জাপানের অবস্থানই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করছে

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং বাক বলেছেন, অতীতের বিষয়গুলোতে জাপানের অবস্থানের কারণেই জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গতকাল বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার ৬৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তব্যে লি এই মন্তব্য করেন।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কোরীয় নারীদের জোর করে জাপানি সেনাদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের ঘটনায় জাপানকে দায় স্বীকারেরও আহ্বান জানিয়েছেন মিয়ুং বাক।
১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরাজিত পক্ষ হিসেবে আত্মসমর্পণ করে জাপান। মূলত এই আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় তাদের ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান হয়। ১৯১০ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার নিয়ন্ত্রণ ছিল জাপানের হাতে। গতকাল জাপানি শাসন থেকে মুক্তির ৬৭তম বার্ষিকী পালন করে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিষয়ে দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গত শুক্রবার জাপান সাগরে বিতর্কিত একটি দ্বীপে প্রেসিডেন্ট লির সফরের তীব্র প্রতিবাদ জানায় জাপান। জাপানে তাকেশিমা ও দক্ষিণ কোরিয়ায় দোকদো নামে পরিচিত দ্বীপগুলো বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও জাপান এগুলোর মালিকানা দাবি করছে।
মিয়ুং বাক বলেন, 'জাপান আমাদের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ও বন্ধু। আমাদের মূল্যবোধও একই। তারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং ভবিষ্যতের পথ উন্মুক্ত করার জন্য আমাদের একত্রে কাজ করা উচিত। তবে অতীতের কিছু বিষয় দক্ষিণ কোরিয়া-জাপান সম্পর্কে জট পাকিয়ে আছে। উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে একত্রে কাজ করার ক্ষেত্রে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এগুলো ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদী জাপানি সেনাদের জন্য কোরীয় নারীদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহারের বিষয়টিও এর একটি। যুদ্ধের সময় এটি ছিল নারী অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা। মানবাধিকার ও বিচারের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও এটি। আমরা জাপান সরকারের প্রতি এ ঘটনার দায় স্বীকারের এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানাব।' দক্ষিণ কোরিয়া আগেও বেশ কয়েকবার এই দাবি জানিয়েছে। আত্মসমর্পণের বার্ষিকীতে গতকাল জাপানের দুই মন্ত্রী টোকিওতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি সমাধি পরিদর্শন করেন। দক্ষিণ কোরিয়া এ ঘটনারও বিরোধিতা করে।
প্রেসিডেন্ট লি গত মঙ্গলবার জানান, জাপানের সম্রাট আকিহিতো যদি দক্ষিণ কোরিয়া সফরে আসতে চান, তাহলে অতীতের বাড়াবাড়ির জন্য তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে। এর জবাবে গতকাল জাপানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'প্রেসিডেন্ট মিয়ুং বাক কেন এমন মন্তব্য করেছেন তা বোঝা কঠিন। জাপান দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে সম্রাটের সফরের বিষয়ে কোনো প্রস্তাবই দেয়নি। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.