ধনীদের কড়চা by গওসল আযম
মহাদেশে মহাদেশে, দেশে দেশে এবং একই দেশের অভ্যন্তরে আয়ের বৈষম্য সব ধরনের অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ। আয়ের বৈষম্যের কথা বললেই আসে ধনী-গরিবের কথা। ধনী বলতে আমরা সাধারণত বুঝি আর্থিক সচ্ছলতা অর্থাৎ দৈব-দুর্বিপাকে এবং দুর্ভিক্ষে কারোর মুখাপেক্ষী না হয়ে সম্মানজনকভাবে বেঁচে থাকা।
আবার আমাদের গাঁয়ের লোকেরা মনে করে সারাবছর যারা ঘরের ভাত খায় তারাই ধনী। এখানেও বিপত্তি। যাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম, তাদের অল্প জমি গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য যথেষ্ট। যাদের সদস্য সংখ্যা বেশি তাদের জমির প্রয়োজনও বেশি। সম্পদের পরিমাণের ওপর ধনীর সত্তা নির্ণয় যেমন কঠিন তেমনি কঠিন গরিবের সত্তা নির্ণয়। পঞ্চাশের দশকেও আমাদের দেশের শিক্ষিতজনেরা বলত যাদের দু'খানি হাত ছাড়া আয়ের অন্য পথ নেই বা যাদের ধনী হওয়ার আশা নেই তারাই গরিব এবং সর্বহারা। এখানেও সর্বহারা বা গরিবদের তারতম্য গভীরভাবে লক্ষণীয়। আজকাল কলকারখানার শ্রমিকদের মধ্যেও অনেকেই গাঁয়ে বেশ কিছু জমি-জমার মালিক। শ্রমের মজুরি দিয়ে এদের অনেকেই সম্পত্তির বা সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি করছে এবং আবার অনেকেই দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হচ্ছে। যার ফলে শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে বড় বড় শহরে ভাসমান লোকের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ অভাবের জ্বালায় গাঁয়ের লোকদের বহির্গমন ঘটছে। বাড়ছে সামাজিক অস্থিরতা।
অন্যদিকে সময়ের আবর্তনে এবং ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং প্রয়োগে ধনী এবং দরিদ্রের মাঝখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব এবং বিস্তৃতি আয়ের ব্যবধানে অনেকটা ভারসাম্যের সৃষ্টি করেছে। কয়েক দশক আগেও আমাদের দেশের অনেকেই উপোস করত। গাঁয়ের মেয়েদের একফালি বা দু'ফালি শাড়ি পরে থাকতে হতো। পায়ে ছিল না কোনো পাদুকা। এখন উপোসী নেই বললেই চলে। ভিখারিণীরাও এখন শাড়ির সঙ্গে পরে বল্গাউজ। পায়ে দেখা যায় পাদুকা।
এমনি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ধনী-দরিদ্রের আয়ের বৈষম্যের সারগর্ভ আলোচনা করে ধনবানের সত্তার পরিবর্তন ঘটছে। আবার সে সত্তার পক্ষে-বিপক্ষেও আছে নানা তর্ক-বিতর্ক। সিংহভাগ লোক মনে করে এক মিলিয়ন ডলারের মালিকরাই (দশ লাখ আমেরিকান ডলার) ধনী। অনেক মিলিয়ন ডলার মালিক এর সঙ্গে সহমত পোষণ করে না। এ অবস্থায়, একপেশেভাবে হলেও, ধনীর সত্তা নির্ণয় দরকার। কেপজেমিনি নামক একটি পশ্চিমা পরামর্শক কোম্পানির অভিমত অনুযায়ী ঘরবাড়ি ছাড়া যিনি এক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে সক্ষম তিনি ধনী। সংরক্ষণশীল এই মতবাদের ভিত্তিতে কেপজেমিনি এবং মেরিল লিন্চ ব্যাংক সারা পৃথিবীতে দশ মিলিয়ন অর্থাৎ এক কোটি ধনীর সংখ্যা নির্ণয় করেছে।
বিস্ময়করভাবে একথা সত্য, ধনী দেশের অনেক প্রাপ্ত বয়স্কের সম্পদ না থাকলেও মানিব্যাগে রয়েছে ঋণকার্ড। ঋণের দায়ে তারা আফ্রিকান কৃষকের চেয়েও দরিদ্র। কিন্তু জীবনযাত্রার মান উন্নত। ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় ডেনমার্ক এবং সুইডেনের শতকরা ৩০ ভাগ লোকের দেনার চেয়ে সম্পদ মূল্য কম। তারপরও উপোস করে না। এদের অনেকেই শিক্ষা ঋণ নিয়ে আস্তে আস্তে পরিশোধ করে। এ ব্যবস্থাকে সরকার অনুমোদন করে।
দেখা যায় ইউরোপিয়ান ধনীরা ইউরোপে এবং আমেরিকান ধনীরা আমেরিকায় বিনিয়োগ করেছে।
২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক সম্পদের পরিমাণ শতকরা ৭২ ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে ২০০ ট্রিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এই বৃদ্ধির শতকরা ৫০ ভাগ ঘটেছে অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় ডলারের দরপতনের কারণে। বাকি ৫০ ভাগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মনুষ্য বৃদ্ধির কারণে।
অন্যদিকে সময়ের আবর্তনে এবং ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং প্রয়োগে ধনী এবং দরিদ্রের মাঝখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব এবং বিস্তৃতি আয়ের ব্যবধানে অনেকটা ভারসাম্যের সৃষ্টি করেছে। কয়েক দশক আগেও আমাদের দেশের অনেকেই উপোস করত। গাঁয়ের মেয়েদের একফালি বা দু'ফালি শাড়ি পরে থাকতে হতো। পায়ে ছিল না কোনো পাদুকা। এখন উপোসী নেই বললেই চলে। ভিখারিণীরাও এখন শাড়ির সঙ্গে পরে বল্গাউজ। পায়ে দেখা যায় পাদুকা।
এমনি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ধনী-দরিদ্রের আয়ের বৈষম্যের সারগর্ভ আলোচনা করে ধনবানের সত্তার পরিবর্তন ঘটছে। আবার সে সত্তার পক্ষে-বিপক্ষেও আছে নানা তর্ক-বিতর্ক। সিংহভাগ লোক মনে করে এক মিলিয়ন ডলারের মালিকরাই (দশ লাখ আমেরিকান ডলার) ধনী। অনেক মিলিয়ন ডলার মালিক এর সঙ্গে সহমত পোষণ করে না। এ অবস্থায়, একপেশেভাবে হলেও, ধনীর সত্তা নির্ণয় দরকার। কেপজেমিনি নামক একটি পশ্চিমা পরামর্শক কোম্পানির অভিমত অনুযায়ী ঘরবাড়ি ছাড়া যিনি এক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে সক্ষম তিনি ধনী। সংরক্ষণশীল এই মতবাদের ভিত্তিতে কেপজেমিনি এবং মেরিল লিন্চ ব্যাংক সারা পৃথিবীতে দশ মিলিয়ন অর্থাৎ এক কোটি ধনীর সংখ্যা নির্ণয় করেছে।
বিস্ময়করভাবে একথা সত্য, ধনী দেশের অনেক প্রাপ্ত বয়স্কের সম্পদ না থাকলেও মানিব্যাগে রয়েছে ঋণকার্ড। ঋণের দায়ে তারা আফ্রিকান কৃষকের চেয়েও দরিদ্র। কিন্তু জীবনযাত্রার মান উন্নত। ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় ডেনমার্ক এবং সুইডেনের শতকরা ৩০ ভাগ লোকের দেনার চেয়ে সম্পদ মূল্য কম। তারপরও উপোস করে না। এদের অনেকেই শিক্ষা ঋণ নিয়ে আস্তে আস্তে পরিশোধ করে। এ ব্যবস্থাকে সরকার অনুমোদন করে।
দেখা যায় ইউরোপিয়ান ধনীরা ইউরোপে এবং আমেরিকান ধনীরা আমেরিকায় বিনিয়োগ করেছে।
২০০০ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক সম্পদের পরিমাণ শতকরা ৭২ ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে ২০০ ট্রিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এই বৃদ্ধির শতকরা ৫০ ভাগ ঘটেছে অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় ডলারের দরপতনের কারণে। বাকি ৫০ ভাগ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মনুষ্য বৃদ্ধির কারণে।
No comments