শিক্ষা-রবীন্দ্রনাথ এবং কোচিং-বাণিজ্য by আফজালুর রহমান
যে ভোগবাদী পশ্চিমের ওপর রবীন্দ্রনাথ নানা কারণেই বিরক্ত ছিলেন, আমরা দেখি, ১৯১৩ থেকে ১৯৩০ পর্যন্ত অবলীলায় পাঁচ দফা সেই পশ্চিম সফর করেন তিনি। বিশ্বভারতী গড়ে তোলার অর্থ সংগ্রহে বার্ধক্যের ভার বয়ে নিয়ে রবীন্দ্রনাথকে ছুটতে হয়েছিল পশ্চিমে, বিশ্বযুদ্ধের ওই অস্থির সময়েও।
এ পর্বেই ১৯২৬ সালে গোটা ভারত যখন বিদেশি শাসনের অবসান আন্দোলনে উত্তাল, সে বছরটায় রবীন্দ্রনাথ আট মাস কাটান ইউরোপ-আমেরিকায়। সেই বছরের শুরুর দিকটায়, ১৫ ফেব্রুয়ারিতে রবীন্দ্রনাথ ময়মনসিংহে আসেন। ব্রাহ্মসমাজ ও জমিদারদের আমন্ত্রণে তিনি ময়মনসিংহে এসেছিলেন। আনন্দ মোহন বসু ও নীহার রঞ্জন রায় পরিবারের সূত্রে ময়মনসিংহ অঞ্চলেও ব্রাহ্মধর্মের প্রভাব ছিল। ১৯২৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কীর্তিমান বাঙালি র্যাংলার আনন্দ মোহন বসুর প্রতিষ্ঠিত আনন্দ মোহন কলেজ পরিদর্শনে এলেন তিনি। কলেজ কর্তৃপক্ষ কবিগুরুকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা দিল আর শিক্ষার্থীরা কবির বিশ্বভারতীর জন্য চাঁদা তুলে সংগ্রহ করে দেয় ৬৬৫ টাকা। এ সামান্য অর্থ প্রদান কবির শিক্ষা উদ্যোগে সীমিত সহযোগিতা দেওয়া, যা কবির প্রতি অন্য রকম এক সম্মান দেওয়ার মতো করেই দেখেছে প্রান্তিক জনপদের এই শিক্ষার্থীরা। ময়মনসিংহের সব সংবর্ধনাতেই কবির হাতে তুলে দেওয়া হয় যথাসাধ্য অর্থসহায়তা।
আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার জবাবে কবি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সম্ভবত আলেকজান্ডার ক্যাসেলে শুয়ে কবি পূর্বরাতে ভাষণটি লিখে থাকবেন। আনন্দ মোহন কলেজ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে লিখিত কবিগুরুর নাতিদীর্ঘ বক্তব্যটিতে তাঁর শিক্ষাভাবনার কয়েকটি দিকের নিবিড় প্রকাশ ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার জবাবে দেওয়া বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ সেদিন বলেছিলেন,
‘যে শিক্ষার ধারা আমাদের ছাত্ররা আজকাল পাচ্ছে, আমার মনে হয়, তাতে তাদের ভালো কিছুই নেই, তাতে তারা ভারগ্রস্ত হয়েই পড়ছে। মানুষকে আমরা পাখির মত খাদ্য যত দিচ্ছি, কিন্তু বুঝতে পাচ্ছি না—যে তা সে হজম কর্তে পাচ্ছে না। এই যে ছাত্রের বাল্যকাল থেকে বয়স্ক অবস্থা পর্যন্ত নোট মুখস্থ করে, কোন বইয়ের জিনিসটুকু মনে গেঁথে গেঁথে বৎসর পাশ যাচ্ছে, একি শুধু দু’টা কথা নামের পেছনে দেবার জন্য? জ্ঞানের কি আর কোন উদ্দেশ্য নেই? পাশ হয়ে এলে আর তারা জ্ঞানের আলোচনা কর্তে চায় না—বাস্তব রাজ্যের ভিতর থেকে তাদের পুঁথিগত বিদ্যার সার্থকতা খুঁজে নেবার প্রবৃত্তি তাদের নেই। এ যে মস্ত বড় ত্রুটি; ঐ ত্রুটি তো যায় না। শিক্ষা পুঁথির জিনিস হয়ে পড়লে মন ভালো কিছু গ্রহণ কর্তে পারে না—কেবল পুঁথির বোঝা বয়ে বেড়ায়, জ্ঞান তার হয় না।’
রবীন্দ্রনাথের এই বক্তৃতা কেবল ১৯২৬ সালের আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্যই ছিল না, এই বক্তৃতা তিনি করেছিলেন বাংলাদেশের অনাগত কালের শিক্ষার্থীদের জন্যও। প্রায় ৮৫ বছরের পুরোনো সেই বক্তৃতা বিস্ময়করভাবে নতুন, আজও প্রাসঙ্গিক। কিন্তু রবীন্দ্র-উত্তর কালের শিক্ষার্থীদের কাছে রবীন্দ্রনাথের সেই চিন্তা আমরা তুলে দিতে পারিনি।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবদ্দশায় শিক্ষার আজকের সংকটটি কি অমন প্রবল চেহারায় দেখেছিলেন? তা না হলে ১৯২৬-এ কেন তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘আমরা জ্ঞানকে নিয়ে বণিকের মতো ব্যবহার কচ্ছি। জ্ঞান কী ব্যবসার জিনিস?’
বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে সে অবক্ষয়টা এক অন্ধ দানব হয়ে আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। সরকার একটি নতুন শিক্ষানীতি করে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। শিক্ষা ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে যখন গোটা দেশের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে, তখন সচেতন সমাজশক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত কোচিং-বাণিজ্য বন্ধের কার্যকর আইনি পদক্ষেপ নিতে সরকারের ওপর নির্দেশনা জারি করেন। সরকার উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অবশেষে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা, ২০১২’ প্রণয়ন করে। আদালতের নির্দেশনা না থাকলে এমন নীতিমালা জারি হতো কি না, এমন সংশয়ের কথাও শোনা গেছে। কিন্তু সরকার যে শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, সেখানে কোনোভাবেই শিক্ষা-বণিকদের বেনিয়াবৃত্তি চলতে দেওয়ার সুযোগ নেই। যদি ধরে নিই, সরকার তার শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে আন্তরিক, তাহলে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা না এলেও এ রকম নীতিমালা সরকারকেই করতে হতো। শিক্ষা যদি হয় মনুষ্যত্ব সাধনের উপায়, যদি তা ভাবের আলোকে, রসের বর্ষণে অগণিত শিক্ষার্থীর প্রাণকোষের গোপন মর্মস্থলে বিকাশবেদনা জাগানোর বাহন হয়, তাহলে সেখানে বণিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতেই হবে। শিক্ষকসমাজের ২৫ থেকে ৩০ ভাগ শিক্ষক টিউশনিপ্রবণ। তাঁদের জন্য গোটা শিক্ষকসমাজকে সেই গ্লানি বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। শিক্ষকদের কোচিং-বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালা করতে হলো। শিক্ষা নিয়ে কী করে বাণিজ্য চলে? আর প্রকৃত শিক্ষক কি কখনো শিক্ষা-বাণিজ্যে যুক্ত হতে পারেন? তাহলে প্রকৃত শিক্ষকের ছবিটা কি আমরা ভুলে গেছি?
সমাজ ও রাষ্ট্রকে সে রকম শিক্ষক ধারণ করতে হবে, লালন করতে হবে, তৈরি করতে হবে। ১৯২৬ থেকে ২০১২ সময়ের দূরত্বটা ৮৬ বছরের হলেও সংকটের চেহারা তো বদলায়নি, বরং আরও প্রকট হয়েছে। ১৯২৬-এ বসেই মহাকালদর্শী রবীন্দ্রনাথ তা দেখেছিলেন।
অনেক দেরিতে হলেও শিক্ষাকে সৃজনশীল করতে গিয়ে আজ যেমন করে বলা হচ্ছে, ১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সামনে তা বলেছিলেন, ‘পরীক্ষা পাশ করে সার্থকতা লাভ হয়েছে বলে মনে করে, নোট বই মুখস্থ করে বাইরের তত্ত্ব সংগ্রহ করবার প্রবৃত্তি, চিন্তা করবার সাহস জেগে ওঠে না। তাদের চিত্তের দৈন্য ঘটেছে।’ আরও বলেছিলেন, ‘জ্ঞানের পথ জ্ঞানের সাধনা শিক্ষার দ্বারা প্রপীড়িত। ঔৎসুক্য নেই, কেবল নোট মুখস্থ করে চিত্তকে ব্যাধিগ্রস্ত ও ভারাক্রান্ত করা।’
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের এমন সব উপলব্ধি থেকে আমরা কি অনেক দূরে সরে গেছি? এসব চেতনা গণমানসে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করতে হবে, তাহলে এই নীতিমালা বাস্তবায়ন নিয়ে যে আশঙ্কার কথা উঠেছে, তা অর্থহীন হয়ে যাবে। রবীন্দ্রনাথ বাঙালির জাতীয় জীবনের সংকট ও সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে দিয়ে গেছেন। মনুষ্যত্বের বাহন শিক্ষাকে যাঁরা পণ্য করে তুলেছেন, অমন কপট শিক্ষা ব্যবসায়ীদের আমরা বর্জন করতে শিখিনি আজও।
আফজালুর রহমান: সহযোগী অধ্যাপক, আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ।
আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার জবাবে কবি ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। সম্ভবত আলেকজান্ডার ক্যাসেলে শুয়ে কবি পূর্বরাতে ভাষণটি লিখে থাকবেন। আনন্দ মোহন কলেজ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে লিখিত কবিগুরুর নাতিদীর্ঘ বক্তব্যটিতে তাঁর শিক্ষাভাবনার কয়েকটি দিকের নিবিড় প্রকাশ ঘটেছে। শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনার জবাবে দেওয়া বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ সেদিন বলেছিলেন,
‘যে শিক্ষার ধারা আমাদের ছাত্ররা আজকাল পাচ্ছে, আমার মনে হয়, তাতে তাদের ভালো কিছুই নেই, তাতে তারা ভারগ্রস্ত হয়েই পড়ছে। মানুষকে আমরা পাখির মত খাদ্য যত দিচ্ছি, কিন্তু বুঝতে পাচ্ছি না—যে তা সে হজম কর্তে পাচ্ছে না। এই যে ছাত্রের বাল্যকাল থেকে বয়স্ক অবস্থা পর্যন্ত নোট মুখস্থ করে, কোন বইয়ের জিনিসটুকু মনে গেঁথে গেঁথে বৎসর পাশ যাচ্ছে, একি শুধু দু’টা কথা নামের পেছনে দেবার জন্য? জ্ঞানের কি আর কোন উদ্দেশ্য নেই? পাশ হয়ে এলে আর তারা জ্ঞানের আলোচনা কর্তে চায় না—বাস্তব রাজ্যের ভিতর থেকে তাদের পুঁথিগত বিদ্যার সার্থকতা খুঁজে নেবার প্রবৃত্তি তাদের নেই। এ যে মস্ত বড় ত্রুটি; ঐ ত্রুটি তো যায় না। শিক্ষা পুঁথির জিনিস হয়ে পড়লে মন ভালো কিছু গ্রহণ কর্তে পারে না—কেবল পুঁথির বোঝা বয়ে বেড়ায়, জ্ঞান তার হয় না।’
রবীন্দ্রনাথের এই বক্তৃতা কেবল ১৯২৬ সালের আনন্দ মোহন কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্যই ছিল না, এই বক্তৃতা তিনি করেছিলেন বাংলাদেশের অনাগত কালের শিক্ষার্থীদের জন্যও। প্রায় ৮৫ বছরের পুরোনো সেই বক্তৃতা বিস্ময়করভাবে নতুন, আজও প্রাসঙ্গিক। কিন্তু রবীন্দ্র-উত্তর কালের শিক্ষার্থীদের কাছে রবীন্দ্রনাথের সেই চিন্তা আমরা তুলে দিতে পারিনি।
রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবদ্দশায় শিক্ষার আজকের সংকটটি কি অমন প্রবল চেহারায় দেখেছিলেন? তা না হলে ১৯২৬-এ কেন তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘আমরা জ্ঞানকে নিয়ে বণিকের মতো ব্যবহার কচ্ছি। জ্ঞান কী ব্যবসার জিনিস?’
বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে সে অবক্ষয়টা এক অন্ধ দানব হয়ে আমাদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। সরকার একটি নতুন শিক্ষানীতি করে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে। শিক্ষা ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে যখন গোটা দেশের নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে, তখন সচেতন সমাজশক্তির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত কোচিং-বাণিজ্য বন্ধের কার্যকর আইনি পদক্ষেপ নিতে সরকারের ওপর নির্দেশনা জারি করেন। সরকার উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অবশেষে ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং-বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা, ২০১২’ প্রণয়ন করে। আদালতের নির্দেশনা না থাকলে এমন নীতিমালা জারি হতো কি না, এমন সংশয়ের কথাও শোনা গেছে। কিন্তু সরকার যে শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, সেখানে কোনোভাবেই শিক্ষা-বণিকদের বেনিয়াবৃত্তি চলতে দেওয়ার সুযোগ নেই। যদি ধরে নিই, সরকার তার শিক্ষানীতি বাস্তবায়নে আন্তরিক, তাহলে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা না এলেও এ রকম নীতিমালা সরকারকেই করতে হতো। শিক্ষা যদি হয় মনুষ্যত্ব সাধনের উপায়, যদি তা ভাবের আলোকে, রসের বর্ষণে অগণিত শিক্ষার্থীর প্রাণকোষের গোপন মর্মস্থলে বিকাশবেদনা জাগানোর বাহন হয়, তাহলে সেখানে বণিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতেই হবে। শিক্ষকসমাজের ২৫ থেকে ৩০ ভাগ শিক্ষক টিউশনিপ্রবণ। তাঁদের জন্য গোটা শিক্ষকসমাজকে সেই গ্লানি বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। শিক্ষকদের কোচিং-বাণিজ্য বন্ধের নীতিমালা করতে হলো। শিক্ষা নিয়ে কী করে বাণিজ্য চলে? আর প্রকৃত শিক্ষক কি কখনো শিক্ষা-বাণিজ্যে যুক্ত হতে পারেন? তাহলে প্রকৃত শিক্ষকের ছবিটা কি আমরা ভুলে গেছি?
সমাজ ও রাষ্ট্রকে সে রকম শিক্ষক ধারণ করতে হবে, লালন করতে হবে, তৈরি করতে হবে। ১৯২৬ থেকে ২০১২ সময়ের দূরত্বটা ৮৬ বছরের হলেও সংকটের চেহারা তো বদলায়নি, বরং আরও প্রকট হয়েছে। ১৯২৬-এ বসেই মহাকালদর্শী রবীন্দ্রনাথ তা দেখেছিলেন।
অনেক দেরিতে হলেও শিক্ষাকে সৃজনশীল করতে গিয়ে আজ যেমন করে বলা হচ্ছে, ১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথ বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সামনে তা বলেছিলেন, ‘পরীক্ষা পাশ করে সার্থকতা লাভ হয়েছে বলে মনে করে, নোট বই মুখস্থ করে বাইরের তত্ত্ব সংগ্রহ করবার প্রবৃত্তি, চিন্তা করবার সাহস জেগে ওঠে না। তাদের চিত্তের দৈন্য ঘটেছে।’ আরও বলেছিলেন, ‘জ্ঞানের পথ জ্ঞানের সাধনা শিক্ষার দ্বারা প্রপীড়িত। ঔৎসুক্য নেই, কেবল নোট মুখস্থ করে চিত্তকে ব্যাধিগ্রস্ত ও ভারাক্রান্ত করা।’
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের এমন সব উপলব্ধি থেকে আমরা কি অনেক দূরে সরে গেছি? এসব চেতনা গণমানসে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করতে হবে, তাহলে এই নীতিমালা বাস্তবায়ন নিয়ে যে আশঙ্কার কথা উঠেছে, তা অর্থহীন হয়ে যাবে। রবীন্দ্রনাথ বাঙালির জাতীয় জীবনের সংকট ও সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে দিয়ে গেছেন। মনুষ্যত্বের বাহন শিক্ষাকে যাঁরা পণ্য করে তুলেছেন, অমন কপট শিক্ষা ব্যবসায়ীদের আমরা বর্জন করতে শিখিনি আজও।
আফজালুর রহমান: সহযোগী অধ্যাপক, আনন্দ মোহন কলেজ, ময়মনসিংহ।
No comments