স্ত্রীকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা!

'প্রথমে ভেবেছিলাম স্বামী আমার ওপর রাগ করে কবর খুঁড়ে আমাকে জীবন্ত কবর দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছেন। কিন্তু সত্যি সত্যি যখন দেখলাম স্বামী আমাকে কবরে নামিয়ে মাটিচাপা দিচ্ছেন, তখন চিৎকার করলাম। এ সময় কোদাল দিয়ে স্বামী আমার মাথায় কোপ মারেন।'


জীবন্ত কবরের হাত থেকে রেহাই পেয়ে গুরুতর আহত গৃহবধূ মঞ্জুয়ারা বেগম (৫২) রবিবার নীলফামারী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এসব কথা জানান।
জানা গেছে, গত শনিবার রাতে নীলফামারী জেলা সদরের কচুকাটা ইউনিয়নের তালুক মানুষমারা গ্রামে ঘরের ভেতর কবর খুঁড়ে স্ত্রী মঞ্জুয়ারা বেগমকে (৫২) জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করে স্বামী তছলিম উদ্দিন (৬০)। ওই সময় চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে আহত অবস্থায় মঞ্জুয়ারাকে উদ্ধার করে এবং তছলিমকে আটক করে পুলিশে দেয়। কোদালের আঘাতে গুরুতর আহত মঞ্জুয়ারাকে পরে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মঞ্জুয়ারা বেগমের ছোট ভাই আবদুল মালেক বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তছলিমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। রবিবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। প্রেম করে ছেলে বিয়ে করায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে বলে পারিবারিক সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, তছলিম উদ্দিন দম্পত্তির তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। এর মধ্যে দুই ছেলে ও তিন মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। ছোট ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম (২০) মা-বাবাকে না জানিয়ে এক বছর আগে একই গ্রামে নিজের পছন্দের আবদুল লতিফের মেয়ে সুমী আক্তারকে (১৮) বিয়ে করেন। এ বিয়ে মঞ্জুরুলের বাবা তছলিম মেনে না নিলেও মা মঞ্জুয়ারা গোপনে মেনে নেন। ছেলে মঞ্জুরুল বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি থাকলেও গোপনে এসে মায়ের সঙ্গে দেখা করে যেতেন। কিন্তু তছলিম তা মেনে নিতে পারেননি। স্ত্রী মঞ্জুয়ারাকে ছেলের সঙ্গে কথা বলতে ও বাড়িতে ঢুকতে দিতে বারণ করেন তিনি। গত শনিবার দুপুরে মঞ্জুরুল তাঁর বাবার অনুপস্থিতিতে বাড়িতে আসেন। হঠাৎ বাবা তছলিম বাইরে থেকে বাড়িতে ঢুকেই ছেলেকে দেখে ভীষণ ক্ষেপে যান। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হলে সন্ধ্যায় ঘরের ভেতর কবর খুঁড়ে মঞ্জুয়ারাকে জীবন্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করেন। এলাকাবাসী বিষয়টি জানতে পেরে ঘরের দরজা ভেঙে মঞ্জুয়ারাকে উদ্ধার করে।

No comments

Powered by Blogger.