আইন সম্পর্কে সবার স্বচ্ছ জ্ঞান থাকতে হবে by সালমা আলী

নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে সাবস্টেনটিভ আইন দণ্ডবিধি, ১৮৬০,পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬, ডিএমপিসহ অন্যান্য মহানগর পুলিশ আইন, ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন, ২০০৯ আছে।


আবার প্রসিজিউরাল আইন হিসেবে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮, সাক্ষ্য আইন, ১৯৭২ আছে।
এ ছাড়া যৌন হয়রানি প্রতিরোধে উচ্চ আদালতের প্রদত্ত নির্দেশনা আইন হিসেবে গণ্য। এই আইনে মোবাইলে এসএমএস বা এমএমএসসহ বিভিন্ন উপায়ে নারী উত্ত্যক্তকরণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হয়েছে। এ রায়টিও সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি বিধান। কিন্তু সাইবার ক্রাইম অ্যাক্ট নামে কোনো আইন এখনো প্রণীত না হলেও এ বছরের মার্চে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ মাত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে আইনটি বাস্তবায়নের আগে বোঝা যাচ্ছে না কতখানি কার্যকর হবে। আইনটি অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে এবং স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে প্রণীত হয়নি। ফলে প্রয়োগের সময় বিভিন্ন জটিলতা ও কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিধিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ সমস্যা মোকাবিলা করার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার দেখা যাচ্ছে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৭ ধারা বাতিল করা হয়নি। আবার পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ একটি বিশেষ আইন। ফলে দুটো আইনের মধ্যে একধরনের সাংঘর্ষিকতা পরিলক্ষিত হয়। এত আইন থাকার পরও নারীরা হয়রানির শিকার, হচ্ছে। অপরাধীও শাস্তি পায় না।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিচার-প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাইবার অপরাধসংক্রান্ত আইনের বিধানাবলি সম্পর্কে সচেতনতার অভাব রয়েছে। আইনকে কার্যকর করতে হলে তাদের সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে প্রচলিত আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। এ ছাড়া বিচারপ্রার্থী ও জনগণের মধ্যেও রয়েছে আইনি অধিকার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। লোক জানাজানি হওয়া ও সামাজিক সমস্যার ভয়ে ভিকটিম ও তার পরিবারের মামলা এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এ জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ (আইও) সংশ্লিষ্ট সবার উচিত, মামলার বাদী বা ভিকটিমের গোপনীয়তা সঠিকভাবে রক্ষা করা। তা না হলে ভিকটিমের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। তবু প্রচলিত আইনি বিধানগুলোর মধ্যে অসামঞ্জস্যতা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্টদের যথাযথ জ্ঞানের অভাবে সাইবার অপরাধ যারা ঘটায়, তাদের শাস্তির আওতায় আনা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না।

No comments

Powered by Blogger.