ঢাকার নিবন্ধনের সাতকাহন by সজীব মিয়া
দুপুরের সূর্য ম্লান হয়ে মেঘের আড়ালে লুকিয়েছে। আষাঢ়ের কান্না-হাসির মধ্যে গত রোববার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় জড়ো হয়েছে শিক্ষার্থীরা। তাদের কেউ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে। কেউ আবার একপাশের লাইন থেকে কাজ শেষে ছুটছে অন্যপাশের বুথে।
অনেকে আবার নির্দিষ্ট বুথের লাইন থেকে মুখ বেজার করে ছুটছে তথ্যকেন্দ্রের দিকে না হয় মনিটরিং বুথের দিকে। কারণ, তাদের কাছে পর্যাপ্ত প্রমাণপত্র নেই অথবা তার তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এ রকম একজন ধানমন্ডি থেকে আসা ফাহিম ফরহাদ। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে নবম শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশনের পর স্কুল বদল করে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু তার রেজিস্ট্রেশন পত্রের তথ্য পরিবর্তন করা হয়নি। সেই স্কুল থেকেই এবার এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। রেজিস্ট্রেশন পেপার হাতে দাঁড়িয়েছিল মতিঝিল অঞ্চলের নির্ধারিত বুথে। কিন্তু সেখানে রাখা ল্যাপটপের সংরক্ষিত তথ্য সারণিতে তার তথ্য নেই। ফাহিম তখন রীতিমতো কাঁদো কাঁদো হয়ে এসেছে তথ্যকেন্দ্রে। পরে তথ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হলো তার সমাধান মিলবে মোহাম্মদপুরের নির্ধারিত বুথে। কারণ, তার রেজিস্ট্রেশনে মতিঝিলের নাম লেখা থাকলেও সে পরীক্ষায় অংশ নেয় মোহাম্মদপুরের স্কুল থেকে।
এ বছর গাজীপুর, সাভারসহ ঢাকা মহানগরে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা হবে ঢাকার অদূরে, নন্দন পার্কে। ১৩ ও ১৪ জুলাই, দুদিনে ভাগ করে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা সবাই দলবেঁধে এসেছে নিবন্ধন করতে, যাতে করে সব বন্ধু একদিনের টিকিট পায়। কিন্তু বিপত্তি বেধেছে যারা দলছুট হয়ে একা নিবন্ধন করেছে। এ রকম একজন অনিলা কর্মকার। সে তার বাবার সঙ্গে এসে গত দিন নিবন্ধন করেছিল। পেয়েছিল প্রথম দিনের প্রবেশ টিকিট। কিন্তু তার সব বন্ধু পেয়েছে দ্বিতীয় দিনের। পরের দিন নিবন্ধনস্থলে মনিটরিং বুথে এসে তার আকুতি, টিকিট পরিবর্তন করে তাকে দ্বিতীয় দিনের টিকিট দেয়া হোক।
এ রকম শত ঘটনার মধ্যে টানা তিন দিন ধরে চলেছে ঢাকা মহানগরের কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা-পূর্ব নিবন্ধন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যলয় বন্ধসভাসহ ঢাকা মহানগরের বন্ধুসভার বন্ধরা এ নিবন্ধন কাজ সমাপ্ত করেছেন। সকাল থেকে বিকেল অবধি বন্ধুদের অক্লান্ত পরিশ্রম করে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ সফল হয়েছে। এখন সবার অপেক্ষা ও প্রস্তুতি চূড়ান্ত সংবর্ধনার জন্য।
No comments