আলফ্রেড সরেন হত্যার বিচার আজও শেষ হয়নি by আনোয়ার হোসেন

নওগাঁর ভীমপুরের আদিবাসী নেতা আলফ্রেড সরেন হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পূর্তি আজ ১৮ আগস্ট। এই দীর্ঘসময়েও মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মহসিন রেজা। মহসিন রেজা প্রথম আলোকে জানান,


হত্যাকাণ্ডের পর নওগাঁর মহাদেবপুর থানায় আলফ্রেড সরেনের বোন রেবেকা সরেন জননিরাপত্তা আইনে অন্য একটি মামলা করেন সিতিশ ভট্টাচার্য ওরফে গদাই, হাতেম আলীসহ ৯০ জনের বিরুদ্ধে। মহাদেবপুর থানার পুলিশ দুটি মামলার একটি অভিযোগপত্র দাখিল করে। আসামিপক্ষ জননিরাপত্তা আইন সংবিধানবিরোধী উল্লেখ করে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
২০০১ সালে জননিরাপত্তা আইন বাতিল হয়ে গেলে রিট আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ২০০২ সালে নওগাঁ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে আসামিপক্ষ রিট খারিজের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগ আবেদন খারিজ যথাযথ হয়নি উল্লেখ করে উচ্চ আদালতে আবারও শুনানির আদেশ দেন। বর্তমানে তা শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
মামলার বাদী রেবেকা সরেন বলেন, ‘খোঁজখবর নিয়ে জেনেছি, উচ্চ আদালতে নাকি মামলার নথিপত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মামলার পরিণতি নিয়ে আমরা চরম হতাশ। দাদার হত্যাকাণ্ডের বিচার বুঝি আমরা আর পাব না। অন্যদিকে, হত্যাকারীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হুমকি দিয়ে ঘটনায় আহত আদিবাসীসহ অন্যদের গ্রামছাড়া করেছে। তবে আমি অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অন্য এলাকার আদিবাসীকে নিয়ে এসে বসতি স্থাপন করে ভীমপুর পল্লিকে রক্ষা করেছি। এখন শুনছি, হত্যা মামলার আসামি মালেক নামের এক ব্যক্তি ভীমপুর আদিবাসী গ্রামের জমিটি বন্দোবস্ত নিয়েছে। সবাইকে গ্রামছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে।’
তিনি জানান, মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভীমপুরে আলফ্রেড সরেনের সমাধিতে আজ পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও নওগাঁয় হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
১২ বছর আগে এই দিনে ভূমিগ্রাসী দুর্বৃত্তরা ভীমপুরে প্রকাশ্যে সশস্ত্র হামলা করে তাণ্ডব চালায়। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে আলফ্রেড সরেনকে হত্যা করে, বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা উত্তরাঞ্চলের আদিবাসী।

No comments

Powered by Blogger.