শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের মৃত্যু-এ শোকের সান্ত্বনা নেই
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) দুই ছাত্রের মৃত্যু দেশবাসীকে হতবাক করে দিয়েছে। সকলেই একবাক্যে এ ঘটনাকে দুঃখজনক, মর্মান্তিক বলে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। অনেকেই এ ঘটনাকে আমিনবাজারে ছয় শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যুর সঙ্গে তুলনীয় বলে মনে করছেন। বিজয় দিবসের ছুটির অবকাশে শাবিপ্রবির কয়েকজন শিক্ষার্থী সিলেটের স্থানীয় খালে নৌকা ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। নৌকা ভ্রমণ শেষে ফেরার পথে
দুর্বৃত্তরা তাদের নৌকায় চড়াও হয়। সঙ্গে থাকা মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার পর তারা ছাত্রীদের হেনস্তা করার চেষ্টা করে। দুর্বৃত্তদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়ে খালে পড়ে যান দুই ছাত্র। খাল থেকে শিক্ষার্থীদের তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করার ব্যবস্থা হয়নি। পরে দুই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার হয়। শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ঘটনায় শাবিপ্রবিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়েছেন। ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে একটি তদন্ত কমিটি করেছে, তিনদিনের শোক ঘোষিত হয়েছে। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ, বিশেষ করে শিক্ষামন্ত্রী এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। দুঃখজনক ঘটনাটির পর এ তৎপরতাগুলো প্রশংসনীয়। কিন্তু একই সঙ্গে এ প্রশ্নও উঠছে, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এ ভয়াবহ অবনতি কেন ঘটল? কোন প্রেক্ষাপটে ডাকাত. দুর্র্বৃত্ত, বখাটে ও বদমাশরা বেপরোয়া হয়ে সাধারণ নাগরিকদের ওপর চড়াও হচ্ছে? কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও দুর্বৃত্তদের নির্মম হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। নাগরিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে ব্যত্যয় ঘটেছে। ফলে একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। আমরা মনে করি, সরকারের উচ্চতর পর্যায় থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা আসা উচিত। যে কোনো মূল্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটানো উচিত। নইলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি মানুষের সাধারণ চলাফেরায় বিঘ্ন শুধু ঘটাবে না_ নাগরিকদের মনে একধরনের ভীতি ও অনাস্থাও তৈরি করবে। সেটি কারও কাম্য হতে পারে না।
No comments