সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার রায় হতে পারে এ বছর by কুন্তল রায়
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় এ বছরের মধ্যে হতে পারে। বিচারকাজের গতি দেখে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এমনটাই ধারণা করছেন। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে এবং আসামিপক্ষে সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
এ মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রচলিত নিয়মে বিচারকাজ শেষ হতে আর বেশি সময় লাগার কথা নয়। আমার ধারণা, আর মাস খানেক সময় লাগতে পারে। তবে সবই ট্রাইব্যুনালের ওপর নির্ভর করছে।’
ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর পক্ষে সাফাই সাক্ষী ২০ জন নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ২৮ আগস্ট থেকে তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ অনুসারে, এই মামলায় সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করতে পারবেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ সাক্ষ্য ও দাখিল করা নথিপত্রের ওপর যুক্তি উপস্থাপন করবে। এরপর ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য দিন ধার্য করবেন এবং ওই ধার্য দিনে রায় দেবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেভাবে বিচারকাজ এগোচ্ছে এবং এ ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তবে ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা এই মামলার রায় আশা করতে পারি।’
সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলায় গত সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারণ এবং তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করেন। আসামিপক্ষ সাঈদীর পক্ষে ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনাল আদেশে বলেছেন, ২০টি অভিযোগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের ঘটনাকেন্দ্রিক সাক্ষী ২০ জন, এ জন্য আসামিপক্ষের সাক্ষীও ২০ জন হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। আসামিপক্ষ এর বিরোধিতা করে বলেছে, এর ফলে ন্যায়বিচারকে কবর দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে গোলাম আরিফ বলেন, ‘সাফাই সাক্ষীদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত সঠিক। ১০-১৫ হাজার সাক্ষী দিয়ে প্রহসন করে কোনো লাভ নেই।’ আর শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের এ সিদ্ধান্তের ফলে সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ সমান সুযোগ পাচ্ছে। ফলে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।’
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। প্রায় চার মাসে ২৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। তাঁদের মধ্যে ২০ জন ঘটনার বিষয়ে এবং সাতজন জব্দ তালিকার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষের শেষ সাক্ষী হিসেবে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন ৮ এপ্রিল। নয় কার্যদিবসে তাঁর জবানবন্দি শেষ হয়। আসামিপক্ষ ২৫ এপ্রিল তাঁকে জেরা শুরু করে। ৪৮ কার্যদিবসে সোমবার তাঁর জেরা শেষ হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২১ জুলাই তদন্ত সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। ২ নভেম্বর সাঈদীকে প্রথম ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ওই দিন তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১১ সালের ৩০ মে তদন্ত শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষ ১১ জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও এ ধরনের অপরাধে সহযোগিতা করার ২০টি অভিযোগের বিচার চলছে।
বিচারাধীন অপর সাত মামলা: ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলাটি ছাড়া আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন। এগুলোর মধ্যে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। জামায়াতের বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেছে, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি। আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের নয়জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। ফলে এ তিন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শিগগির শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
চলতি বছর গঠিত ট্রাইব্যুনাল-২-এ চারটি মামলা স্থানান্তর করা হয়। এগুলো হলো: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মামলা। এর মধ্যে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আটজন ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আলীমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন একজন। আর মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ এখনো শুরু হয়নি।
ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর পক্ষে সাফাই সাক্ষী ২০ জন নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ২৮ আগস্ট থেকে তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ অনুসারে, এই মামলায় সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করতে পারবেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ সাক্ষ্য ও দাখিল করা নথিপত্রের ওপর যুক্তি উপস্থাপন করবে। এরপর ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য দিন ধার্য করবেন এবং ওই ধার্য দিনে রায় দেবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেভাবে বিচারকাজ এগোচ্ছে এবং এ ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তবে ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা এই মামলার রায় আশা করতে পারি।’
সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলায় গত সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষীর সংখ্যা নির্ধারণ এবং তাঁদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরুর দিন ধার্য করেন। আসামিপক্ষ সাঈদীর পক্ষে ৪৮ জন সাক্ষীর তালিকা জমা দিয়েছিল। তবে ট্রাইব্যুনাল আদেশে বলেছেন, ২০টি অভিযোগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষের ঘটনাকেন্দ্রিক সাক্ষী ২০ জন, এ জন্য আসামিপক্ষের সাক্ষীও ২০ জন হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। আসামিপক্ষ এর বিরোধিতা করে বলেছে, এর ফলে ন্যায়বিচারকে কবর দেওয়া হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে গোলাম আরিফ বলেন, ‘সাফাই সাক্ষীদের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত সঠিক। ১০-১৫ হাজার সাক্ষী দিয়ে প্রহসন করে কোনো লাভ নেই।’ আর শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের এ সিদ্ধান্তের ফলে সাক্ষ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষ সমান সুযোগ পাচ্ছে। ফলে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।’
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। প্রায় চার মাসে ২৭ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। তাঁদের মধ্যে ২০ জন ঘটনার বিষয়ে এবং সাতজন জব্দ তালিকার বিষয়ে সাক্ষ্য দেন। রাষ্ট্রপক্ষের শেষ সাক্ষী হিসেবে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হেলালউদ্দিন সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন ৮ এপ্রিল। নয় কার্যদিবসে তাঁর জবানবন্দি শেষ হয়। আসামিপক্ষ ২৫ এপ্রিল তাঁকে জেরা শুরু করে। ৪৮ কার্যদিবসে সোমবার তাঁর জেরা শেষ হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই বছরের ২১ জুলাই তদন্ত সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের তদন্ত শুরু করে। ২ নভেম্বর সাঈদীকে প্রথম ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। ওই দিন তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১১ সালের ৩০ মে তদন্ত শেষ হয়। রাষ্ট্রপক্ষ ১১ জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। ৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ ও এ ধরনের অপরাধে সহযোগিতা করার ২০টি অভিযোগের বিচার চলছে।
বিচারাধীন অপর সাত মামলা: ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলাটি ছাড়া আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন। এগুলোর মধ্যে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। জামায়াতের বর্তমান আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেছে, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি। আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের নয়জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। ফলে এ তিন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ শিগগির শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
চলতি বছর গঠিত ট্রাইব্যুনাল-২-এ চারটি মামলা স্থানান্তর করা হয়। এগুলো হলো: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আবদুল কাদের মোল্লা এবং বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মামলা। এর মধ্যে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আটজন ও কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আলীমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন একজন। আর মুজাহিদের বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ এখনো শুরু হয়নি।
No comments