দোজখ থেকে মুক্তির মাস রমজান by মাওলানা এম এ করিম ইবনে মছব্বির
মাহে রমজানের আগমনে আমাদের চারদিকে এক স্নিগ্ধ প্রশান্তির বেহেশতি বাতাস বইতে থাকে। আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে রোজাদারদের ওপর মেঘের বর্ষণের ন্যায় রহমত নাজিল হতে থাকে। প্রকৃত রোজাদারের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে কয়েকটি পুরস্কার রয়েছে। বেহেশতের আটটি দরজা, এর মধ্যে একটির নাম রাইয়ান (তৃপ্তি)।
এই দরজা দিয়ে বেহেশতে প্রবেশ করার সৌভাগ্য লাভ করবেন একমাত্র রোজাদাররা। প্রত্যেক রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে- একটি ইফতারের সময় এবং অন্যটি হলো আল্লাহ পাকের দিদার লাভ। রোজাদারের পূর্ববর্তী সমস্ত গোনা মাফ হয়ে যায়। রোজাদারদের মুখের গন্ধ আল্লাহ পাকের কাছে মিশক (কস্তুরীর চেয়েও সুগন্ধময় ও মনোরম)। রোজাদারের নিদ্রা ও ইবাদত এবং তার পক্ষে চুপ থাকা তসবিহস্বরূপ গণ্য হবে। মহানবী (সা.) বলেন, বনি আদমের প্রতিটি নেক কাজের সওয়াব ১০ থেকে ২৭ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। কিন্তু আল্লাহ পাক বলেন, 'রোজার বেলায় এ রকম নয়। কেননা রোজা খাস আমার জন্য, রোজাদার কেবল আমাকে খুশি করার জন্য কামনা-বাসনা ও পানাহার ত্যাগ করে রোজা রাখে। সে জন্য আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব।' হজরত সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) শাবান মাসের শেষ তারিখে আমাদের নসিহত করেছেন যে তোমাদের মধ্যে মোবারক মাস রমজান ছায়াস্বরূপ আসছে, যার মধ্যে লাইলাতুল ক্বদর নামের একটি রাত আছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। আল্লাহ তায়ালা তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করেছেন এবং রাত্রি জাগরণ অর্থাৎ তারাবিহ পড়াকে তোমাদের জন্য পুণ্যের কাজ করে দিয়েছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে নফল আদায় করল, সে যেন রমজানের বাইরে একটি ফরজ আদায় করল। যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করল, সে যেন অন্য মাসে ৭০টি ফরজ আদায় করল।
মহানবী (সা.) বলেন, রমজান সবরের মাস এবং সবরের বিনিময়ে আল্লাহ পাক জান্নাত রেখেছেন। এটা মানুষের সঙ্গে সহানুভূতি প্রকাশ করার মাস। এ মাসে মুমিন বান্দাদের রিজিক বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ব্যক্তির জন্য এটা গোনাহ মাফ এবং দোজখের আগুন থেকে নাজাতের কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং ওই রোজাদারের সওয়াবের সমতুল্য সওয়াব সেই ব্যক্তি লাভ করবে অথচ সেই রোজাদারের সওয়াব বিন্দুমাত্র কম হবে না। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে নবী (সা.), আমাদের মধ্যে অনেকেরই সামর্থ্য নেই যে সে অন্যকে ইফতার করাবে অর্থাৎ পেট ভর্তি করে খাওয়াবে। হুজুর (সা.) বলেন, পেট ভর্তি করে খাওয়ানো জরুরি নয়। যে ব্যক্তি কাউকে একটি খেজুর দ্বারা ইফতার করাবে, আল্লাহ পাক তাকে ওই সওয়াব প্রদান করবেন।
যে ব্যক্তি এ মাসে আপন গোলাম ও মজদুর হতে কাজের বোঝা পাতলা করে দেয়, আল্লাহ পাক তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতারিতে পানি পান করাবে, আল্লাহ পাক কিয়ামতের দিন তাকে হাউজে কাওসারের পানি পান করাবেন। তার পর থেকে বেহেশতে প্রবেশ পর্যন্ত আর পানির কোনো পিপাসা হবে না। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হুজুর (সা.) বলেন, রমজানের প্রতিটি দিবারাত্রিতে আল্লাহর দরবারে দোজখ থেকে অসংখ্য কয়েদিকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক মুসলমানের দিবা ও রাত্রিতে একটি করে দোয়া কবুল হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি বিনা ওজরে ইচ্ছাপূর্বক রমজানের একটি রোজা ভঙ্গ করেছে, অন্য সময়ের সারা জীবনের রোজা ওই মাসের রোজার সমকক্ষ হবে না। অতএব দেখুন, মাহে রমজানের একটি রোজা কতই না মূল্যবান!
লেখক : ইসলামী গবেষক
মহানবী (সা.) বলেন, রমজান সবরের মাস এবং সবরের বিনিময়ে আল্লাহ পাক জান্নাত রেখেছেন। এটা মানুষের সঙ্গে সহানুভূতি প্রকাশ করার মাস। এ মাসে মুমিন বান্দাদের রিজিক বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে ব্যক্তির জন্য এটা গোনাহ মাফ এবং দোজখের আগুন থেকে নাজাতের কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং ওই রোজাদারের সওয়াবের সমতুল্য সওয়াব সেই ব্যক্তি লাভ করবে অথচ সেই রোজাদারের সওয়াব বিন্দুমাত্র কম হবে না। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে নবী (সা.), আমাদের মধ্যে অনেকেরই সামর্থ্য নেই যে সে অন্যকে ইফতার করাবে অর্থাৎ পেট ভর্তি করে খাওয়াবে। হুজুর (সা.) বলেন, পেট ভর্তি করে খাওয়ানো জরুরি নয়। যে ব্যক্তি কাউকে একটি খেজুর দ্বারা ইফতার করাবে, আল্লাহ পাক তাকে ওই সওয়াব প্রদান করবেন।
যে ব্যক্তি এ মাসে আপন গোলাম ও মজদুর হতে কাজের বোঝা পাতলা করে দেয়, আল্লাহ পাক তাকে ক্ষমা করে দেবেন এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতারিতে পানি পান করাবে, আল্লাহ পাক কিয়ামতের দিন তাকে হাউজে কাওসারের পানি পান করাবেন। তার পর থেকে বেহেশতে প্রবেশ পর্যন্ত আর পানির কোনো পিপাসা হবে না। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হুজুর (সা.) বলেন, রমজানের প্রতিটি দিবারাত্রিতে আল্লাহর দরবারে দোজখ থেকে অসংখ্য কয়েদিকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং প্রত্যেক মুসলমানের দিবা ও রাত্রিতে একটি করে দোয়া কবুল হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি বিনা ওজরে ইচ্ছাপূর্বক রমজানের একটি রোজা ভঙ্গ করেছে, অন্য সময়ের সারা জীবনের রোজা ওই মাসের রোজার সমকক্ষ হবে না। অতএব দেখুন, মাহে রমজানের একটি রোজা কতই না মূল্যবান!
লেখক : ইসলামী গবেষক
No comments