বর্ষসেরা রানারআপ: ২০০৯ ও ২০১০তামিম ইকবাল-ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা
তাঁকে অনুষ্ঠানে আনাটা প্রতিবারের চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে হারতেও হয় প্রতিবারই। কোনো না কোনোভাবে তিনি ফসকে যান। কখনো চট্টগ্রামে, কখনো বিদেশে, কখনো মোবাইল বন্ধ। ২০০৭ সালে বর্ষসেরা উদীয়মানের পুরস্কার পেলেও মঞ্চে ওঠাতে হয়েছিল বড় ভাই নাফিস ইকবালকে।
গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার তামিম ইকবালকে ছাড়া হবে, এটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
ব্যতিক্রম এবার। অসুস্থতা নিয়েও তামিম অনুষ্ঠানে উপস্থিত। রেড কার্পেটে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘কখনো আসি না। এ জন্য প্রথম আলোর অনেক রাগ। এবার নিশ্চয়ই রাগ কমবে।’ যেন প্রথম আলোর রাগ কমাতেই অনুষ্ঠানে আসা!
ব্যাপার যদি তেমন হয়েও থাকে, এখন আর সেটা বলছেন না তামিম। অনুষ্ঠানটা প্রথমবারের মতো দেখে তাঁর উপলব্ধি, ‘পুরস্কার পাক না পাক, সব খেলার খেলোয়াড়দেরই এখানে আসা উচিত। এ রকম অনুষ্ঠান ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করে।’
একসঙ্গে তিন বছরের পুরস্কার—তামিম অন্তত একটা বর্ষসেরার আশা করতেই পারেন। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্য সে সম্ভাবনা তৈরিও করেছিল। টেস্টে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে ১৫১। লর্ডস আর ওল্ড ট্রাফোর্ডে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি। ধারাবাহিক সাফল্য ছিল ওয়ানডেতেও—ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকায় সেঞ্চুরি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৯৫ রানের ইনিংস। কল্পনায় আশার জাল বুনেছিলেন, হয়তো ২০১০-এর বর্ষসেরা...। কিন্তু ২০০৯-এর মতো তামিম এবারও মঞ্চে গেলেন রানারআপের পুরস্কার নিতে!
বর্ষসেরা হতে না পারার দুঃখকে অবশ্য উড়িয়ে দিয়ে অভিনন্দনে সিক্ত করেছেন গলফার সিদ্দিকুরকে, ‘যতগুলো পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, সম্ভবত ২০১০-এর বর্ষসেরা নির্বাচন করাই সবচেয়ে কঠিন ছিল। আমি পেলে অবশ্যই খুশি হতাম। তবে সিদ্দিকুর পাওয়াতেও খুশি। দিনশেষে আমরা সবাই খেলোয়াড়। পুরস্কার যে-ই পাক, তাকে অভিনন্দন।’
তামিমের মতো সাকিব আল হাসানও ভেবেছিলেন, ২০১০-এর বর্ষসেরা তামিমই হবেন। ঠিক করে রেখেছিলেন, ওই বছরের জন্য যদি নিজেও কিছু পান, মঞ্চে গিয়ে বলবেন, যার কথা ভাবছেন, সে পুরস্কারটা পেলে আরও বেশি খুশি হবেন। অনুষ্ঠানে বসে তামিমকেও নাকি বলেছিলেন সেটা।
তামিমের দুঃখের অংশীদার তাই সাকিবও। শুধু হতাশাই নয়, অনুষ্ঠানে একটা বিস্ময়ও উপহার পেয়েছেন তামিম। ২০১০-এর বর্ষসেরা হওয়ার আশা থাকলেও ২০০৯ সালে কোনো পুরস্কারই নাকি আশা করেননি, ‘২০০৯ সালের পুরস্কার আমার জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল। ওই বছর কী করেছিলাম, মনে ছিল না। তবে ঘোষণা শোনার পর মনে হলো ঠিকই আছে। জিম্বাবুয়েতে ১৫৪, টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি...।’
দুটি রানারআপের চেয়ে একটি বর্ষসেরার পুরস্কার অনেক বেশি দামি তামিমের কাছে। সেটা যখন পাওয়াই হলো না, আক্ষেপটাকে নিচ্ছেন ভবিষ্যতের প্রেরণা হিসেবে। তা ছাড়া এবার এসে অনুষ্ঠানটার প্রতি বাড়তি আকর্ষণও বোধ করতে শুরু করেছেন, ‘বাংলাদেশে এখন জাতীয় পুরস্কারের পর এটাই সবচেয়ে বড় পুরস্কার। সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়দের সামনে নিজের সাফল্যের জন্য পুরস্কার নিচ্ছি...অসাধারণ ব্যাপার। খেলাধুলা মানেই আত্মবিশ্বাস। এসব পুরস্কার আত্মবিশ্বাস ওপরে নিয়ে যায়।’
তামিমের সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে অনুষ্ঠানের বহুমাত্রিকতা। ক্রিকেটের জগৎ থেকে বেরিয়ে এসে গোটা দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে একই ছাদের নিচে দেখার সুযোগ। দাবায় ৮ বছর বয়সী ফাহাদের সাফল্যের কথা শুনে রীতিমতো রোমাঞ্চিত তিনি, ‘৮ বছরের ওই ছেলেটা যে এত ভালো করেছে, এটা তো জানতামই না! ওকে দেখে আমিও গর্বিত। এই পুরস্কার ওর পাওয়ারই কথা। অনুষ্ঠানে গিয়ে দেশের খেলাধুলা সম্পর্কে এ রকম অনেক কিছুই জেনেছি, যা আসলে সবারই জানা উচিত।’
ফাহাদের মতো তামিম আরও একজনকে নিয়েও গর্বিত—সাকিব আল হাসান। সাকিব যে একটু একটু করে তারকাদের তারকা হয়ে উঠছেন, সেটা সবচেয়ে কাছ থেকে তামিমই দেখছেন। সতীর্থ, সেই সঙ্গে বন্ধু। ফ্ল্যাট আলাদা হলেও দুজন থাকেন একই ভবনে। গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কারে আসা-যাওয়া এক গাড়িতে। এই গাড়িতেই উঠল পাঁচটা ট্রফি। ‘একই বাসায় থাকি। অনুষ্ঠানের বেশির ভাগ পুরস্কারই আমাদের বাসায় এসেছে। সাকিবের তিনটি, আমার দুটি। ফেরার সময় গাড়িতে অন্য আলোচনার সুযোগই ছিল না’—হাসতে হাসতে বলছিলেন ২০০৯ ও ২০১০-এর বর্ষসেরা রানারআপ।
ভবিষ্যতে এই হাসি আরও বিস্তৃত করার প্রতিজ্ঞা তামিমের। ঝুলিতে উইজডেন বর্ষসেরার স্বীকৃতি আছে। তবে বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড়ের কাছে গ্রামীণফোন-প্রথম আলোর বর্ষসেরার মর্যাদাটাও তো কম নয়! ‘উইজডেন উইজডেনের জায়গায় অনেক উঁচুতে। এই পুরস্কারটাও তার জায়গায় অনেক বড়, অনেক সম্মানের। আর আমার দেশে আমি অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছি, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে!’—তামিমের প্রতিজ্ঞাটা কি টের পাওয়া গেল?
তারেক মাহমুদ
ব্যতিক্রম এবার। অসুস্থতা নিয়েও তামিম অনুষ্ঠানে উপস্থিত। রেড কার্পেটে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘কখনো আসি না। এ জন্য প্রথম আলোর অনেক রাগ। এবার নিশ্চয়ই রাগ কমবে।’ যেন প্রথম আলোর রাগ কমাতেই অনুষ্ঠানে আসা!
ব্যাপার যদি তেমন হয়েও থাকে, এখন আর সেটা বলছেন না তামিম। অনুষ্ঠানটা প্রথমবারের মতো দেখে তাঁর উপলব্ধি, ‘পুরস্কার পাক না পাক, সব খেলার খেলোয়াড়দেরই এখানে আসা উচিত। এ রকম অনুষ্ঠান ভালো খেলতে অনুপ্রাণিত করে।’
একসঙ্গে তিন বছরের পুরস্কার—তামিম অন্তত একটা বর্ষসেরার আশা করতেই পারেন। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাফল্য সে সম্ভাবনা তৈরিও করেছিল। টেস্টে ঢাকায় ভারতের বিপক্ষে ১৫১। লর্ডস আর ওল্ড ট্রাফোর্ডে টানা দুই টেস্টে সেঞ্চুরি। ধারাবাহিক সাফল্য ছিল ওয়ানডেতেও—ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঢাকায় সেঞ্চুরি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ৯৫ রানের ইনিংস। কল্পনায় আশার জাল বুনেছিলেন, হয়তো ২০১০-এর বর্ষসেরা...। কিন্তু ২০০৯-এর মতো তামিম এবারও মঞ্চে গেলেন রানারআপের পুরস্কার নিতে!
বর্ষসেরা হতে না পারার দুঃখকে অবশ্য উড়িয়ে দিয়ে অভিনন্দনে সিক্ত করেছেন গলফার সিদ্দিকুরকে, ‘যতগুলো পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, সম্ভবত ২০১০-এর বর্ষসেরা নির্বাচন করাই সবচেয়ে কঠিন ছিল। আমি পেলে অবশ্যই খুশি হতাম। তবে সিদ্দিকুর পাওয়াতেও খুশি। দিনশেষে আমরা সবাই খেলোয়াড়। পুরস্কার যে-ই পাক, তাকে অভিনন্দন।’
তামিমের মতো সাকিব আল হাসানও ভেবেছিলেন, ২০১০-এর বর্ষসেরা তামিমই হবেন। ঠিক করে রেখেছিলেন, ওই বছরের জন্য যদি নিজেও কিছু পান, মঞ্চে গিয়ে বলবেন, যার কথা ভাবছেন, সে পুরস্কারটা পেলে আরও বেশি খুশি হবেন। অনুষ্ঠানে বসে তামিমকেও নাকি বলেছিলেন সেটা।
তামিমের দুঃখের অংশীদার তাই সাকিবও। শুধু হতাশাই নয়, অনুষ্ঠানে একটা বিস্ময়ও উপহার পেয়েছেন তামিম। ২০১০-এর বর্ষসেরা হওয়ার আশা থাকলেও ২০০৯ সালে কোনো পুরস্কারই নাকি আশা করেননি, ‘২০০৯ সালের পুরস্কার আমার জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল। ওই বছর কী করেছিলাম, মনে ছিল না। তবে ঘোষণা শোনার পর মনে হলো ঠিকই আছে। জিম্বাবুয়েতে ১৫৪, টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি...।’
দুটি রানারআপের চেয়ে একটি বর্ষসেরার পুরস্কার অনেক বেশি দামি তামিমের কাছে। সেটা যখন পাওয়াই হলো না, আক্ষেপটাকে নিচ্ছেন ভবিষ্যতের প্রেরণা হিসেবে। তা ছাড়া এবার এসে অনুষ্ঠানটার প্রতি বাড়তি আকর্ষণও বোধ করতে শুরু করেছেন, ‘বাংলাদেশে এখন জাতীয় পুরস্কারের পর এটাই সবচেয়ে বড় পুরস্কার। সাবেক-বর্তমান খেলোয়াড়দের সামনে নিজের সাফল্যের জন্য পুরস্কার নিচ্ছি...অসাধারণ ব্যাপার। খেলাধুলা মানেই আত্মবিশ্বাস। এসব পুরস্কার আত্মবিশ্বাস ওপরে নিয়ে যায়।’
তামিমের সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে অনুষ্ঠানের বহুমাত্রিকতা। ক্রিকেটের জগৎ থেকে বেরিয়ে এসে গোটা দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে একই ছাদের নিচে দেখার সুযোগ। দাবায় ৮ বছর বয়সী ফাহাদের সাফল্যের কথা শুনে রীতিমতো রোমাঞ্চিত তিনি, ‘৮ বছরের ওই ছেলেটা যে এত ভালো করেছে, এটা তো জানতামই না! ওকে দেখে আমিও গর্বিত। এই পুরস্কার ওর পাওয়ারই কথা। অনুষ্ঠানে গিয়ে দেশের খেলাধুলা সম্পর্কে এ রকম অনেক কিছুই জেনেছি, যা আসলে সবারই জানা উচিত।’
ফাহাদের মতো তামিম আরও একজনকে নিয়েও গর্বিত—সাকিব আল হাসান। সাকিব যে একটু একটু করে তারকাদের তারকা হয়ে উঠছেন, সেটা সবচেয়ে কাছ থেকে তামিমই দেখছেন। সতীর্থ, সেই সঙ্গে বন্ধু। ফ্ল্যাট আলাদা হলেও দুজন থাকেন একই ভবনে। গ্রামীণফোন-প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কারে আসা-যাওয়া এক গাড়িতে। এই গাড়িতেই উঠল পাঁচটা ট্রফি। ‘একই বাসায় থাকি। অনুষ্ঠানের বেশির ভাগ পুরস্কারই আমাদের বাসায় এসেছে। সাকিবের তিনটি, আমার দুটি। ফেরার সময় গাড়িতে অন্য আলোচনার সুযোগই ছিল না’—হাসতে হাসতে বলছিলেন ২০০৯ ও ২০১০-এর বর্ষসেরা রানারআপ।
ভবিষ্যতে এই হাসি আরও বিস্তৃত করার প্রতিজ্ঞা তামিমের। ঝুলিতে উইজডেন বর্ষসেরার স্বীকৃতি আছে। তবে বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড়ের কাছে গ্রামীণফোন-প্রথম আলোর বর্ষসেরার মর্যাদাটাও তো কম নয়! ‘উইজডেন উইজডেনের জায়গায় অনেক উঁচুতে। এই পুরস্কারটাও তার জায়গায় অনেক বড়, অনেক সম্মানের। আর আমার দেশে আমি অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছি, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে!’—তামিমের প্রতিজ্ঞাটা কি টের পাওয়া গেল?
তারেক মাহমুদ
No comments