শতবর্ষের উলানিয়া স্কুল কি হারিয়ে যাবে? by মিজানুর রহমান শাজাহান
বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয় হাঁটি হাঁটি পা পা করে এ বছর ১০০ বছরে পদার্পণ করল। ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটির সাবেক ছাত্র প্রখ্যাত কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী গত ১০ মার্চ তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত এ বিদ্যালয়ে শতবর্ষ পূর্তি কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ স্কুলের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস খুবই শিক্ষণীয়। ১৯১১ সালে সমগ্র বাংলার জমিদাররা বার্ষিক সাধারণ কলকাতার গৌড়ের মাঠে সমবেত হন। শত শত জমিদারের সঙ্গে উলানিয়ার জমিদার ইসহাক চৌধুরী দর্শক সারিতে বসা। মঞ্চে বসা মুখ্যমন্ত্রী ও সংশিল্গষ্ট মন্ত্রীরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। হঠাৎ পরিচালক মাইকে ঘোষণা করলেন_ উলানিয়ার জমিদার ইসহাক চৌধুরী আপনি মঞ্চে অতিথির চেয়ারে আসন গ্রহণ করুন। সচিব বলেন_ আমার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায়। আমি এক গরিব ভূমিহীন প্রজার সন্তান, উলানিয়ার এ জমিদারের আর্থিক সহায়তায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে লেখাপড়া করতে পেরেছি বলেই আজ অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রিপরিষদ সচিব হতে পেরেছি। আজ সেই মহানুভব জমিদার দর্শক সারিতে বসে থাকবেন আর আমি মঞ্চে অনুষ্ঠান পরিচালনা করব, তা হতে পারে না। শত শত জমিদারের হাততালিতে মুখরিত হয়ে উঠল অনুষ্ঠানস্থল। স্লোগান উঠল 'জয় ইসহাক চৌধুরী।' বিষয়টি চৌধুরীর হৃদয়ে দাগ কাটল।
তিনি ভাবলেন যেখানে শত শত জমিদার দর্শক সারিতে সেখানে শিক্ষার জোরে এক প্রজার সন্তান অতিথির আসনে। তিনি ভাবলেন আমাদের উলানিয়ায় শত শত একর জমি অকারণে পড়ে আছে। আমি যদি সেখানে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করি তাহলে উলানিয়ার সন্তানরা দেশ ও বিদেশে বড় বড় পদে চাকরি পেলে তারা এভাবে সম্মানিত হবে। আজ ১০০ বছর পর এ মহান জমিদারের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে_ হে জাঁহাপনা আপনার স্বপ্ন মিথ্যা হয়নি। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লন্ডনে বসে, আসাদ চৌধুরী বাংলা একাডেমীতে, বিচারপতি জুবায়ের রহমান সুপ্রিম কোর্টে, ড. গোলাম মোস্তফা তালুকদার সচিবের চেয়ারে বসে উলানিয়াকে উপস্থাপন করছেন।
উলানিয়া ফিরে এক রাতের মধ্যে বিশাল সুপারি বাগান কেটে ছনের ঘর নির্মাণ করেন। সেখানেই ১৯১২ সালে পাঠদান শুরু হয়। চৌধুরীর সন্তান সোহরাব-রুস্তম কাব্যের রচয়িতা মৌলভী বজলুর রহিম বিয়ে করেন শেরেবাংলার কন্যাকে। শেরেবাংলা শিক্ষামন্ত্রী হয়ে স্কুলটিকে স্থায়ী মঞ্জুরিকৃত করে দেন। কবি আসাদ চৌধুরীসহ অসংখ্য সূর্যসন্তানের গর্বিত সাবেক বিদ্যাপীঠ এ উলানিয়া করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শতবর্ষ পূর্তির মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ ও ১ জানুয়ারি ২০১২। কিন্তু হঠাৎ মেঘনা নদীর ভাঙনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সে পর্যন্ত ঐতিহাসিক এ বিদ্যাপীঠ বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র, ৯০০ ছাত্রের বিদ্যাপীঠ কি থাকবে? নাকি গাফ্ফার চেীধুরীর ১০ মার্চে উলানিয়া সফরের সময় যা হয়েছে তাকেই আমাদের ধরে নিতে হবে শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান? কারণ ২০০৪ সালে স্কুল থেকে মেঘনার দূরত্ব ৬ কিলোমিটার থাকলেও এখন তা সোয়া কিলোমিটার।
তিনি ভাবলেন যেখানে শত শত জমিদার দর্শক সারিতে সেখানে শিক্ষার জোরে এক প্রজার সন্তান অতিথির আসনে। তিনি ভাবলেন আমাদের উলানিয়ায় শত শত একর জমি অকারণে পড়ে আছে। আমি যদি সেখানে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করি তাহলে উলানিয়ার সন্তানরা দেশ ও বিদেশে বড় বড় পদে চাকরি পেলে তারা এভাবে সম্মানিত হবে। আজ ১০০ বছর পর এ মহান জমিদারের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে_ হে জাঁহাপনা আপনার স্বপ্ন মিথ্যা হয়নি। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী লন্ডনে বসে, আসাদ চৌধুরী বাংলা একাডেমীতে, বিচারপতি জুবায়ের রহমান সুপ্রিম কোর্টে, ড. গোলাম মোস্তফা তালুকদার সচিবের চেয়ারে বসে উলানিয়াকে উপস্থাপন করছেন।
উলানিয়া ফিরে এক রাতের মধ্যে বিশাল সুপারি বাগান কেটে ছনের ঘর নির্মাণ করেন। সেখানেই ১৯১২ সালে পাঠদান শুরু হয়। চৌধুরীর সন্তান সোহরাব-রুস্তম কাব্যের রচয়িতা মৌলভী বজলুর রহিম বিয়ে করেন শেরেবাংলার কন্যাকে। শেরেবাংলা শিক্ষামন্ত্রী হয়ে স্কুলটিকে স্থায়ী মঞ্জুরিকৃত করে দেন। কবি আসাদ চৌধুরীসহ অসংখ্য সূর্যসন্তানের গর্বিত সাবেক বিদ্যাপীঠ এ উলানিয়া করোনেশন মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শতবর্ষ পূর্তির মূল অনুষ্ঠান হওয়ার কথা আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০১১ ও ১ জানুয়ারি ২০১২। কিন্তু হঠাৎ মেঘনা নদীর ভাঙনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সে পর্যন্ত ঐতিহাসিক এ বিদ্যাপীঠ বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র, ৯০০ ছাত্রের বিদ্যাপীঠ কি থাকবে? নাকি গাফ্ফার চেীধুরীর ১০ মার্চে উলানিয়া সফরের সময় যা হয়েছে তাকেই আমাদের ধরে নিতে হবে শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান? কারণ ২০০৪ সালে স্কুল থেকে মেঘনার দূরত্ব ৬ কিলোমিটার থাকলেও এখন তা সোয়া কিলোমিটার।
No comments