সিলেটে লাখো মানুষ বন্যার্ত-সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়ক যোগাযোগ বন্ধ গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় ব্যাপক ভাঙন
টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে সিলেট জেলার জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। চার উপজেলার বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। জৈন্তাপুরে বন্যার পানিতে ডুবে এক শিশু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার সরুখাল গ্রামে রোপা বেগম (৭) নামের শিশুটি পানিতে ডুবে প্রাণ হারায়।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে বাড়ছে পাহাড়ি ঢলের স্রোত। প্লাবিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
সুরমাও কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেটে ৪৪.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বন্যার কারণে দেশের বৃহত্তম ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিসহ জাফলং ও বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি এবং বিভিন্ন বালুমহাল বন্ধ রয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার শ্রমিক। বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় এই সড়ক দিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার সঙ্গে সিলেটের সড়ক যোগাযোগ সোমবার রাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে এই সড়কের সালুটিকর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার ওপর দিয়ে নৌকা চলছে। মানুষজন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে এলাকা ছাড়ছে।
স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ি ঢলে গোয়াইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের ডাউকি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পিয়ান নদীতে এসে পড়ায় এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে মাইন্ড্রু নদী দিয়ে সারী নদী হয়ে অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে জাফলং চা বাগান।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁর উপজেলার পূর্ব জাফলং, আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, ডৌবাড়ী, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও ও পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের পৌনে তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। উপজেলা পরিষদেও পানি উঠে পড়েছে।
জৈন্তাপুরে সড়কে হাজারো মানুষ : জৈন্তাপুর উপজেলার নিমাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সিলেট-তামাবিল সড়কের বিভিন্ন স্থানে কয়েক শ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারের গরু-বাছুর ও হাঁস-মুরগি ভেসে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে। অবিরাম বৃষ্টিতে পুরো উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জৈন্তাপুর থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, সিলেট-তামাবিল সড়কে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, সড়কে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সারী-গোয়াইনঘাট রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার ৯০ শতাংশ গ্রামীণ রাস্তাঘাটও পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতটি আশ্রয়কেন্দ্র খেলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সারী, রাংপানি, বড়গাং ও নয়াগাং নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সারী নদী গতকাল বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ১৩.৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে পানি : কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে পানি উঠে গেছে। বাজারের বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে গেছে। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক দিয়ে গতকাল পর্যন্ত যানচলাচল করলেও সড়কের উভয় পাশে পানি ছুঁই ছুঁই করছে। যেকোনো সময় এই সড়কও তলিয়ে যেতে পারে।
সুরমার ডাইক ভেঙে পানি ঢুকছে জকিগঞ্জে : টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে সিলেটের জকিগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকছে। উপজেলার নদী-তীরবর্তী কমপক্ষে ২৫টি গ্রামের মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে। বারহাল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মানিক মিয়া জানান, এখানকার নূরনগর, চককোনা গ্রাম, উত্তর খিলোগ্রাম, নিজগ্রাম, পরচক, পুটিজুড়ি, শাহগলি বাজার এলাকায় সুরমা নদীর ডাইক ভেঙে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
বীরশ্রী ইউনিয়নের পিয়াইপুর ও বড়চালিয়া গ্রাম কুশিয়ারা নদীর মারাত্মক ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙার ঝুঁকিতে রয়েছে বারঠাকুরি, জকিগঞ্জ, কাজলসার ইউনিয়নসহ গোটা উপজেলাবাসী।
সুনামগঞ্জের তিন উপজেলা প্লাবিত : টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার এবং ছাতক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গতকাল দুপুর থেকে সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া ও আশপাশের এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় সুরমা নদী ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে এখানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনায় ব্যাপক ভাঙন : এক সপ্তাহে গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি এবং শত শত একর আবাদি জমি ব্রহ্মপুত্র ও যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। গৃহহারা পরিবারগুলো ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং অন্যান্য এলাকায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল মোস্তফা মো. আশাফুদ্দৌলা জানান, গত ১০ দিনে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধি ও পরে তা কমে যাওয়ার পর গত দুই দিনে আবার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্তমানে ফুলছড়ির রতনপুর, কাতলামারী ও সিংড়িয়া, সাঘাটার ভরতখালী, চিনিরপটল ও হাসিলকান্দি এবং সদর উপজেলার গিদারী, মোল্লারচরসহ কমপক্ষে ১৫টি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে।
এদিকে ফুলছড়ির সিংড়িয়া-বাদিয়াখালী সড়কে সিংড়িয়া এলাকায় নির্মিত একটি সেতু নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আরো একটি সেতু হুমকির মুখে। অপরদিকে গজারিয়া ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারী, নিশ্চিন্তপুর, দক্ষিণ সন্ন্যাসী, কিশামত ধলি, আনন্দবাড়ি ও জিগাবাড়ি; ফজলুপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাপাড়া, কাঁইয়াবাধা, কালাসোনার চরসহ আরো পাঁচটি গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। অথচ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে আরো তথ্য জুগিয়েছেন স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিরা।
বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে বাড়ছে পাহাড়ি ঢলের স্রোত। প্লাবিত এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
সুরমাও কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেটে ৪৪.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বন্যার কারণে দেশের বৃহত্তম ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিসহ জাফলং ও বিছনাকান্দি পাথর কোয়ারি এবং বিভিন্ন বালুমহাল বন্ধ রয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার শ্রমিক। বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান।
এদিকে পাহাড়ি ঢলে সিলেট-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় এই সড়ক দিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলার সঙ্গে সিলেটের সড়ক যোগাযোগ সোমবার রাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরেজমিনে এই সড়কের সালুটিকর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার ওপর দিয়ে নৌকা চলছে। মানুষজন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে এলাকা ছাড়ছে।
স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ি ঢলে গোয়াইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতের ডাউকি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পিয়ান নদীতে এসে পড়ায় এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। অপরদিকে মাইন্ড্রু নদী দিয়ে সারী নদী হয়ে অব্যাহত পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে জাফলং চা বাগান।
উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁর উপজেলার পূর্ব জাফলং, আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, ডৌবাড়ী, তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও ও পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের পৌনে তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। উপজেলা পরিষদেও পানি উঠে পড়েছে।
জৈন্তাপুরে সড়কে হাজারো মানুষ : জৈন্তাপুর উপজেলার নিমাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সিলেট-তামাবিল সড়কের বিভিন্ন স্থানে কয়েক শ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। এসব পরিবারের গরু-বাছুর ও হাঁস-মুরগি ভেসে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির দিকে যাচ্ছে। অবিরাম বৃষ্টিতে পুরো উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জৈন্তাপুর থানার ওসি আবদুল জলিল জানান, সিলেট-তামাবিল সড়কে আশ্রয় নেওয়া মানুষের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম জানান, সড়কে আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সারী-গোয়াইনঘাট রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার ৯০ শতাংশ গ্রামীণ রাস্তাঘাটও পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতটি আশ্রয়কেন্দ্র খেলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সারী, রাংপানি, বড়গাং ও নয়াগাং নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সারী নদী গতকাল বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ১৩.৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে পানি : কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরে পানি উঠে গেছে। বাজারের বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে গেছে। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক দিয়ে গতকাল পর্যন্ত যানচলাচল করলেও সড়কের উভয় পাশে পানি ছুঁই ছুঁই করছে। যেকোনো সময় এই সড়কও তলিয়ে যেতে পারে।
সুরমার ডাইক ভেঙে পানি ঢুকছে জকিগঞ্জে : টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে সিলেটের জকিগঞ্জে বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকছে। উপজেলার নদী-তীরবর্তী কমপক্ষে ২৫টি গ্রামের মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছে। বারহাল ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মানিক মিয়া জানান, এখানকার নূরনগর, চককোনা গ্রাম, উত্তর খিলোগ্রাম, নিজগ্রাম, পরচক, পুটিজুড়ি, শাহগলি বাজার এলাকায় সুরমা নদীর ডাইক ভেঙে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।
বীরশ্রী ইউনিয়নের পিয়াইপুর ও বড়চালিয়া গ্রাম কুশিয়ারা নদীর মারাত্মক ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙার ঝুঁকিতে রয়েছে বারঠাকুরি, জকিগঞ্জ, কাজলসার ইউনিয়নসহ গোটা উপজেলাবাসী।
সুনামগঞ্জের তিন উপজেলা প্লাবিত : টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার এবং ছাতক উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গতকাল দুপুর থেকে সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া ও আশপাশের এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টায় সুরমা নদী ষোলঘর পয়েন্টে বিপদসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছিল। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে এখানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র ও যমুনায় ব্যাপক ভাঙন : এক সপ্তাহে গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি এবং শত শত একর আবাদি জমি ব্রহ্মপুত্র ও যমুনায় বিলীন হয়ে গেছে। গৃহহারা পরিবারগুলো ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং অন্যান্য এলাকায় আশ্রয় নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল মোস্তফা মো. আশাফুদ্দৌলা জানান, গত ১০ দিনে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনায় আকস্মিক পানি বৃদ্ধি ও পরে তা কমে যাওয়ার পর গত দুই দিনে আবার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্তমানে ফুলছড়ির রতনপুর, কাতলামারী ও সিংড়িয়া, সাঘাটার ভরতখালী, চিনিরপটল ও হাসিলকান্দি এবং সদর উপজেলার গিদারী, মোল্লারচরসহ কমপক্ষে ১৫টি পয়েন্টে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে।
এদিকে ফুলছড়ির সিংড়িয়া-বাদিয়াখালী সড়কে সিংড়িয়া এলাকায় নির্মিত একটি সেতু নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আরো একটি সেতু হুমকির মুখে। অপরদিকে গজারিয়া ইউনিয়নের রতনপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।
এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারী, নিশ্চিন্তপুর, দক্ষিণ সন্ন্যাসী, কিশামত ধলি, আনন্দবাড়ি ও জিগাবাড়ি; ফজলুপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গাপাড়া, কাঁইয়াবাধা, কালাসোনার চরসহ আরো পাঁচটি গ্রামে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। অথচ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে আরো তথ্য জুগিয়েছেন স্থানীয় জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিরা।
No comments