বর্ষসেরা রানারআপ: ২০১১সালমা খাতুন-মহিলা ক্রিকেটের সাকিব!
একটু যেন লজ্জা পেয়ে গেলেন সালমা খাতুন। মাথাটা নিচু করে লাজুক হাসি, ‘টিমমেটরা-স্যাররা অনেকেই আমাকে এটাই বলেন। আমি নাকি বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটের সাকিব আল হাসান।’ পর মুহূর্তেই যেন আবেগে বাঁধ দিয়ে ফিরে আসতে চান বাস্তবতায়, ‘ওরা এমনি মজা করে।
সাকিব ভাই কত বড় ক্রিকেটার, বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার। আমি দেশের এক নম্বর কি না, কে জানে।’
এটা সালমার বিনয়। সাকিবের সঙ্গে তুলনা হয়তো বাড়াবাড়ি, তবে নিজের জায়গায় সালমা তো একজন সাকিবই। অবিসংবাদিতভাবেই দেশের সেরা মহিলা ক্রিকেটার। দেশের মহিলা ক্রিকেটের প্রথম তারকা, সবচেয়ে বড় তারকা বা আদৌ যদি কেউ তারকা হয়ে থাকে, সেটা কেবল সালমাই। একটা দিক থেকে বরং সাকিবের থেকে এগিয়েই। দেশের মহিলা ক্রিকেটের একরকম প্রতীকই তো হয়ে উঠেছেন তিনি!
অনেক বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে কীভাবে সালমা এগিয়েছেন, সেই গল্প এখন অনেকেরই জানা। কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, প্রবল আকাঙ্ক্ষাশক্তি দিয়ে খুলনার এক গ্রামের মেয়ে ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন আজকের সালমা। গ্রামীণফোন-প্রথম আলো পুরস্কারেও কিন্তু সালমার সেই এগিয়ে চলার প্রতিফলন। ২০০৮ সালে ছিলেন বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদ। আর ২০১১ সালে নারী-পুরুষ সব মিলিয়েই দ্বিতীয় সেরা, বর্ষসেরা রানারআপ!
এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন—ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সালমা পেয়েছেন এই পুরস্কার। আক্ষরিক অর্থেই সামনে থেকে নেতৃত্ব, দলের অধিনায়ক তো বটেই। উজ্জ্বল ছিলেন ব্যাটে-বলেও। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৩ রনের দারুণ এক ইনিংসসহ ৫ ইনিংসে ১৩৩ রান। অফ স্পিনে ৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট। এক ম্যাচে ৫ রানে পেয়েছিলেন ৫ উইকেট! ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশের একমাত্র ওয়ানডেতেও ৩ উইকেট নিয়ে বড় অবদান ছিল দলের জয়ে। সাকিবের সঙ্গে মূল তুলনার জায়গাটা ওখানেই। সালমাও দলের সবচেয়ে বড় ভরসা, ব্যাটিং-বোলিংয়ের একটিতে অন্তত দল তাঁর কাছে কিছু না কিছুু পায় প্রায় প্রতি ম্যাচেই।
মাঠের বাইরেও তিনি অধিনায়ক। খেলা না থাকলেও নিয়মিত সবার খোঁজখবর নেন। পুরস্কারের প্রতিক্রিয়াতেও বড় হয়ে উঠলেন অধিনায়ক সালমা, ‘ছেলেমেয়ে মিলিয়ে রানারআপ আমার জন্য অনেক বড় এক সম্মান। তবে বেশি ভালো লাগছে কুবরার (খাদিজা-তুল-কুবরা) জন্য। গতবার পুরস্কার পাওয়ার পর বলেছিলাম, পরেরবার মেয়েদের ক্রিকেট থেকে দুজন পাবে। সেটাই হলো।’
পেছন ফিরে তাকালে সবকিছু কেমন স্বপ্নের মতো মনে হয় সালমার কাছে। গত পাঁচ বছরে কোত্থেকে কোথায় এলেন, তাঁর নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয় মাঝেমধ্যে। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের পাল ছেঁড়া নৌকাটার হাল শক্ত হাতে ধরতে পেরেছেন ক্রিকেটের কল্যাণেই। ক্রিকেট খেলে আয় করছেন, মাসে মাসে পাচ্ছেন ভাতা। পাশে থেকে সব সময় উৎসাহ-অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন যিনি, সেই মাকে খুলনায় একটা বাড়ি উপহার দিতে পেরেছেন ক্রিকেটের আয় থেকে। জীবনের সবচেয়ে বড় তৃপ্তি এটাই! অনেকেই এখন তাঁকে চেনে, বাইরে বের হলে কাছে এসে কথা বলে, অনুপ্রেরণা দেয়। লাজুক মুখে জানালেন, কিছু ভক্তের ফোনও পান! অনেক মা-বাবা ফোন করে বলেন, মেয়েকে তাঁর মতো ক্রিকেটার বানাতে চান। জীবনটাকে অনেক সার্থক মনে হয় সালমার।
ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়াটাকে মানছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে। তবে এগিয়ে যেতে চান অনেক দূর। ভারতের মিতালি রাজ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্টেফানি টেলরের মতো ব্যাটিং করতে চান, হতে চান সাকিবের মতো বোলার। আর এগিয়ে যাওয়ায় নিরন্তর অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে একটা স্বপ্ন—একবার অন্তত খেলতে চান বিশ্বকাপ!
আরিফুল ইসলাম
এটা সালমার বিনয়। সাকিবের সঙ্গে তুলনা হয়তো বাড়াবাড়ি, তবে নিজের জায়গায় সালমা তো একজন সাকিবই। অবিসংবাদিতভাবেই দেশের সেরা মহিলা ক্রিকেটার। দেশের মহিলা ক্রিকেটের প্রথম তারকা, সবচেয়ে বড় তারকা বা আদৌ যদি কেউ তারকা হয়ে থাকে, সেটা কেবল সালমাই। একটা দিক থেকে বরং সাকিবের থেকে এগিয়েই। দেশের মহিলা ক্রিকেটের একরকম প্রতীকই তো হয়ে উঠেছেন তিনি!
অনেক বাধা-বিঘ্ন পেরিয়ে কীভাবে সালমা এগিয়েছেন, সেই গল্প এখন অনেকেরই জানা। কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায়, প্রবল আকাঙ্ক্ষাশক্তি দিয়ে খুলনার এক গ্রামের মেয়ে ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছেন আজকের সালমা। গ্রামীণফোন-প্রথম আলো পুরস্কারেও কিন্তু সালমার সেই এগিয়ে চলার প্রতিফলন। ২০০৮ সালে ছিলেন বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদ। আর ২০১১ সালে নারী-পুরুষ সব মিলিয়েই দ্বিতীয় সেরা, বর্ষসেরা রানারআপ!
এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের মহিলা ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন—ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সালমা পেয়েছেন এই পুরস্কার। আক্ষরিক অর্থেই সামনে থেকে নেতৃত্ব, দলের অধিনায়ক তো বটেই। উজ্জ্বল ছিলেন ব্যাটে-বলেও। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৩ রনের দারুণ এক ইনিংসসহ ৫ ইনিংসে ১৩৩ রান। অফ স্পিনে ৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট। এক ম্যাচে ৫ রানে পেয়েছিলেন ৫ উইকেট! ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর বাংলাদেশের একমাত্র ওয়ানডেতেও ৩ উইকেট নিয়ে বড় অবদান ছিল দলের জয়ে। সাকিবের সঙ্গে মূল তুলনার জায়গাটা ওখানেই। সালমাও দলের সবচেয়ে বড় ভরসা, ব্যাটিং-বোলিংয়ের একটিতে অন্তত দল তাঁর কাছে কিছু না কিছুু পায় প্রায় প্রতি ম্যাচেই।
মাঠের বাইরেও তিনি অধিনায়ক। খেলা না থাকলেও নিয়মিত সবার খোঁজখবর নেন। পুরস্কারের প্রতিক্রিয়াতেও বড় হয়ে উঠলেন অধিনায়ক সালমা, ‘ছেলেমেয়ে মিলিয়ে রানারআপ আমার জন্য অনেক বড় এক সম্মান। তবে বেশি ভালো লাগছে কুবরার (খাদিজা-তুল-কুবরা) জন্য। গতবার পুরস্কার পাওয়ার পর বলেছিলাম, পরেরবার মেয়েদের ক্রিকেট থেকে দুজন পাবে। সেটাই হলো।’
পেছন ফিরে তাকালে সবকিছু কেমন স্বপ্নের মতো মনে হয় সালমার কাছে। গত পাঁচ বছরে কোত্থেকে কোথায় এলেন, তাঁর নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয় মাঝেমধ্যে। বাবার মৃত্যুর পর সংসারের পাল ছেঁড়া নৌকাটার হাল শক্ত হাতে ধরতে পেরেছেন ক্রিকেটের কল্যাণেই। ক্রিকেট খেলে আয় করছেন, মাসে মাসে পাচ্ছেন ভাতা। পাশে থেকে সব সময় উৎসাহ-অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন যিনি, সেই মাকে খুলনায় একটা বাড়ি উপহার দিতে পেরেছেন ক্রিকেটের আয় থেকে। জীবনের সবচেয়ে বড় তৃপ্তি এটাই! অনেকেই এখন তাঁকে চেনে, বাইরে বের হলে কাছে এসে কথা বলে, অনুপ্রেরণা দেয়। লাজুক মুখে জানালেন, কিছু ভক্তের ফোনও পান! অনেক মা-বাবা ফোন করে বলেন, মেয়েকে তাঁর মতো ক্রিকেটার বানাতে চান। জীবনটাকে অনেক সার্থক মনে হয় সালমার।
ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়াটাকে মানছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন বলে। তবে এগিয়ে যেতে চান অনেক দূর। ভারতের মিতালি রাজ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্টেফানি টেলরের মতো ব্যাটিং করতে চান, হতে চান সাকিবের মতো বোলার। আর এগিয়ে যাওয়ায় নিরন্তর অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে একটা স্বপ্ন—একবার অন্তত খেলতে চান বিশ্বকাপ!
আরিফুল ইসলাম
No comments