ত্রাণ তৎপরতা-সমালোচনার মুখে ইরান-* ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা-* প্রেসিডেন্টের বিদেশ সফর

ভূমিকম্প-পরবর্তী ত্রাণ তৎপরতা নিয়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে ইরান সরকার। ভূমিকম্পের ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা, তাঁবু ও ত্রাণ সংকট এবং প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের বিদেশ সফর নিয়ে দেশটির পার্লামেন্ট ও জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।


উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে গত শনিবার বিকেলে দুই দফা ভূমিকম্পে ৩০৬ জন প্রাণ হারায়।
পার্লামেন্টের বার্তা সংস্থা আইসিএএনএ গত সোমবার জানায়, দুর্গত এলাকার প্রতিনিধিত্বকারী এমপিরা পর্যাপ্ত অভিযোগ করেছেন, তাঁবু সরবরাহ করা হচ্ছে না। স্পিকার আলী লারিজানি বলেন, 'সংকট ব্যবস্থাপনা দপ্তরকে অবশ্যই এসব উদ্বেগ নিরসনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।' এ দুর্যোগের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই কর্মকর্তারা রবিবার অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন। স্থানীয় লোকজন সরকারের এ তড়িঘড়ি পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। মধ্যপন্থী রক্ষণশীল পত্রিকা আসর-ই ইরান তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ভূমিকম্পের দুই দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও বহু গ্রামে ত্রাণ দল পাঠানো হয়নি। বেশির ভাগ গ্রামে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ চালু করা সম্ভব হয়নি।
অনলাইন সংবাদমাধ্যম ও ব্লগে এমন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদের বিদেশ সফরের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। এগুলোতে জানানো হয়, ভূমিকম্পের পর বিধ্বস্ত এলাকাগুলো পরিদর্শন না করে ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরব সফরে গেছেন প্রেসিডেন্ট। এমনকি ভূমিকম্প দুর্গতদের সহায়তা বা নিহতদের জন্য শোক প্রকাশ করে কোনো বিবৃতিও দেননি তিনি।
ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে। ফ্রান্সে ফার্সি ভাষার এক রেডিও অনুষ্ঠানে সাংবাদিক সোলমাজ একদার জানান, ত্রাণ তৎপরতায় নজরদারির অভাব রয়েছে। 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে আহর-এ খাদ্য ও পানিভর্তি বহু ট্রাক সারিবেঁধে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অথচ পাশের গ্রামেই পানির অভাবে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। তিনি বলেন, 'ওষুধ, পানি, খাবার, কম্বল ও আহতদের রক্তদানে অপ্রতুলতা রয়েছে। ইরানে এমনিতেই রমজান মাসে রক্তদানের পরিমাণ কমে যায়। ফলে ভূমিকম্পের পর চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।' বিদেশি সহায়তার বিষয়টিও শুরুতেই নাকচ করে দিয়েছে ইরান। এমনকি তুরস্ক থেকে ত্রাণ সহায়তার লক্ষ্যে একটি দল ইরানে পেঁৗছালে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। সূত্র : আল-জাজিরা।

No comments

Powered by Blogger.