তুমি বন্ধু, তুমি সখা
ভেবে দেখেছেন কি কখনও, বন্ধু মানে ঠিক কী? একরাশ মনখারাপের মাঝে যার কাছে উগরে দেয়া যায় দীনদুনিয়ার ক্ষোভ, সেই কি বন্ধু? যখন মধ্যরাতে পা থেকে মাথা পর্যন্ত টলমল, তখন যে শক্ত মুঠোয় হাত ধরে রাস্তা পার করে দেয়, সেই কি বন্ধু? হাজার মুখখারাপ করলেও যে কখনো ছেড়ে সরে যায় না, সেই কি বন্ধু?
সব্বাই বলবেন, হ্যাঁ হ্যাঁ, বন্ধুর মতো বন্ধু তো এরকমই হয়। কিন্তু বুকে হাত দিয়ে যদি জানতে চাওয়া হয়, এরকম বন্ধু কজনের আছে? তখন জবাবে ভেসে আসবে গুচ্ছের ফিসফাস। বন্ধু হয়ে ওঠার এই আদর্শটাকে সমর্থন করবেন সব্বাই, কিন্তু কজনের ভাগ্যে জোটে এরকম পারফেক্ট ফ্রেন্ড, ফিলোজফার অ্যান্ড গাইড? এখন, জোটে যে না, সে কি নিজের দোষ? নাকি চলতি হাওয়ায় লুকিয়ে রয়েছে এর কারণ?
আসলে এই ব্যস্ত সময়ে সবার কাছেই আছে হাজার একটা বন্ধু। কথাটা কি একটু পরস্পরবিরোধী হয়ে গেল? একদমই নয়। সময় বের করে অনেক বকবকের পর এখন আর বন্ধু খোঁজার দরকার পড়ে কি? সাইবারের দুনিয়াটা যবে থেকে হাতের তালুতে ঘোরাফেরা করে, ফোনের বোতাম টিপলেই যখন থেকে খুলে যায় বন্ধুত্ব করার হরেক সাইট, তখন থেকেই হয়ত বা বন্ধু বানানটা হয়ে গিয়েছে আরও সহজ। প্রত্যেকদিনই সাইবার কল্যাণে ঝাঁকে ঝাঁকে কপালে জুটে যায় দেদার বন্ধু। সবার সঙ্গেই সুসম্পর্ক থাকলেই হলো, তার বাইরে মনের গহন গভীর সম্পর্ক জেন ওয়াই এর কাছে অতটা ধর্তব্যের ব্যাপার নয়। খুশ মেজাজে দেদার আড্ডা জমাতে পারা আর ঘন ঘন কফি শপে ভিড় জমিয়ে কাটিয়ে ফেলা অলস সকাল বিকেল বা সন্ধ্যাকেই এখন ছোট করে বলা যেতে পারে বন্ধুত্ব। প্রমাণ চাই?
রিকি প্রথম বর্ষের ছাত্রী। সারাদিনই সেল ফোন কিম্বা ল্যাপটপের মাঝেই ঘুরে ফিরে বাঁচছে তার জীবন। চোখ খারাপ হবে কিম্বা ভেঙে পড়বে শরীর- এমন নানান ধরনের কথাকে তোয়াক্কা না করেই ও চালিয়ে যায় নানান ধরনের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সখ্যতা, 'এমনিতেই হাজার একটা সমস্যা প্রত্যেকের জীবনে আছে! তার পরে যদি বন্ধুর সমস্যাও ঘাড়ে নিতে হয়, সে তো মস্ত চাপ! কে সামলাবে সেসব হ্যাপা? তার চেয়ে সাইবার বন্ধুত্বই তো ভালো। ঘাড়ে কোনো দায় নেই, কিন্তু টান থাকছে প্রায় ষোল আনা', খোলামেলা স্বীকারোক্তি রিকির।
আবার, সারাদিনের কাজের শেষে একদিন পার্কের পাশ দিয়ে সেল ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতে ফেরার সময়ে হঠাৎ কানে এলো দল বেঁধে বসে থাকা জেন ওয়াই-এর এরকম বন্ধুতার উড়ো আলাপচারিতা। নানা প্রকারের গ্যাজেট থেকে শপিং মলের জামা কাপড়, এইসবের মাঝেই বার বার ঘূর্ণিপাকের মতো ঘুরছিল তাদের কথা। গভীরে যেতে তারা মোটে রাজি নয়। সেই সময়টাই বা কোথায়? কারও সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব হওয়ার জন্য যে সময়টুকু দরকার, তা কার হাতে আছে?
তাছাড়া হাজার মুখের ভিড়কে ছাপিয়ে নিত্যদিন ফেসবুক ট্যুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোর সাহায্যে রিকি-টিনা-পাবলোরা পেয়ে যাচ্ছে অল্প কথাতেই দেড়গুন বন্ধুর নামে ভরতি একটা ফ্রেন্ড লিস্ট। এর বাইরেও বন্ধু খোঁজার এই সূত্র কখনও হচ্ছে টিউশনের বা পাড়ার বন্ধু, স্কুলের বন্ধু তো কখনো চেনা বন্ধুর কমন ফ্রেন্ডদের মাধ্যমেই চলে আসছে বেতারে বন্ধুত্বের আবেদন।
প্রোফাইলের ধরন দেখে, মানুষটির মুখ-চোখ দেখে ভালো লাগলেই অ্যাকসেপ্টেড। এরপর রোজকার আলাপচারিতার মাস কয়েক পরেই তারা হয়ে যাচ্ছে বেস্ট ফ্রেন্ড। তাদের মাঝে যেমন হচ্ছে প্রেম, তেমনই অনেক সময় জাস্ট ফ্রেন্ড হয়েই চলতে থাকে নিয়মিত দেখাসাক্ষাৎ, টি-পার্টি ইত্যাদি।
কিন্তু যত সহজেই গড়ছে চলতি সময়ের বন্ধু পাওয়ার পালা, ততটা সহজেই চিড় ধরছে এদের বন্ধুত্বের ইকির মিকির খেলায়। সেটাই তো স্বাভাবিক। হাসিখেলা ফুরিয়ে গেলে যে এই ঠুনকো বন্ধুত্বও ভেঙে যায়। তা, বন্ধুত্ব ধরে রাখার রাস্তাটা কী? একটু ভেবে দেখলে, সাইবারের দুনিয়ার চমকে পুরোটাই মজে না গিয়ে বরং জমাতে হবে বন্ধুতার আসল আমেজটাকে। নিঃশব্দে কান পেতে ধরে নিতে হবে বন্ধুর মনের না বলা ফিসফিস। গোপন অনুভবে বুঝে ফেলতে হবে তাকে, কফি শপের ঝাপসা কাঁচ হোক বা বেপাড়ার ফাঁকা গলির সেই উঠোনটা- মনের দেদার আদান প্রদান চালিয়ে গড়তে হবে শক্ত বন্ধুত্ব। তবে না বলা যাবে, 'আছে তো হাতখানি'! আর তা না হলে? খেলা ফুরিয়ে গেলেই বিদায়দ্বার খোলার ডাক! তাই বন্ধুত্বের হাত বাড়ান ভেবেচিন্তে। প্রিয় বন্ধুর পাড়া নিঝ্ঝুম হয়ে গেলে কি ভালো থাকা যায়?
রিকি প্রথম বর্ষের ছাত্রী। সারাদিনই সেল ফোন কিম্বা ল্যাপটপের মাঝেই ঘুরে ফিরে বাঁচছে তার জীবন। চোখ খারাপ হবে কিম্বা ভেঙে পড়বে শরীর- এমন নানান ধরনের কথাকে তোয়াক্কা না করেই ও চালিয়ে যায় নানান ধরনের সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের সখ্যতা, 'এমনিতেই হাজার একটা সমস্যা প্রত্যেকের জীবনে আছে! তার পরে যদি বন্ধুর সমস্যাও ঘাড়ে নিতে হয়, সে তো মস্ত চাপ! কে সামলাবে সেসব হ্যাপা? তার চেয়ে সাইবার বন্ধুত্বই তো ভালো। ঘাড়ে কোনো দায় নেই, কিন্তু টান থাকছে প্রায় ষোল আনা', খোলামেলা স্বীকারোক্তি রিকির।
আবার, সারাদিনের কাজের শেষে একদিন পার্কের পাশ দিয়ে সেল ফোন ঘাঁটতে ঘাঁটতে ফেরার সময়ে হঠাৎ কানে এলো দল বেঁধে বসে থাকা জেন ওয়াই-এর এরকম বন্ধুতার উড়ো আলাপচারিতা। নানা প্রকারের গ্যাজেট থেকে শপিং মলের জামা কাপড়, এইসবের মাঝেই বার বার ঘূর্ণিপাকের মতো ঘুরছিল তাদের কথা। গভীরে যেতে তারা মোটে রাজি নয়। সেই সময়টাই বা কোথায়? কারও সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব হওয়ার জন্য যে সময়টুকু দরকার, তা কার হাতে আছে?
তাছাড়া হাজার মুখের ভিড়কে ছাপিয়ে নিত্যদিন ফেসবুক ট্যুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোর সাহায্যে রিকি-টিনা-পাবলোরা পেয়ে যাচ্ছে অল্প কথাতেই দেড়গুন বন্ধুর নামে ভরতি একটা ফ্রেন্ড লিস্ট। এর বাইরেও বন্ধু খোঁজার এই সূত্র কখনও হচ্ছে টিউশনের বা পাড়ার বন্ধু, স্কুলের বন্ধু তো কখনো চেনা বন্ধুর কমন ফ্রেন্ডদের মাধ্যমেই চলে আসছে বেতারে বন্ধুত্বের আবেদন।
প্রোফাইলের ধরন দেখে, মানুষটির মুখ-চোখ দেখে ভালো লাগলেই অ্যাকসেপ্টেড। এরপর রোজকার আলাপচারিতার মাস কয়েক পরেই তারা হয়ে যাচ্ছে বেস্ট ফ্রেন্ড। তাদের মাঝে যেমন হচ্ছে প্রেম, তেমনই অনেক সময় জাস্ট ফ্রেন্ড হয়েই চলতে থাকে নিয়মিত দেখাসাক্ষাৎ, টি-পার্টি ইত্যাদি।
কিন্তু যত সহজেই গড়ছে চলতি সময়ের বন্ধু পাওয়ার পালা, ততটা সহজেই চিড় ধরছে এদের বন্ধুত্বের ইকির মিকির খেলায়। সেটাই তো স্বাভাবিক। হাসিখেলা ফুরিয়ে গেলে যে এই ঠুনকো বন্ধুত্বও ভেঙে যায়। তা, বন্ধুত্ব ধরে রাখার রাস্তাটা কী? একটু ভেবে দেখলে, সাইবারের দুনিয়ার চমকে পুরোটাই মজে না গিয়ে বরং জমাতে হবে বন্ধুতার আসল আমেজটাকে। নিঃশব্দে কান পেতে ধরে নিতে হবে বন্ধুর মনের না বলা ফিসফিস। গোপন অনুভবে বুঝে ফেলতে হবে তাকে, কফি শপের ঝাপসা কাঁচ হোক বা বেপাড়ার ফাঁকা গলির সেই উঠোনটা- মনের দেদার আদান প্রদান চালিয়ে গড়তে হবে শক্ত বন্ধুত্ব। তবে না বলা যাবে, 'আছে তো হাতখানি'! আর তা না হলে? খেলা ফুরিয়ে গেলেই বিদায়দ্বার খোলার ডাক! তাই বন্ধুত্বের হাত বাড়ান ভেবেচিন্তে। প্রিয় বন্ধুর পাড়া নিঝ্ঝুম হয়ে গেলে কি ভালো থাকা যায়?
No comments