চারদিক-সমুদ্রতীরে একদিন by সানজিদ আহমেদ পাটওয়ারী
ঢাকা থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার খুব একটা দূরে না হলেও ছয়টি ফেরি পার হওয়ার সুবাদে প্রায় ১০-১২ ঘণ্টার বাসভ্রমণ। আমরা যখন কুয়াকাটায় গিয়ে পৌঁছাই, তখন ভোর পাঁচটা। সৈকতের অদূরে একটা হোটেলে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে নিলাম। হোটেল ম্যানেজার দুজন মোটরসাইকেল গাইডের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন।
কুয়াকাটায় দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখার একমাত্র বাহন এই মোটরসাইকেল।
খিদেয় সবার পেট চোঁ চোঁ করছিল। প্রথমেই আমরা সমুদ্রতীরবর্তী একটা হোটেলে নাশতা সেরে নিলাম। এরপর গায়ের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ধরে মোটরসাইকেলে করে রাখাইনপল্লি আর বৌদ্ধমন্দির দেখতে গেলাম। বৌদ্ধমন্দির দেখে তো আমি হতবাক! এত বড় বুদ্ধমূর্তি বাংলাদেশে আর কোথাও কি আছে? আমি জানি না। মন্দিরটা মিস্ত্রিপাড়া বৌদ্ধমন্দির নামে পরিচিত। রাখাইনপল্লির ঘরগুলো দোচালা টিনের আর বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে আট ফুট ওপরে। নিচের ফাঁকা স্থানে তারা তাঁত, বসার বেঞ্চ এসব রাখে। কয়েকজন রাখাইন নারীকে দেখলাম তাঁতে কাপড় বুনছেন।
হোটেল থেকে ফিরে এসে আমরা গেলাম সৈকতে গোসল করতে। আমাদের সঙ্গে ফুটবল ছিল, আরও কিছু টুরিস্ট আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন খেলতে। সকালের সৌম্য সমুদ্র আমাদের হইহুল্লোড়ে মুখরিত হয়ে উঠল। এরপর ভেজা কাপড়েই সমুদ্রতীর ধরে মোটরসাইকেলে লেবুরচরে পৌঁছালাম। সমুদ্র আর নদীর মোহনায় একদিকে ফাতরার চর, আরেকদিকে লেবুর চর, অদূরেই সুন্দরবনের একাংশ। নদী থেকে চরে ভেতরের দিকে স্বচ্ছ পানির খাল ঢুকে গেছে। খালের দুই ধারে ঘন বন আর পানির নিচে অদ্ভুত সুন্দর রুপালি বালু চিকচিক করছে। নানা রঙের বর্ণিল ছোট ছোট মাছ আর কাঁকড়া আমাদের পা ছুঁয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে যদি আমি ঢাকায় ফিরে যাই, তার পরও আমার ভ্রমণ সার্থক। এত সুন্দর দৃশ্য কখনো দেখিনি আগে!
লেবুরচর দেখা শেষে আমরা গেলাম জেলেপল্লিতে। সমুদ্রসংগ্রামে অজেয় এই মানুষগুলো জন্ম থেকেই সাগরের পাশে তাদের বসতি করেছে শুধু একখানা কুঁড়েঘর আর একখানা নৌকা সম্বল করে।
জেলেপল্লি থেকে বেরিয়ে বেশ ক্লান্তি অনুভব করলাম। তাই হোটেলে ফিরে গোসল করে দুপুরের খাবার খেতে গেলাম। সামুদ্রিক রূপচাঁদা আর বেলে মাছ। এমনিতে সমুদ্রে দাপাদাপি করলে বেশ পরিশ্রম হয়, তার ওপর এত মজার খাবার, খুব তৃপ্তি করে খেলাম।
বিকেলে আমরা গেলাম ইকোপার্ক দেখতে। অসংখ্য গাছগাছালি, ঝাউবন আর পানির লেকের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে ইকোপার্কের রাস্তা। ঘাস আর গুল্মের অপরিকল্পিত বেড়ে ওঠায় রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার ছাপ স্পষ্ট হয়ে বসেছে। কুয়াকাটা পৃথিবীর একমাত্র সমুদ্রসৈকত, যেখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দুটোই ভালো দেখা যায়।
পরদিন ভোর চারটায় আমাদের উঠে যেতে হলো সূর্যোদয় দেখতে। আবার সেই সমুদ্রতীর ধরে মোটরসাইকেলে। এবার উল্টোদিকে, কাউয়ার চর। ভোরের আবছা আলোয় সমুদ্র আর অন্য পাশে ঝাউবন, আকাশে একফালি অপূর্ণ চাঁদ—এমনই এক আধিভৌতিক পরিবেশে হঠাৎ দেখলাম বিশাল এক পেঁচা সমুদ্রতীর থেকে বনের দিকে উড়ে গেল। বেচারা মোটরসাইকেলের শব্দে ভয় পেয়েছে। উদীয়মান সূর্যের আলোয় লক্ষ করলাম, পুরো চর লাল হয়ে আছে কাঁকড়ায়। বড় বড় লাল কাঁকড়ার ছবি তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। কাছে গেলেই টুপ করে বালুর গর্তে ঢুকে যায়। প্রভাত সূর্যের আলোয় হালকা ঠান্ডা বাতাসে মনে হলো পুরো সকালটা থেকে যেতে পারলে ভালো হতো।
খিদেয় সবার পেট চোঁ চোঁ করছিল। প্রথমেই আমরা সমুদ্রতীরবর্তী একটা হোটেলে নাশতা সেরে নিলাম। এরপর গায়ের আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ধরে মোটরসাইকেলে করে রাখাইনপল্লি আর বৌদ্ধমন্দির দেখতে গেলাম। বৌদ্ধমন্দির দেখে তো আমি হতবাক! এত বড় বুদ্ধমূর্তি বাংলাদেশে আর কোথাও কি আছে? আমি জানি না। মন্দিরটা মিস্ত্রিপাড়া বৌদ্ধমন্দির নামে পরিচিত। রাখাইনপল্লির ঘরগুলো দোচালা টিনের আর বন্যার হাত থেকে রক্ষার জন্য করা হয়েছে আট ফুট ওপরে। নিচের ফাঁকা স্থানে তারা তাঁত, বসার বেঞ্চ এসব রাখে। কয়েকজন রাখাইন নারীকে দেখলাম তাঁতে কাপড় বুনছেন।
হোটেল থেকে ফিরে এসে আমরা গেলাম সৈকতে গোসল করতে। আমাদের সঙ্গে ফুটবল ছিল, আরও কিছু টুরিস্ট আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন খেলতে। সকালের সৌম্য সমুদ্র আমাদের হইহুল্লোড়ে মুখরিত হয়ে উঠল। এরপর ভেজা কাপড়েই সমুদ্রতীর ধরে মোটরসাইকেলে লেবুরচরে পৌঁছালাম। সমুদ্র আর নদীর মোহনায় একদিকে ফাতরার চর, আরেকদিকে লেবুর চর, অদূরেই সুন্দরবনের একাংশ। নদী থেকে চরে ভেতরের দিকে স্বচ্ছ পানির খাল ঢুকে গেছে। খালের দুই ধারে ঘন বন আর পানির নিচে অদ্ভুত সুন্দর রুপালি বালু চিকচিক করছে। নানা রঙের বর্ণিল ছোট ছোট মাছ আর কাঁকড়া আমাদের পা ছুঁয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে যদি আমি ঢাকায় ফিরে যাই, তার পরও আমার ভ্রমণ সার্থক। এত সুন্দর দৃশ্য কখনো দেখিনি আগে!
লেবুরচর দেখা শেষে আমরা গেলাম জেলেপল্লিতে। সমুদ্রসংগ্রামে অজেয় এই মানুষগুলো জন্ম থেকেই সাগরের পাশে তাদের বসতি করেছে শুধু একখানা কুঁড়েঘর আর একখানা নৌকা সম্বল করে।
জেলেপল্লি থেকে বেরিয়ে বেশ ক্লান্তি অনুভব করলাম। তাই হোটেলে ফিরে গোসল করে দুপুরের খাবার খেতে গেলাম। সামুদ্রিক রূপচাঁদা আর বেলে মাছ। এমনিতে সমুদ্রে দাপাদাপি করলে বেশ পরিশ্রম হয়, তার ওপর এত মজার খাবার, খুব তৃপ্তি করে খেলাম।
বিকেলে আমরা গেলাম ইকোপার্ক দেখতে। অসংখ্য গাছগাছালি, ঝাউবন আর পানির লেকের মাঝখান দিয়ে এঁকেবেঁকে ইকোপার্কের রাস্তা। ঘাস আর গুল্মের অপরিকল্পিত বেড়ে ওঠায় রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলার ছাপ স্পষ্ট হয়ে বসেছে। কুয়াকাটা পৃথিবীর একমাত্র সমুদ্রসৈকত, যেখান থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দুটোই ভালো দেখা যায়।
পরদিন ভোর চারটায় আমাদের উঠে যেতে হলো সূর্যোদয় দেখতে। আবার সেই সমুদ্রতীর ধরে মোটরসাইকেলে। এবার উল্টোদিকে, কাউয়ার চর। ভোরের আবছা আলোয় সমুদ্র আর অন্য পাশে ঝাউবন, আকাশে একফালি অপূর্ণ চাঁদ—এমনই এক আধিভৌতিক পরিবেশে হঠাৎ দেখলাম বিশাল এক পেঁচা সমুদ্রতীর থেকে বনের দিকে উড়ে গেল। বেচারা মোটরসাইকেলের শব্দে ভয় পেয়েছে। উদীয়মান সূর্যের আলোয় লক্ষ করলাম, পুরো চর লাল হয়ে আছে কাঁকড়ায়। বড় বড় লাল কাঁকড়ার ছবি তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। কাছে গেলেই টুপ করে বালুর গর্তে ঢুকে যায়। প্রভাত সূর্যের আলোয় হালকা ঠান্ডা বাতাসে মনে হলো পুরো সকালটা থেকে যেতে পারলে ভালো হতো।
No comments