বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের জন্য আমাদের বদনাম হচ্ছে by সালমা আলী
মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে সালমা আলী হতাশ কণ্ঠে বললেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি শুধু খারাপ বললেই বলা হয় না, খুবই খারাপ। কিন্তু পরিস্থিতির এমন অধঃপতন না হয়ে উন্নতি হওয়ার প্রত্যাশা ছিল আমাদের। কারণ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার সহায়ক বেশ কিছু পদক্ষেপ সরকারিভাবেই গৃহীত হয়েছে।
যেমন- তথ্য অধিকার আইন, গণমাধ্যমের প্রসার, নারী উন্নয়ন নীতি ইত্যাদি। দুঃখের বিষয়, কার্যত কোনো কিছুই কোনো সুফল বয়ে আনছে না মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে। বরং দিন দিন খারাপই হচ্ছে। হ্যাঁ, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলবেনই। আমরা যখন দেশের বাইরে যাই; আন্তর্জাতিক বলয়ে সভা-সেমিনারে আমাদের দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা উঠলে কোনো জবাব দিতে পারি না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড তো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বদনাম বয়ে ফিরছে। নতুন করে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গুম হওয়ার ঘটনা। তা-ও দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। ধারাবাহিকভাবে ঘটে যাচ্ছে ঘটনাগুলো। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা বাড়িয়ে দিচ্ছে দেশের সম্মান বা ভাবমূর্তি জলাঞ্জলির মাত্রা।
সালমা আলী বলেন, আমরা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছি। কিন্তু দেশের মানবিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশে-বিদেশে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয় প্রায়ই। সেদিন অস্ট্রেলিয়া থেকে একদল মানবাধিকার কর্মী এসেছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেও এসবের জবাব দিতে কষ্ট হয়েছে আমাদের- গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, শ্রমিক অধিকার প্রভৃতি বিষয় নিয়ে। আমাদের রিপোর্ট দিতে হয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কেন্দ্রে। বিপাকে পড়তে হয় রিপোর্ট করতে। কী লিখব!
এ ছাড়া আমাদের কাজের শক্তি ও পরিধি বাড়ানো যাচ্ছে না, লোকবল দরকার কমপক্ষে ২৫০ থেকে ৩০০ জন। সে ক্ষেত্রে আছে মাত্র ২৮ থেকে ৩০ জন। তদুপরি আমাদের ক্ষমতা ও স্বাধীনতারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যা থাকা উচিত নয়। হিউম্যান রাইটস কমিশনের বিচারিক ক্ষমতা নেই। সাধারণ তদন্ত করার ক্ষেত্রেও রয়েছে জটিলতা। মনে করেন, একজন দোষী পুলিশের তদন্ত হওয়ার দরকার। দেখা যায়, পুলিশের তদন্ত করছে অন্য পুলিশ। এই যে অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে ধামাচাপা দেওয়ার সুযোগ, তাহলে অপরাধীর বিচার কী হবে? আর অপরাধীর বিচার না হলে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে, মানবাধিকারের কথা পরিহাস ছাড়া আর কী বলা যায়।
না, শুধু রাজনৈতিক কারণ নয়, তবে প্রধান কারণ রাজনৈতিক সরকার বা অপজিশন কেউই এককভাবে দায়ী নয়। দেশ ও জনগণের স্বার্থে তাঁরা যদি রাজনীতি করে থাকেন, তাহলে জনগণের কথা ভাবা উচিত। আর যদি তাঁরা কেবল ক্ষমতায় টিকে থাকা বা ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে রাজনীতিকে ব্যবহার করেন, তাহলেই ঘটে বিপত্তি। তখন দেশের মানুষের মানবাধিকার রক্ষার চিন্তা মাথায় থাকে না। দেশের বা একটি রাষ্ট্রের প্রধান স্তম্ভ হচ্ছে বিচার বিভাগ, তা যদি স্বাধীন ও নির্দলীয় না হয়, নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীন ও শক্তিশালী না হয়, তাহলে কোনোভাবেই মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে না নূ্যনতম মাত্রায়ও। এমন কিছু বিষয় ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।
গ্রন্থনা : মহসীন হাবিব ও লুৎফর রহমান রনো
সালমা আলী বলেন, আমরা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছি। কিন্তু দেশের মানবিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশে-বিদেশে অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়তে হয় প্রায়ই। সেদিন অস্ট্রেলিয়া থেকে একদল মানবাধিকার কর্মী এসেছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেও এসবের জবাব দিতে কষ্ট হয়েছে আমাদের- গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, শ্রমিক অধিকার প্রভৃতি বিষয় নিয়ে। আমাদের রিপোর্ট দিতে হয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কেন্দ্রে। বিপাকে পড়তে হয় রিপোর্ট করতে। কী লিখব!
এ ছাড়া আমাদের কাজের শক্তি ও পরিধি বাড়ানো যাচ্ছে না, লোকবল দরকার কমপক্ষে ২৫০ থেকে ৩০০ জন। সে ক্ষেত্রে আছে মাত্র ২৮ থেকে ৩০ জন। তদুপরি আমাদের ক্ষমতা ও স্বাধীনতারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যা থাকা উচিত নয়। হিউম্যান রাইটস কমিশনের বিচারিক ক্ষমতা নেই। সাধারণ তদন্ত করার ক্ষেত্রেও রয়েছে জটিলতা। মনে করেন, একজন দোষী পুলিশের তদন্ত হওয়ার দরকার। দেখা যায়, পুলিশের তদন্ত করছে অন্য পুলিশ। এই যে অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে ধামাচাপা দেওয়ার সুযোগ, তাহলে অপরাধীর বিচার কী হবে? আর অপরাধীর বিচার না হলে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হলে, মানবাধিকারের কথা পরিহাস ছাড়া আর কী বলা যায়।
না, শুধু রাজনৈতিক কারণ নয়, তবে প্রধান কারণ রাজনৈতিক সরকার বা অপজিশন কেউই এককভাবে দায়ী নয়। দেশ ও জনগণের স্বার্থে তাঁরা যদি রাজনীতি করে থাকেন, তাহলে জনগণের কথা ভাবা উচিত। আর যদি তাঁরা কেবল ক্ষমতায় টিকে থাকা বা ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে রাজনীতিকে ব্যবহার করেন, তাহলেই ঘটে বিপত্তি। তখন দেশের মানুষের মানবাধিকার রক্ষার চিন্তা মাথায় থাকে না। দেশের বা একটি রাষ্ট্রের প্রধান স্তম্ভ হচ্ছে বিচার বিভাগ, তা যদি স্বাধীন ও নির্দলীয় না হয়, নির্বাচন কমিশন যদি স্বাধীন ও শক্তিশালী না হয়, তাহলে কোনোভাবেই মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে না নূ্যনতম মাত্রায়ও। এমন কিছু বিষয় ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল।
গ্রন্থনা : মহসীন হাবিব ও লুৎফর রহমান রনো
No comments