বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর-জনবল নিয়োগ হয়নি হতাশ এলাকাবাসী by কার্ত্তিক দাস

লোকবলের অভাবে অযত্ন আর অবহেলায় ধুঁকছে নড়াইল সদর উপজেলার নূর মোহাম্মদনগরের বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। গ্রন্থাগারিক না থাকায় ঠিকমতো বই পাচ্ছেন না পাঠকেরা। চুরি হয়ে যাচ্ছে অন্যান্য স্থাপনার অংশবিশেষ। পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ দিয়ে এ গ্রন্থাগার ও জাদুঘরটি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ও আকর্ষণীয় একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার দাবি করেছেন স্থানীয় লোকজন।


নড়াইল সদর উপজেলার চণ্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ। তাঁর নামানুসারে ২০০৮ সালে এই গ্রামের নাম রাখা হয় নূর মোহাম্মদনগর। এই গ্রামের পার্শ্ববর্তী আলীগঞ্জ (সাবেক ফেদী) গ্রামেই প্রতিষ্ঠা করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।
সম্প্রতি ওই গ্রন্থাগার ও জাদুঘরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কোনো নিরাপত্তাবেষ্টনী নেই। পরিচর্যার অভাবে মরে গেছে জাদুঘরের শোভাবর্ধনে লাগানো সারি সারি ঝাউগাছ। তা ছাড়া জাদুঘর উদ্বোধনের সময় বীরশ্রেষ্ঠর কর্মময় জীবন সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়ে পাথরে খোদাই করে লেখা শিলান্যাসটিও সংশোধন করা হয়নি।
জেলা পরিষদ নিয়োজিত নৈশপ্রহরী ইউনুস শেখ গ্রন্থাগার ও জাদুঘরটি দেখাশোনা করছেন। তিনিই নিরাপত্তার পাশাপাশি এর যাবতীয় দায়িত্ব পালন করছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, গ্রন্থাগারের জন্য অনেক টাকার বই কেনা হলেও এখানে নতুন কোনো বই নেই। নেই কম্পিউটার। গ্রন্থাগারের বৈদ্যুতিক সুইচগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় রাতের অন্ধকারে মাদকসেবীরা এর বারান্দায় আড্ডা জমায়।
গ্রন্থাগার ও জাদুঘর প্রতিষ্ঠার সময় নূর মোহাম্মদের বাড়ির আঙিনায় একটি স্মৃতিস্তম্ভও নির্মাণ করা হয়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এই স্মৃতিস্তম্ভ ও এর সামনে বসার বেঞ্চগুলোর অনেক টাইলস চুরি হয়ে গেছে। তা ছাড়া নূর মোহাম্মদের বাড়ি যাওয়ার রাস্তার একটি কালভার্ট ভেঙে গেছে। মেরামতের অভাবে ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
জানতে চাইলে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ ট্রাস্টের সদস্যসচিব ও চণ্ডীবরপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, লোকবল না থাকায় গ্রন্থাগার ও জাদুঘরটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘নূর মোহাম্মদনগর শুধু নামেই পরিবর্তন হয়েছে।’
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের স্ত্রী মোসাম্মৎ ফজিলাতুন্নেছা বলেন, ‘ইতিহাস বিকৃতির এই যুগে সরকারের প্রশংসনীয় এ উদ্যোগকে অবশ্যই স্বাগত জানাই। তবে বীরশ্রেষ্ঠদের নামে প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অবহেলায় পড়ে না থাকে, সে জন্য সরকারের সদয় দৃষ্টি কামনা করছি।’
জেলা পরিষদের একটি সূত্র জানায়, একজন গ্রন্থাগারিক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও উপযুক্ত কাউকে না পাওয়ায় এখনো পদটি শূন্য রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.