চালচিত্র-একদিকে শোক আরেক দিকে জনদুর্ভোগ by শুভ রহমান
শোকের মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় দুটি মূল্যবান প্রাণ চলে গেল। তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরের শোকে বিপর্যস্ত গোটা জাতি। দুজনের দাফন হয়ে গেছে ইতিমধ্যে_মঙ্গলবার বনানী গোরস্তানে মিশুক মুনীরের, বুধবার ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিজ গ্রামে তারেক মাসুদের। দুজনের পরিচিতি আজ বাহুল্যমাত্র। শহীদ মিনারে শোকসন্তপ্ত বাংলাদেশ অশ্রু, ফুল আর শ্রদ্ধার্ঘ্যে ভরে দিয়েছে তাঁদের কফিন। এমন মৃত্যু বাংলাদেশ আর চায় না।
তাঁদের জন্য শোকের অভিঘাতেই সমাজ ও রাষ্ট্রের এক রূঢ় বাস্তবতা উন্মোচিত হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিলের জন্য আসলে কে দায়ী? দায়ী যোগাযোগ ব্যবস্থা, ভাঙাচোরা খানাখন্দে ভরা দেশের সড়ক-মহাসড়ক, দায়ী সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আর যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম, অব্যবস্থা ও দুর্নীতি। প্রশাসন তোলপাড় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার নিয়মিত ও জরুরি সভা করেছেন, সভায় তোপের মুখে পড়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী, ক্ষুব্ধ মন্ত্রীরা লুটপাটের দোষারোপ করেছেন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে। যোগাযোগমন্ত্রী দায় এড়াতে চেয়েছেন প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাননি বলে, সময়মতো অর্থ ছাড় করানো হয়নি বলে। অন্যদিকে অর্থমন্ত্রী, অর্থসচিব এর সত্যতা অস্বীকার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ দিয়েছেন। যোগাযোগমন্ত্রী হাস্যোজ্জ্বল মুখে দেশবাসীকে জানিয়েছেন, ঈদের আগেই রাস্তাঘাট সংস্কার হবে, ৬৯০ কোটি টাকা খরচ করা হবে। ক্ষুব্ধ দেশবাসী মন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হতে পারছে না। দুই মাস ধরে যে রাস্তাঘাট ভেঙেচুরে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে আছে, তা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই চলাচলের উপযোগী হয়ে যাবে কী করে!
ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন সড়কে কয়েক দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় ঈদের আগে মানুষ চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন। পুরো চাপটা গিয়ে পড়েছে ট্রেনের ওপর। ঢাকা-ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেনযাত্রী উপচে পড়ছে, টিকিট আর স্থান না পেয়ে দিশেহারা মানুষ। এক নজিরবিহীন বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন স্টেশনে।
ওদিকে মানুষমাত্রই আজ ক্ষুব্ধ, বেদনাহত হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার দৃঢ়সংকল্পের জায়গায় এসে দাঁড়াচ্ছে। দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক_সবাই এর কোনো বিকল্প দেখছেন না।
কবি জন ডান-এর ভাষায়, '...ধহু সধহ'ং ফবধঃয ফরসরহরংযবং সব, নবপধঁংব ও ধস রহাড়ষাবফ রহ সধহশরহফ. অহফ ঃযবৎবভড়ৎব হবাবৎ ংবহফ ঃড় শহড় িভড়ৎ যিড়স ঃযব নবষষ ঃড়ষষং; রঃ ঃড়ষষং ভড়ৎ ঃযবব.' অর্থাৎ 'যেকোনো মানুষের মৃত্যু আমাকে খর্ব করে, কারণ আমি মানবজাতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আর তাই কখনো জানতে যাই না, কার মৃত্যুঘণ্টা বাজছে; যারই হোক, বাজছে তোমার জন্যই।'
তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরের মৃত্যু আজ এ সমাজের প্রত্যেক মানুষের অস্বাভাবিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুই যেন অনিবার্য করে তুলেছে। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চেয়েছিলেন কলামিস্ট অনিকেত (নির্মল সেন), সে কবেকার কথা! সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল তার পরও বলতে গেলে একটি দিনের জন্যও এ দেশে থামেনি।
অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর আজ এ দেশের মানুষ বিপুল প্রত্যাশা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং ন্যায়সংগতভাবেই মানুষ তো এখন চাইতেই পারে, এতকাল যা হয়নি, অন্তত এখন এ সরকারের আমলে তো আর মানুষকে অস্বাভাবিকভাবে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পথেঘাটে গাড়িচাপা পড়ে মরতে হবে না। মানুষ প্রচণ্ডভাবেই আশাহত হয়েছে, সেই অতীতের ধারায়ই একইভাবে, বরং আরো সংহারী মূর্তি নিয়ে যন্ত্রদানব বাস-ট্রাক যেন রাস্তায় নেমেছে। রাজধানী ও বিভিন্ন শহরের শুধু ভেতরের রাস্তাগুলোই নয়, দেশের সব মহাসড়কই যেন মৃত্যুফাঁদ হয়ে বসেছে। কখন ও কোথায় কার মৃত্যু ঘটবে কারো জানা নেই। অতীতেও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিবাজ, সবচেয়ে বেশি লুটপাটের আখড়া ছিল, এখনো যেন তা-ই দেখা যাচ্ছে। এ যাবৎকালের সবচেয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় যশস্বী চলচ্চিত্রকার, আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত তারেক মাসুদ আর তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযাত্রী প্রতিভাবান আলোকচিত্র সাংবাদিক মিশুক মুনীর সারা দেশকে প্রচণ্ড শোকের সাগরে ভাসিয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করলেন। তাঁদের সঙ্গে একই মাইক্রোবাসের চালক এবং তাঁদের টিমের সদস্য আরো তিনজনও প্রাণ হারালেন। আহত হলেন আরো তিনজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তারেক মাসুদের স্ত্রী ও তাঁর কাজের সাথি ক্যাথেরিন মাসুদ। আহত একজনের, শিল্পী ঢালী আল মামুনের এখন প্রাণাশঙ্কার কথা বলছেন ডাক্তাররা স্কয়ার হাসপাতালে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। তারেক মাসুদ তাঁর টিম নিয়ে তাঁর নতুন চলচ্চিত্র-ভাবনা 'কাগজের ফুল'-এর রূপায়ণের জন্যই লোকেশন শুটিংয়ের স্পট ঠিক করতে ঘিওরে গিয়েছিলেন। কে জানে হয়তো এটাই আমাদের দেশকে চলচ্চিত্রের নোবেল পুরস্কার_অস্কারে ভূষিত হওয়ার সম্মান এনে দিত। তারেক মাসুদের তা ছিল স্বপ্ন। এমন নিবেদিতপ্রাণ চলচ্চিত্র নির্মাতা এ দেশে আর দেখা যায়নি। নিজেকে তিনি 'সিনেমার ফেরিওয়ালা' বলতেন, নিজের নির্মিত ফিল্ম নিয়ে গ্রামগঞ্জে দেখিয়ে বেড়াতেন। তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি 'মাটির ময়না' এ দেশকে প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার, কান ফেস্টিভ্যালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড এনে দেয়। তাঁর যেমন স্বপ্ন ছিল পূর্ণাঙ্গ অস্কার পাওয়ার, জাতিরও ছিল। এখন তা হয়তো সুদূরপরাহতই হয়ে গেল। উন্নত যেকোনো দেশে এ রকম চিত্রনির্মাতাকে রাষ্ট্র বুক দিয়ে আগলে রাখে, তাঁকে সর্বতোভাবে বিকাশের সুযোগ করে দেয়। আর এ দেশে জন্মে তারেক মাসুদ স্বদেশে শুধু অবহেলা আর বিড়ম্বনা পেতে পেতেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। এ দুঃখ আমাদের রাখার জায়গা নেই। একইভাবে শহীদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান মিশুক মুনীর ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী ক্যামেরাম্যান। টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে যোগদান করে স্বল্পসময়েই তিনি সে চ্যানেলে যুগান্তর এনে দিয়েছিলেন। শুধু এটিএনে নয়, টিভি সাংবাদিকতারই নতুন মাত্রা ও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়ে গেছেন তিনি। দুজনই ছিলেন প্রগতিশীল ধারার মানুষ। দুজনের কথা এলেই বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের কথাই মনে পড়ে। সত্যজিৎ অস্কার এনে দিয়ে গেছেন পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতকে। আমাদের সদ্য-হারানো দুই সৃষ্টিশীল মানুষও এ দেশকে অস্কার এনে দিতে পারতেন। জাতি তা সময় থাকতে বোঝেনি। তাঁদের বিদায়ে এ দেশে সত্যজিৎ সৃষ্টির সম্ভাবনাও সুদূরপরাহত হয়ে গেল।
এই সঙ্গে উঠে আসছে সড়ক দুর্ঘটনায় হারানো এ দেশের অনেক শিল্পী-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-রাজনীতিকের কথাও। সাধারণ মানুষের মৃত্যু তো একেকটি পরিবারকে নিঃস্ব, বিপর্যস্ত করে রেখে যায়ই, অসংখ্য শিল্পী-সাহিত্যিক-রাজনীতিক-সাংবাদিকের মৃত্যু নিঃস্ব, বেদনার্ত ও বিপর্যস্ত করে রেখে যায় দেশ ও জাতিকেও। আমরা অতীতে হারিয়েছি সংবাদের বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মন্টুকে, পেপসিকোলার কাভার্ড ভ্যান রাজপথে যাঁর মাথা চূর্ণ করে দিয়ে যায়। মৃত্যুর সঙ্গে ১৩ দিন যুঝে তিনি ১৯৮৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবসে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তাঁর সহধর্মিণী দুই সন্তানের জননী অধ্যাপিকা রওশন আক্তার দুর্মর প্রচেষ্টায় ক্ষতিপূরণ মামলা করে ২২ বছর একা একা লড়াই করে অবশেষে নিম্ন আদালতে তিন কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের রায় আদায় করেন। পরে উচ্চ আদালতে তার অঙ্ক হ্রাস করে দুই কোটি করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁর চাকরিজীবনে অর্জিত লাখ লাখ টাকা খরচ করে দেশের প্রথম ও একমাত্র ক্ষতিপূরণ মামলা জিতেও এখন পর্যন্ত একটি পয়সাও ক্ষতিপূরণ পাননি। বিবাদীপক্ষ নিরস্ত না হয়ে আপিল করেছে। টিভি চ্যানেলে এবং এর আগে জাতীয় সংবাদপত্রগুলোয় এই বিরল দৃষ্টান্তের ওপর সচিত্র প্রতিবেদন বেরিয়েছে। তাঁর ক্ষতিপূরণ আদায়ের ওপর শুধু একটি সব-হারানো পরিবারের যন্ত্রণার অবসান নির্ভর করছে না, এ দেশে নির্বিবাদে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ হত্যার বেপরোয়া কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এই প্রথম একটা বড় রকম প্রতিরোধ ও তাতে সফল হওয়াও নির্ভর করছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা অতীতে আরো হারিয়েছি কবি-সাংবাদিক ইউসুফ পাশাকে, হারিয়েছি চিত্রনির্মাতা আলমগীর কবিরকে, হারিয়েছি দেশের সাবেক প্রবীণ অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানকে, হারিয়েছি এই সেদিন দুজন সচিবকে, বুয়েটের ছাত্রকে, এর আগে হারিয়েছি ১৯৯৮-এ আর্ট কলেজের নবীন চিত্রশিল্পী নীলাঞ্জনকে, মেডিক্যাল ছাত্রীকে, মীরসরাইয়ে ৪৪ কিশোর শিক্ষার্থীকে এবং সমাজের অজস্র অ্যাসেটকে। ইসমত মনি নীলাঞ্জনকে তো পুলিশ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবেই দাফন করে ফেলেছে। অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের 'নিরাপদ সড়ক চাই' আন্দোলনের কথাও জাতির জানা।
কবে এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় সংহারপর্ব থামবে, কেউ তা বলতে পারে না। মানুষ ভাবছিল, তারেক আর মিশুকের মৃত্যুর পর পরই যদি সংসদের জরুরি অধিবেশন তলব করে এ ব্যাপারে যোগাযোগমন্ত্রী ও সংসদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হতো, তাহলেও হয়তো জনমনে একটু আশার সঞ্চার হতে পারত। যা হোক, অবশেষে আগে থেকে ডাকা সংক্ষিপ্ত সংসদ অধিবেশনও বসছে আজ। দেশ তাকিয়ে আছে অধীর আগ্রহে কী হয় তা দেখার জন্য।
আজ বিশ্বের যেকোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশেই নিশ্ছিদ্র ও উন্নত, আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা, কঠোর ট্রাফিক আইন আর আইন লঙ্ঘনকারীদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে। পাশের দেশ ভারতের কোনো রাজ্যেই ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করতে দেখা যায় না। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা, বেল্ট না পরা, মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট না পরা, গাড়ির গতিসীমা কোনো অবস্থায়ই লঙ্ঘন করা গুরুতর অপরাধ হিসেবেই গণ্য করা হয় সে সব জায়গায়। শুধু অবাধে আইন লঙ্ঘন করতে আর বেপরোয়া গাড়ি চালাতে দেখা যায় এ দেশেই। কার স্বার্থে ঔপনিবেশিক আমলের সব আইন স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও বহাল রাখা হয়েছে? কার স্বার্থে এ দেশে পাঁচ লাখ ভুয়া অবৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে? বিআরটিএর কর্মকর্তা কী হাস্যকরভাবেই টিভিতে বললেন, না পাঁচ লাখ নয়, অবৈধ লাইসেন্সের সংখ্যা তিন লাখ হবে। ধরণি দ্বিধা হও!
অবৈধ লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ জরাজীর্ণ গাড়ি, ঘুষ, দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ কী অমানুষের মতো বেপরোয়া ও উদ্ধত আচার-আচরণটাই করে চলেছে গোটা জাতির সঙ্গে। এত লেখালেখি, এত ক্ষোভ, প্রতিবাদ, এত কান্না, হাহাকার_কিছুই তাদের গ্রাহ্যই হচ্ছে না। প্রশাসনের কোনো একটি স্তর থেকে তারা এতটুকু নড়ছে না। কী ভয়ংকর অনিরাপদ করে রেখেছে তারা জাতির অস্তিত্বকে, তাদের উদাসীনতা আর অনড় অবস্থা দিয়ে।
আজ যদি অবশেষে সংসদে আলোচনা ও বিশ্লেষণ করে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মাধ্যমে কারো মৃত্যু সংঘটনের জন্য চালকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের মতো সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান প্রণীত হয়, দেশের গাড়িচালকদের সব ভুয়া ও অবৈধ লাইসেন্স বাতিল করা হয়, প্রদত্ত সব লাইসেন্সের রিভিউ ও ঝাড়াই-বাছাই করে প্রকৃত ও দক্ষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদেরই শুধু লাইসেন্স বহাল রাখা হয়, সব জরাজীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তা থেকে চিরতরে তুলে নেওয়া হয়, কার্যকর হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর সব ব্যবস্থা চালু করা হয়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে এবং এ দেশের উৎকণ্ঠিত ও শোকদগ্ধ সব মানুষের হৃদয় কিছুটা শান্ত ও আশ্বস্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে ট্রেনে, বাসে ও লঞ্চে সাধারণ মানুষের সব দুর্ভোগ দূর করে এ দেশের যোগাযোগব্যবস্থাকে সব দিক থেকে উন্নত, আধুনিক ও স্বস্তিদায়ক করতে পারলে কষ্টার্জিত স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রকে অর্থবহ করে তোলা যাবে।
১৬.৮.২০১১
ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন সড়কে কয়েক দিন ধরে যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় ঈদের আগে মানুষ চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন। পুরো চাপটা গিয়ে পড়েছে ট্রেনের ওপর। ঢাকা-ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে ট্রেনযাত্রী উপচে পড়ছে, টিকিট আর স্থান না পেয়ে দিশেহারা মানুষ। এক নজিরবিহীন বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন স্টেশনে।
ওদিকে মানুষমাত্রই আজ ক্ষুব্ধ, বেদনাহত হয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার দৃঢ়সংকল্পের জায়গায় এসে দাঁড়াচ্ছে। দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক_সবাই এর কোনো বিকল্প দেখছেন না।
কবি জন ডান-এর ভাষায়, '...ধহু সধহ'ং ফবধঃয ফরসরহরংযবং সব, নবপধঁংব ও ধস রহাড়ষাবফ রহ সধহশরহফ. অহফ ঃযবৎবভড়ৎব হবাবৎ ংবহফ ঃড় শহড় িভড়ৎ যিড়স ঃযব নবষষ ঃড়ষষং; রঃ ঃড়ষষং ভড়ৎ ঃযবব.' অর্থাৎ 'যেকোনো মানুষের মৃত্যু আমাকে খর্ব করে, কারণ আমি মানবজাতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আর তাই কখনো জানতে যাই না, কার মৃত্যুঘণ্টা বাজছে; যারই হোক, বাজছে তোমার জন্যই।'
তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরের মৃত্যু আজ এ সমাজের প্রত্যেক মানুষের অস্বাভাবিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুই যেন অনিবার্য করে তুলেছে। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চেয়েছিলেন কলামিস্ট অনিকেত (নির্মল সেন), সে কবেকার কথা! সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল তার পরও বলতে গেলে একটি দিনের জন্যও এ দেশে থামেনি।
অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর আজ এ দেশের মানুষ বিপুল প্রত্যাশা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং ন্যায়সংগতভাবেই মানুষ তো এখন চাইতেই পারে, এতকাল যা হয়নি, অন্তত এখন এ সরকারের আমলে তো আর মানুষকে অস্বাভাবিকভাবে, অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পথেঘাটে গাড়িচাপা পড়ে মরতে হবে না। মানুষ প্রচণ্ডভাবেই আশাহত হয়েছে, সেই অতীতের ধারায়ই একইভাবে, বরং আরো সংহারী মূর্তি নিয়ে যন্ত্রদানব বাস-ট্রাক যেন রাস্তায় নেমেছে। রাজধানী ও বিভিন্ন শহরের শুধু ভেতরের রাস্তাগুলোই নয়, দেশের সব মহাসড়কই যেন মৃত্যুফাঁদ হয়ে বসেছে। কখন ও কোথায় কার মৃত্যু ঘটবে কারো জানা নেই। অতীতেও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ই সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিবাজ, সবচেয়ে বেশি লুটপাটের আখড়া ছিল, এখনো যেন তা-ই দেখা যাচ্ছে। এ যাবৎকালের সবচেয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় যশস্বী চলচ্চিত্রকার, আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত তারেক মাসুদ আর তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযাত্রী প্রতিভাবান আলোকচিত্র সাংবাদিক মিশুক মুনীর সারা দেশকে প্রচণ্ড শোকের সাগরে ভাসিয়ে অকালে মৃত্যুবরণ করলেন। তাঁদের সঙ্গে একই মাইক্রোবাসের চালক এবং তাঁদের টিমের সদস্য আরো তিনজনও প্রাণ হারালেন। আহত হলেন আরো তিনজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তারেক মাসুদের স্ত্রী ও তাঁর কাজের সাথি ক্যাথেরিন মাসুদ। আহত একজনের, শিল্পী ঢালী আল মামুনের এখন প্রাণাশঙ্কার কথা বলছেন ডাক্তাররা স্কয়ার হাসপাতালে। তাঁকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। তারেক মাসুদ তাঁর টিম নিয়ে তাঁর নতুন চলচ্চিত্র-ভাবনা 'কাগজের ফুল'-এর রূপায়ণের জন্যই লোকেশন শুটিংয়ের স্পট ঠিক করতে ঘিওরে গিয়েছিলেন। কে জানে হয়তো এটাই আমাদের দেশকে চলচ্চিত্রের নোবেল পুরস্কার_অস্কারে ভূষিত হওয়ার সম্মান এনে দিত। তারেক মাসুদের তা ছিল স্বপ্ন। এমন নিবেদিতপ্রাণ চলচ্চিত্র নির্মাতা এ দেশে আর দেখা যায়নি। নিজেকে তিনি 'সিনেমার ফেরিওয়ালা' বলতেন, নিজের নির্মিত ফিল্ম নিয়ে গ্রামগঞ্জে দেখিয়ে বেড়াতেন। তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি 'মাটির ময়না' এ দেশকে প্রথম আন্তর্জাতিক পুরস্কার, কান ফেস্টিভ্যালের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড এনে দেয়। তাঁর যেমন স্বপ্ন ছিল পূর্ণাঙ্গ অস্কার পাওয়ার, জাতিরও ছিল। এখন তা হয়তো সুদূরপরাহতই হয়ে গেল। উন্নত যেকোনো দেশে এ রকম চিত্রনির্মাতাকে রাষ্ট্র বুক দিয়ে আগলে রাখে, তাঁকে সর্বতোভাবে বিকাশের সুযোগ করে দেয়। আর এ দেশে জন্মে তারেক মাসুদ স্বদেশে শুধু অবহেলা আর বিড়ম্বনা পেতে পেতেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। এ দুঃখ আমাদের রাখার জায়গা নেই। একইভাবে শহীদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তান মিশুক মুনীর ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী ক্যামেরাম্যান। টিভি চ্যানেল এটিএন নিউজে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে যোগদান করে স্বল্পসময়েই তিনি সে চ্যানেলে যুগান্তর এনে দিয়েছিলেন। শুধু এটিএনে নয়, টিভি সাংবাদিকতারই নতুন মাত্রা ও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে দিয়ে গেছেন তিনি। দুজনই ছিলেন প্রগতিশীল ধারার মানুষ। দুজনের কথা এলেই বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের কথাই মনে পড়ে। সত্যজিৎ অস্কার এনে দিয়ে গেছেন পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতকে। আমাদের সদ্য-হারানো দুই সৃষ্টিশীল মানুষও এ দেশকে অস্কার এনে দিতে পারতেন। জাতি তা সময় থাকতে বোঝেনি। তাঁদের বিদায়ে এ দেশে সত্যজিৎ সৃষ্টির সম্ভাবনাও সুদূরপরাহত হয়ে গেল।
এই সঙ্গে উঠে আসছে সড়ক দুর্ঘটনায় হারানো এ দেশের অনেক শিল্পী-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-রাজনীতিকের কথাও। সাধারণ মানুষের মৃত্যু তো একেকটি পরিবারকে নিঃস্ব, বিপর্যস্ত করে রেখে যায়ই, অসংখ্য শিল্পী-সাহিত্যিক-রাজনীতিক-সাংবাদিকের মৃত্যু নিঃস্ব, বেদনার্ত ও বিপর্যস্ত করে রেখে যায় দেশ ও জাতিকেও। আমরা অতীতে হারিয়েছি সংবাদের বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মন্টুকে, পেপসিকোলার কাভার্ড ভ্যান রাজপথে যাঁর মাথা চূর্ণ করে দিয়ে যায়। মৃত্যুর সঙ্গে ১৩ দিন যুঝে তিনি ১৯৮৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবসে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। তাঁর সহধর্মিণী দুই সন্তানের জননী অধ্যাপিকা রওশন আক্তার দুর্মর প্রচেষ্টায় ক্ষতিপূরণ মামলা করে ২২ বছর একা একা লড়াই করে অবশেষে নিম্ন আদালতে তিন কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের রায় আদায় করেন। পরে উচ্চ আদালতে তার অঙ্ক হ্রাস করে দুই কোটি করা হয়। কিন্তু তিনি তাঁর চাকরিজীবনে অর্জিত লাখ লাখ টাকা খরচ করে দেশের প্রথম ও একমাত্র ক্ষতিপূরণ মামলা জিতেও এখন পর্যন্ত একটি পয়সাও ক্ষতিপূরণ পাননি। বিবাদীপক্ষ নিরস্ত না হয়ে আপিল করেছে। টিভি চ্যানেলে এবং এর আগে জাতীয় সংবাদপত্রগুলোয় এই বিরল দৃষ্টান্তের ওপর সচিত্র প্রতিবেদন বেরিয়েছে। তাঁর ক্ষতিপূরণ আদায়ের ওপর শুধু একটি সব-হারানো পরিবারের যন্ত্রণার অবসান নির্ভর করছে না, এ দেশে নির্বিবাদে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ হত্যার বেপরোয়া কার্যক্রমের বিরুদ্ধে এই প্রথম একটা বড় রকম প্রতিরোধ ও তাতে সফল হওয়াও নির্ভর করছে। সড়ক দুর্ঘটনায় আমরা অতীতে আরো হারিয়েছি কবি-সাংবাদিক ইউসুফ পাশাকে, হারিয়েছি চিত্রনির্মাতা আলমগীর কবিরকে, হারিয়েছি দেশের সাবেক প্রবীণ অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানকে, হারিয়েছি এই সেদিন দুজন সচিবকে, বুয়েটের ছাত্রকে, এর আগে হারিয়েছি ১৯৯৮-এ আর্ট কলেজের নবীন চিত্রশিল্পী নীলাঞ্জনকে, মেডিক্যাল ছাত্রীকে, মীরসরাইয়ে ৪৪ কিশোর শিক্ষার্থীকে এবং সমাজের অজস্র অ্যাসেটকে। ইসমত মনি নীলাঞ্জনকে তো পুলিশ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবেই দাফন করে ফেলেছে। অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের 'নিরাপদ সড়ক চাই' আন্দোলনের কথাও জাতির জানা।
কবে এ দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় সংহারপর্ব থামবে, কেউ তা বলতে পারে না। মানুষ ভাবছিল, তারেক আর মিশুকের মৃত্যুর পর পরই যদি সংসদের জরুরি অধিবেশন তলব করে এ ব্যাপারে যোগাযোগমন্ত্রী ও সংসদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হতো, তাহলেও হয়তো জনমনে একটু আশার সঞ্চার হতে পারত। যা হোক, অবশেষে আগে থেকে ডাকা সংক্ষিপ্ত সংসদ অধিবেশনও বসছে আজ। দেশ তাকিয়ে আছে অধীর আগ্রহে কী হয় তা দেখার জন্য।
আজ বিশ্বের যেকোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক দেশেই নিশ্ছিদ্র ও উন্নত, আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থা, কঠোর ট্রাফিক আইন আর আইন লঙ্ঘনকারীদের কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে। পাশের দেশ ভারতের কোনো রাজ্যেই ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করতে দেখা যায় না। গাড়ি চালানোর সময় মোবাইলে কথা বলা, বেল্ট না পরা, মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট না পরা, গাড়ির গতিসীমা কোনো অবস্থায়ই লঙ্ঘন করা গুরুতর অপরাধ হিসেবেই গণ্য করা হয় সে সব জায়গায়। শুধু অবাধে আইন লঙ্ঘন করতে আর বেপরোয়া গাড়ি চালাতে দেখা যায় এ দেশেই। কার স্বার্থে ঔপনিবেশিক আমলের সব আইন স্বাধীনতার ৪০ বছর পরও বহাল রাখা হয়েছে? কার স্বার্থে এ দেশে পাঁচ লাখ ভুয়া অবৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে? বিআরটিএর কর্মকর্তা কী হাস্যকরভাবেই টিভিতে বললেন, না পাঁচ লাখ নয়, অবৈধ লাইসেন্সের সংখ্যা তিন লাখ হবে। ধরণি দ্বিধা হও!
অবৈধ লাইসেন্স, ফিটনেসবিহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ জরাজীর্ণ গাড়ি, ঘুষ, দুর্নীতিতে আকণ্ঠ নিমজ্জিত সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ কী অমানুষের মতো বেপরোয়া ও উদ্ধত আচার-আচরণটাই করে চলেছে গোটা জাতির সঙ্গে। এত লেখালেখি, এত ক্ষোভ, প্রতিবাদ, এত কান্না, হাহাকার_কিছুই তাদের গ্রাহ্যই হচ্ছে না। প্রশাসনের কোনো একটি স্তর থেকে তারা এতটুকু নড়ছে না। কী ভয়ংকর অনিরাপদ করে রেখেছে তারা জাতির অস্তিত্বকে, তাদের উদাসীনতা আর অনড় অবস্থা দিয়ে।
আজ যদি অবশেষে সংসদে আলোচনা ও বিশ্লেষণ করে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর মাধ্যমে কারো মৃত্যু সংঘটনের জন্য চালকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের মতো সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান প্রণীত হয়, দেশের গাড়িচালকদের সব ভুয়া ও অবৈধ লাইসেন্স বাতিল করা হয়, প্রদত্ত সব লাইসেন্সের রিভিউ ও ঝাড়াই-বাছাই করে প্রকৃত ও দক্ষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদেরই শুধু লাইসেন্স বহাল রাখা হয়, সব জরাজীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তা থেকে চিরতরে তুলে নেওয়া হয়, কার্যকর হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর সব ব্যবস্থা চালু করা হয়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে এবং এ দেশের উৎকণ্ঠিত ও শোকদগ্ধ সব মানুষের হৃদয় কিছুটা শান্ত ও আশ্বস্ত হতে পারে। সেই সঙ্গে ট্রেনে, বাসে ও লঞ্চে সাধারণ মানুষের সব দুর্ভোগ দূর করে এ দেশের যোগাযোগব্যবস্থাকে সব দিক থেকে উন্নত, আধুনিক ও স্বস্তিদায়ক করতে পারলে কষ্টার্জিত স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রকে অর্থবহ করে তোলা যাবে।
১৬.৮.২০১১
No comments