‘কচুশাকই হামার ঈদ’ by আলতাফ হোসেন
বয়সের ভারে অনেকটা নুইয়ে পড়েছেন আয়শা খাতুন (৬৫)। তবুও অসুস্থ শরীরে জঠরজ্বালা জুড়াতে তাঁকে ছুটতে হয়। বনজঙ্গল থেকে কচুশাক সংগ্রহ করেন। প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে হেঁটে তাই ছুটে যান ১০-১৫ কিলোমিটার দূরের কোনো জঙ্গলে শাক তুলতে। এরপর তা আঁটি বেঁধে মাথায় নিয়ে ছোটেন স্থানীয় হাটবাজার ও পাড়ামহল্লায়।
প্রতি আঁটি বিক্রি করেন পাঁচ-সাত টাকায়। এতেই অতি কষ্টে চলে তাঁর জীবন।
আয়শা খাতুনের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুরে। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে বসবাস করছেন রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার পাকার মাথা রেলবস্তিতে। স্বামী ফুলু উদ্দিন মারা গেছেন ১০ বছর আগে। তিন ছেলে এক মেয়ে তাঁর। ১২ বছর আগে ছেলেরা বিয়ে করে নিরুদ্দেশ। মেয়েরও বিয়ে হয়েছে। একলা হয়ে গেছেন। তাই জীবনজীবিকা, পথচলা—সবই এখন একলা তাঁর। বৃহস্পতিবার বদরগঞ্জ থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে শ্যামপুর এলাকায় দেখা মেলে আয়শা খাতুনের।
মাথায় বুনো কচুশাকের বোঝা। ঘর্মাক্ত শরীর। কচুশাকের দাম কেমন জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘পাঁচ টেকা আঁটি। তাও মানুষ কেনে না। এইগলা কচুশাক হয় ঝাড়বাড়ির ভেতরোত (জঙ্গলে)। এলা সেই ঝাড়বাড়ি শ্যাষ করি মানুষ আবাদ করোচে। শাক পাওয়াও যায় না।’
ছেলে নাই? ‘আছে, তাগোর দেখা পাই না। কোনটে থাকে, কী করে, জানি না।’ ঈদে কী কিনবেন—এমন প্রশ্নে মুখটা তাঁর ভার হয়ে যায়। চোখ দুটো ছলছল করে ওঠে। তাঁর মায়াবী দৃষ্টির গলিতে ঈদ যেন বেদনার বার্তা নিয়ে আসে। তারপর জবাব দেন, ‘কচুশাকই হামার ঈদ। এইগলা বেচেয়া চাউল কিনিম, না হইলে ঈদের দিন খাইম কী? মাছ-গোছতো মোকোত উঠপ্যার নেয়। এই ছেঁড়া শাড়ি দিয়ায় ঈদ পার হইবে। হামার ফির ঈদ কিসের? ঈদ হওচে টেকা এওলার জন্যে।’ সরেজমিনে ওই রেলবস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, খড় আর পলিথিনের ছাউনি দেওয়া ঝুপড়িঘরে বৃদ্ধা আয়শা খাতুন বাস করেন।
প্রতিবেশী রমিছা বেওয়া (৬৪), সাজেদা মাই (৬০), নালো মাই (৬২) জানান, ‘আয়শা খাতুন প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর আয়-রোজগার বন্ধ থাকে। প্রতিদিন রোজা রাখেন। লবণ-পানি খেয়ে রোজা খোলেন। সামনে ঈদ। শাড়ি একটিই, যেটি সব সময় তাঁর পরনে থাকে। আর্থিক সংগতি না থাকায় আমরাও তাঁকে একটি নতুন শাড়ি কিনে দিতে পারছি না।’
আয়শা খাতুনের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুরে। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে বসবাস করছেন রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার পাকার মাথা রেলবস্তিতে। স্বামী ফুলু উদ্দিন মারা গেছেন ১০ বছর আগে। তিন ছেলে এক মেয়ে তাঁর। ১২ বছর আগে ছেলেরা বিয়ে করে নিরুদ্দেশ। মেয়েরও বিয়ে হয়েছে। একলা হয়ে গেছেন। তাই জীবনজীবিকা, পথচলা—সবই এখন একলা তাঁর। বৃহস্পতিবার বদরগঞ্জ থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে শ্যামপুর এলাকায় দেখা মেলে আয়শা খাতুনের।
মাথায় বুনো কচুশাকের বোঝা। ঘর্মাক্ত শরীর। কচুশাকের দাম কেমন জিজ্ঞেস করলে বলেন, ‘পাঁচ টেকা আঁটি। তাও মানুষ কেনে না। এইগলা কচুশাক হয় ঝাড়বাড়ির ভেতরোত (জঙ্গলে)। এলা সেই ঝাড়বাড়ি শ্যাষ করি মানুষ আবাদ করোচে। শাক পাওয়াও যায় না।’
ছেলে নাই? ‘আছে, তাগোর দেখা পাই না। কোনটে থাকে, কী করে, জানি না।’ ঈদে কী কিনবেন—এমন প্রশ্নে মুখটা তাঁর ভার হয়ে যায়। চোখ দুটো ছলছল করে ওঠে। তাঁর মায়াবী দৃষ্টির গলিতে ঈদ যেন বেদনার বার্তা নিয়ে আসে। তারপর জবাব দেন, ‘কচুশাকই হামার ঈদ। এইগলা বেচেয়া চাউল কিনিম, না হইলে ঈদের দিন খাইম কী? মাছ-গোছতো মোকোত উঠপ্যার নেয়। এই ছেঁড়া শাড়ি দিয়ায় ঈদ পার হইবে। হামার ফির ঈদ কিসের? ঈদ হওচে টেকা এওলার জন্যে।’ সরেজমিনে ওই রেলবস্তিতে গিয়ে দেখা যায়, খড় আর পলিথিনের ছাউনি দেওয়া ঝুপড়িঘরে বৃদ্ধা আয়শা খাতুন বাস করেন।
প্রতিবেশী রমিছা বেওয়া (৬৪), সাজেদা মাই (৬০), নালো মাই (৬২) জানান, ‘আয়শা খাতুন প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে দেখাশোনা করার কেউ নেই। অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর আয়-রোজগার বন্ধ থাকে। প্রতিদিন রোজা রাখেন। লবণ-পানি খেয়ে রোজা খোলেন। সামনে ঈদ। শাড়ি একটিই, যেটি সব সময় তাঁর পরনে থাকে। আর্থিক সংগতি না থাকায় আমরাও তাঁকে একটি নতুন শাড়ি কিনে দিতে পারছি না।’
No comments