পবিত্র কোরআনের আলো-কিয়ামত বা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া কারোই কোনো প্রকৃত জ্ঞান নেই
১৮৬. মান ইউদ্লি লিল্লা-হু ফালা হা-দিইয়ালাহূ; ওয়া ইয়াযারুহুম ফী ত্বুগ্ইয়া-নিহিম্ ইয়া'মাহূন।১৮৭. ইয়াছ্আলূনাকা আ'নিচ্ছা-আ'তি আইয়্যা-না মুরছা-হা; ক্বুল ইন্নামা ই'লমুহা ই'নদা রাব্বী; লা ইউজাল্লীহা লিওয়াক্কতিহা ইল্লা হুয়া; ছাক্কুলাত ফিচ্ছামা-ওয়া-তি ওয়ালআরদ্বি; লা-তা'তীকুম ইল্লা বাগ্তাহ; ইয়াছআলূনাকা কাআন্নাকা হাফিয়্যুন আ'নহা; ক্বুল ইন্নামা ই'লমুহা ই'নদাল্লা-হি ওয়ালা-কিন্না আকছারান না-ছি লাইয়া'লামূন।
১৮৮. ক্বুল লা আমলিকু লিনাফছী নাফআ'ন ওয়া লা দ্বার্রান ইল্লা মা শা-আ ল্লা-হ; ওয়া লাও কুনতা আ'লামুল গাইবা লাছতাকছারতু মিনাল খাইরি; ওয়া মা মাচ্ছানিইয়াচ্ছূউ; ইন আনা ইল্লা নাযীরুন ওয়াবাশীরুল্ লিক্বাওমিন ইউ'মিনূন।
১৮৯. হুয়াল্লাযী খালাক্বাকুম্ মিন্ নাফছিন ওয়া-হিদাতিন ওয়াজাআ'লা মিনহা যাওজাহা লিইয়াছ্কুনা ইলাইহা; ফালাম্মা তাগাশ্শা-হা হামালাত হামলান খাফীফান ফামার্রাতবিহি; ফালাম্মা আছ্ক্বালাদ্ দাআ'ওয়াল্লা-হা রাব্বাহুমা লায়িন আ-তাইতানা সা-লিহাল্ লানাকূনান্না মিনাশ্ শা-কিরীন। [সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১৮৬-১৮৯]
অনুবাদ : ১৮৬. আল্লাহ যাকে বিপথগামী করেন তাকে কেউ হেদায়াত দিতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা তো তাদেরকে তাদের বিভ্রান্তির ভেতর উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ানোর জন্য ছেড়ে দেন।
১৮৭. (হে রাসুল!) তারা আপনার কাছে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে জানতে চায়, তা কখন ঘটবে। আপনি বলে দিন, এ বিষয়টা শুধু আমার প্রভুই জানেন, এর সময় আসার আগে তিনি তা প্রকাশ করবেন না। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর জন্য সেটা হবে এক ভয়াবহ ঘটনা। এটি তোমাদের কাছে আসবে একেবারেই আকস্মিকভাবে।
তারা আপনার কাছে কিয়ামতসংক্রান্ত প্রশ্নটি এমনভাবে জিজ্ঞেস করে যেন আপনি বিষয়টি সম্পর্কে সব কিছু জানেন। তাদের বলে দিন, কিয়ামতের জ্ঞান তো কেবল আল্লাহর কাছেই রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এ কথাটাও জানে না।
১৮৮. আপনি বলুন, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর ইচ্ছা না হয় ততক্ষণ আমি নিজেরও কোনো উপকার বা অপকার করার ক্ষমতা রাখি না। আমার যদি গায়েবি বা ভবিষ্যৎ জ্ঞান থাকত, তবে তো সেটা কাজে লাগিয়ে অনেক ফায়দা হাসিল করে নিতে পারতাম এবং কোনো রকম ক্ষতিই আমাকে স্পর্শ করতে পারত না। বরং আমি তো কেবল সতর্ককারী ও সুংবাদদাতা, সেসব লোকের জন্য যারা ইমান রাখে।
১৮৯. তিনি তো সেই প্রভু, যিনি মানুষকে একটিমাত্র সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর থেকেই তার স্ত্রীকে বানিয়েছেন। যাতে সে তাঁর কাছে এসে শান্তি লাভ করতে পারে। এরপর যখন তাঁর সঙ্গে মিলিত হয় তখন সে তার গর্ভে এক হালকা বোঝা বহন করল, যা নিয়ে সে চলাফেরাও করল। এরপর যখন সে ভারী হয়ে গেল তখন উভয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানাল, (হে প্রভু!) তুমি যদি আমাদের সুস্থ সন্তান দান করো, তবে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।
ব্যাখ্যা : মক্কার কোরাইশ সম্প্রদায় এবং মদিনার ইহুদি সম্প্রদায়ের কোনো কোনো কুটিল লোক রাসুল (সা.)-কে বিব্রত করার জন্যই জিজ্ঞেস করত কিয়াতম কী এবং তা কখন ঘটবে। এ প্রশ্নের জবাবেই ১৮৭ নম্বর আয়াতটি নাজিল হয়। এই আয়াতের মর্মার্থ দ্বারা এবং অন্যান্য হাদিস দ্বারাও বোঝা যায় কিয়ামত সম্পর্কে বা মহাপ্রয়াণ সম্পর্কে রাসুল (সা.) সুনিশ্চিতভাবে বা বিশদভাবে কিছুই জানতেন না। এ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে। ১৮৮ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম_মক্কার কাফের কোরাইশরা রাসুল (সা.)-কে বলত, আপনার আল্লাহ আপনাকে বাজারদর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেন না কেন? এভাবে তো আপনি প্রচুর লাভবান হতে পারতেন। তারা বলত এভাবে তো আপনি সস্তার সময় নানা পণ্য দিনে মজুদ করে রেখে দুর্মূল্যের সময় বিক্রি করে প্রচুর লাভবান হতে পারতেন। এসব কথার জবাবে এই আয়াত নাজিল হয়।
এই আয়াতের মাধ্যমে এ কথাটা খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে গায়েব বা ভবিষ্যতের বিষয়ে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো, এমনকি রাসুল (সা.)-এর জানা থাকার কথা নয়। আল্লাহ তায়ালা ওহির মাধ্যমে তাঁকে যা জানান, তিনি কেবল তা-ই জানেন। তা ছাড়া রাসুলের ইহজাগতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য আল্লাহ ওহি নাজিল করবেন_এমন ধারণা খুবই নিম্নমানের। বিশেষ করে যারা নবী-রাসুলদের মর্যাদা দানের ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন করে এবং তাদের অলৌকিক স্তরে পেঁৗছে দেন, সেসব ভুল ধারণা নাকচ করার জন্যও এই আয়াত নাজিল করা হয়েছে। ১৮৯ নম্বর আয়াত একটি সত্তা বলতে আদম (আ.)-কে বোঝানো হয়েছে। এই আয়াতের মাধ্যমে মানব সৃষ্টির প্রাথমিক অবস্থার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
১৮৯. হুয়াল্লাযী খালাক্বাকুম্ মিন্ নাফছিন ওয়া-হিদাতিন ওয়াজাআ'লা মিনহা যাওজাহা লিইয়াছ্কুনা ইলাইহা; ফালাম্মা তাগাশ্শা-হা হামালাত হামলান খাফীফান ফামার্রাতবিহি; ফালাম্মা আছ্ক্বালাদ্ দাআ'ওয়াল্লা-হা রাব্বাহুমা লায়িন আ-তাইতানা সা-লিহাল্ লানাকূনান্না মিনাশ্ শা-কিরীন। [সুরা : আল-আ'রাফ, আয়াত : ১৮৬-১৮৯]
অনুবাদ : ১৮৬. আল্লাহ যাকে বিপথগামী করেন তাকে কেউ হেদায়াত দিতে পারে না। আল্লাহ তায়ালা তো তাদেরকে তাদের বিভ্রান্তির ভেতর উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরে বেড়ানোর জন্য ছেড়ে দেন।
১৮৭. (হে রাসুল!) তারা আপনার কাছে কিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে জানতে চায়, তা কখন ঘটবে। আপনি বলে দিন, এ বিষয়টা শুধু আমার প্রভুই জানেন, এর সময় আসার আগে তিনি তা প্রকাশ করবেন না। আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর জন্য সেটা হবে এক ভয়াবহ ঘটনা। এটি তোমাদের কাছে আসবে একেবারেই আকস্মিকভাবে।
তারা আপনার কাছে কিয়ামতসংক্রান্ত প্রশ্নটি এমনভাবে জিজ্ঞেস করে যেন আপনি বিষয়টি সম্পর্কে সব কিছু জানেন। তাদের বলে দিন, কিয়ামতের জ্ঞান তো কেবল আল্লাহর কাছেই রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এ কথাটাও জানে না।
১৮৮. আপনি বলুন, যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর ইচ্ছা না হয় ততক্ষণ আমি নিজেরও কোনো উপকার বা অপকার করার ক্ষমতা রাখি না। আমার যদি গায়েবি বা ভবিষ্যৎ জ্ঞান থাকত, তবে তো সেটা কাজে লাগিয়ে অনেক ফায়দা হাসিল করে নিতে পারতাম এবং কোনো রকম ক্ষতিই আমাকে স্পর্শ করতে পারত না। বরং আমি তো কেবল সতর্ককারী ও সুংবাদদাতা, সেসব লোকের জন্য যারা ইমান রাখে।
১৮৯. তিনি তো সেই প্রভু, যিনি মানুষকে একটিমাত্র সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাঁর থেকেই তার স্ত্রীকে বানিয়েছেন। যাতে সে তাঁর কাছে এসে শান্তি লাভ করতে পারে। এরপর যখন তাঁর সঙ্গে মিলিত হয় তখন সে তার গর্ভে এক হালকা বোঝা বহন করল, যা নিয়ে সে চলাফেরাও করল। এরপর যখন সে ভারী হয়ে গেল তখন উভয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানাল, (হে প্রভু!) তুমি যদি আমাদের সুস্থ সন্তান দান করো, তবে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।
ব্যাখ্যা : মক্কার কোরাইশ সম্প্রদায় এবং মদিনার ইহুদি সম্প্রদায়ের কোনো কোনো কুটিল লোক রাসুল (সা.)-কে বিব্রত করার জন্যই জিজ্ঞেস করত কিয়াতম কী এবং তা কখন ঘটবে। এ প্রশ্নের জবাবেই ১৮৭ নম্বর আয়াতটি নাজিল হয়। এই আয়াতের মর্মার্থ দ্বারা এবং অন্যান্য হাদিস দ্বারাও বোঝা যায় কিয়ামত সম্পর্কে বা মহাপ্রয়াণ সম্পর্কে রাসুল (সা.) সুনিশ্চিতভাবে বা বিশদভাবে কিছুই জানতেন না। এ সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান একমাত্র আল্লাহর কাছেই রয়েছে। ১৮৮ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম_মক্কার কাফের কোরাইশরা রাসুল (সা.)-কে বলত, আপনার আল্লাহ আপনাকে বাজারদর সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেন না কেন? এভাবে তো আপনি প্রচুর লাভবান হতে পারতেন। তারা বলত এভাবে তো আপনি সস্তার সময় নানা পণ্য দিনে মজুদ করে রেখে দুর্মূল্যের সময় বিক্রি করে প্রচুর লাভবান হতে পারতেন। এসব কথার জবাবে এই আয়াত নাজিল হয়।
এই আয়াতের মাধ্যমে এ কথাটা খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে গায়েব বা ভবিষ্যতের বিষয়ে জ্ঞান একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো, এমনকি রাসুল (সা.)-এর জানা থাকার কথা নয়। আল্লাহ তায়ালা ওহির মাধ্যমে তাঁকে যা জানান, তিনি কেবল তা-ই জানেন। তা ছাড়া রাসুলের ইহজাগতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য আল্লাহ ওহি নাজিল করবেন_এমন ধারণা খুবই নিম্নমানের। বিশেষ করে যারা নবী-রাসুলদের মর্যাদা দানের ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন করে এবং তাদের অলৌকিক স্তরে পেঁৗছে দেন, সেসব ভুল ধারণা নাকচ করার জন্যও এই আয়াত নাজিল করা হয়েছে। ১৮৯ নম্বর আয়াত একটি সত্তা বলতে আদম (আ.)-কে বোঝানো হয়েছে। এই আয়াতের মাধ্যমে মানব সৃষ্টির প্রাথমিক অবস্থার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments