয়োগ নিয়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছেন, মেধা, যোগ্যতা ও দলীয় আদর্শের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা ও যোগ্যতার বিষয়টি বোঝা গেলেও দলীয় আদর্শের প্রশ্ন আসে কেন?
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মাঝেমধ্যেই পত্রিকার শিরোনাম হয়। কখনো ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে আধিপত্যের লড়াই, কখনো বা প্রশাসনের অনিয়ম, দুর্নীতি। এভাবে একটি উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। কয়েক দিন আগে শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বিপরীত চিত্রই বিরাজ করছে। সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে তাদের আইনের হাতে সোপর্দ করা হোক। অন্যথায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ও নিয়োগ-বাণিজ্য চলতেই থাকবে।

No comments

Powered by Blogger.