পোশাকে মুক্তিযুদ্ধের ভিনদেশি বন্ধুরা by মাহফুজ রহমান
কৃতজ্ঞতা কিংবা ভালোবাসা—মানবিক এই অনুভূতিগুলোর প্রকাশমাধ্যম পাল্টে যাচ্ছে দিনকে দিন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের ক্ষেত্রে। আমরা যদি বলি, পোশাকও এখন তরুণ প্রজন্মের ভাষা হয়ে উঠেছে; যদি বলি, পোশাকের মাধ্যমে এখন এই তরুণেরা জানিয়ে দিচ্ছেন শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার কথা—খুব কি বেশিবলা হবে? নিশ্চয়ই না। বিশেষ করে, বাংলাদেশের এই বিজয়ের মাসে এ কথা বেশ জুতসই। কেবল নিজের দেশের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশই
নয়—পোশাক, বিশেষ করে টি-শার্টের মধ্য দিয়ে তরুণ প্রজন্ম কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন ভিনদেশি বন্ধুদেরও। ১৯৭১ সালের ১ আগস্ট নিউইয়র্কের র্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের ‘দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশের’ কথা নিশ্চয়ই মনে আছে আপনার। যেখানে গান গেয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন রবিশঙ্কর, জর্জ হ্যারিসন, এরিক ক্ল্যাপটন, বব ডিলান, বিলি প্রেসটন, লিওন রাসেল, রিঙ্গো স্টার ও ক্লাউস ভোরম্যানের মতো শিল্পীরা। আর এঁদেরই ছবিওয়ালা টি-শার্ট পরছেন আজকের তরুণেরা, জানাচ্ছেন কৃতজ্ঞতা-ভালোবাসা। ফ্যাশন হাউস নিত্য উপহারের স্বত্তাধিকারী বাহার রহমান বললেন, ‘জর্জ হ্যারিসনের সমাধিতে হয়তো আমরা যেতে পারব না। আমরা হয়তো রবিশঙ্করকে গিয়ে সামনাসামনি বলতে পারব না, আমাদের শ্রদ্ধা গ্রহণ করুন! কিন্তু আমরা তো তা প্রকাশ করতে চাই। তাই আমরা টি-শার্টে তাঁদের ধারণ করে সেই শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করছি।’
এমনটাই বিশ্বাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন খান। তিনি জানান, ‘জর্জ হ্যারিসন কিংবা রবিশঙ্কর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জন্য যা করেছেন, অবশ্যই আমাদের তা মনে রাখতে হবে। কৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে আমাদের এটা অবশ্য কর্তব্য। কিন্তু তাঁদের সম্মান জানানোর উপায় কী? তাই তাঁদের ছবিওয়ালা কোনো টি-শার্ট পরলে মনে হয়, আমি তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতে পারছি।’
পোশাকে বা টি-শার্টে ভিনদেশি বন্ধুদের শ্রদ্ধা জানানোর এই প্রক্রিয়ার শুরু ঠিক কত দিন আগে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে বলা যায়, এমন প্রকাশমাধ্যমের চল জোরদার হয়েছে ঢাকার আজিজ কো-অপারেটিভসুপার মার্কেটকেন্দ্রিক ফ্যাশন হাউসগুলোর হাত ধরে। বাহার রহমান জানালেন শুরুর কথা, ‘২০০২ সালে জর্জ হ্যারিসনের একটা টি-শার্ট প্রথম বাজারে এনেছিলাম। এরপর ধীরে ধীরে অন্য সব প্রতিষ্ঠানও এঁদের নিয়ে কাজ করে আসছে।’
আজিজ মার্কেট ঢুঁ মেরে দেখা গেল, ভিনদেশি বন্ধুদের ওপর নিত্য উপহার করেছে চারটি টি-শার্ট—সেগুলোর মধ্যে আছে জর্জ হ্যারিসন, জোয়ান বায়েজ এবং দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ। এবছর একসঙ্গে এনেছে রবিশঙ্কর ও জর্জ হ্যারিসনকে। রবিশঙ্করকে নিয়ে টি-শার্ট পাওয়া গেল মেঘে। এ ছাড়া তারা মার্কা, ঐতিহ্য, স্বপ্নবাজ, আরশী, টেক্কাসহ আরও বেশ কয়েকটি ফ্যাশন হাউস ঘেঁটে পাওয়া গেল বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটনের ছবিওয়লা টি-শার্ট।
টি-শার্টের ক্যানভাসে এই ভালোবাসার প্রকাশের পেছনে ফ্যাশন হাউসগুলো যেমন প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে, তেমনই ভূমিকা আছে ডিজাইনারদের। তাঁদেরই একজন নাজিব তারেক। বিভিন্ন মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করেছেন এই শিল্পী। বললেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে ধন্যবাদ জানাই। তারা যে যেভাবে পারছে এই বিষয়গুলো তুলে ধরছে। এটা একটা ইতিবাচক বিষয়।’
আজিজ সুপার মার্কেটে কিছুদিন আগেই পাততাড়ি খুলেছে চেঞ্জ নামের নতুন আরেকটি ফ্যাশন হাউস। শুরু থেকেই অন্যান্য টি-শার্টের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ভিনদেশি বন্ধুদের নিয়ে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে বললেন এর কর্ণধার রঞ্জিত ভৌমিক, ‘এখনকার তরুণেরা অনেক সচেতন। অনেকেই এসে খোঁজ করেন রবিশঙ্করের কোনো টি-শার্ট আছে কি না। তাদের চাহিদার পাশাপাশি একটা দায়িত্ববোধ থেকে এ ধরনের প্রয়াস নিচ্ছি আমরা। তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্যও এটা একটা ভালো উপায়।’
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আক্কু চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ জাতি। আর তরুণেরা এ ব্যাপারে একধাপ এগিয়ে। তরুণেরা যে টি-শার্টের মাধ্যমে তাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, এই ব্যাপারটা আমাদের আশাবাদী করে। এতে করে আমরা যে কৃতজ্ঞ জাতি, তা প্রমাণিত হয়। আমরা যেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এসে ঘুমিয়ে পড়েছি। আজ যখন দেখি, দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশের একটা টি-শার্ট পরে ঘুরছে এক তরুণ, তখন আশায় বুক বাঁধি।’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এভাবেই বহন করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ত্রপা ইসলাম, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অবশ্যই আমাদের বহন করতে হবে। এই যে আমরা এখন পোশাকে জর্জ হ্যারিসনের একটা ছবি দেখছি, তাঁকে মনে পড়ছে। নিচে হয়তো তাঁর জন্মসালটারও উল্লেখ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এঁদের অবদানের কথাও ঠিক তখনই স্মরণ করছি আমরা। এভাবেই এই চেতনা সব সময় আমাদের ভেতরে অটুট থাকবে।’
এমনটাই বিশ্বাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন খান। তিনি জানান, ‘জর্জ হ্যারিসন কিংবা রবিশঙ্কর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের জন্য যা করেছেন, অবশ্যই আমাদের তা মনে রাখতে হবে। কৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে আমাদের এটা অবশ্য কর্তব্য। কিন্তু তাঁদের সম্মান জানানোর উপায় কী? তাই তাঁদের ছবিওয়ালা কোনো টি-শার্ট পরলে মনে হয়, আমি তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতে পারছি।’
পোশাকে বা টি-শার্টে ভিনদেশি বন্ধুদের শ্রদ্ধা জানানোর এই প্রক্রিয়ার শুরু ঠিক কত দিন আগে তা নিশ্চিত করে বলা কঠিন। তবে বলা যায়, এমন প্রকাশমাধ্যমের চল জোরদার হয়েছে ঢাকার আজিজ কো-অপারেটিভসুপার মার্কেটকেন্দ্রিক ফ্যাশন হাউসগুলোর হাত ধরে। বাহার রহমান জানালেন শুরুর কথা, ‘২০০২ সালে জর্জ হ্যারিসনের একটা টি-শার্ট প্রথম বাজারে এনেছিলাম। এরপর ধীরে ধীরে অন্য সব প্রতিষ্ঠানও এঁদের নিয়ে কাজ করে আসছে।’
আজিজ মার্কেট ঢুঁ মেরে দেখা গেল, ভিনদেশি বন্ধুদের ওপর নিত্য উপহার করেছে চারটি টি-শার্ট—সেগুলোর মধ্যে আছে জর্জ হ্যারিসন, জোয়ান বায়েজ এবং দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ। এবছর একসঙ্গে এনেছে রবিশঙ্কর ও জর্জ হ্যারিসনকে। রবিশঙ্করকে নিয়ে টি-শার্ট পাওয়া গেল মেঘে। এ ছাড়া তারা মার্কা, ঐতিহ্য, স্বপ্নবাজ, আরশী, টেক্কাসহ আরও বেশ কয়েকটি ফ্যাশন হাউস ঘেঁটে পাওয়া গেল বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটনের ছবিওয়লা টি-শার্ট।
টি-শার্টের ক্যানভাসে এই ভালোবাসার প্রকাশের পেছনে ফ্যাশন হাউসগুলো যেমন প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে, তেমনই ভূমিকা আছে ডিজাইনারদের। তাঁদেরই একজন নাজিব তারেক। বিভিন্ন মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করেছেন এই শিল্পী। বললেন, ‘তরুণ প্রজন্মকে ধন্যবাদ জানাই। তারা যে যেভাবে পারছে এই বিষয়গুলো তুলে ধরছে। এটা একটা ইতিবাচক বিষয়।’
আজিজ সুপার মার্কেটে কিছুদিন আগেই পাততাড়ি খুলেছে চেঞ্জ নামের নতুন আরেকটি ফ্যাশন হাউস। শুরু থেকেই অন্যান্য টি-শার্টের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের ভিনদেশি বন্ধুদের নিয়ে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে বললেন এর কর্ণধার রঞ্জিত ভৌমিক, ‘এখনকার তরুণেরা অনেক সচেতন। অনেকেই এসে খোঁজ করেন রবিশঙ্করের কোনো টি-শার্ট আছে কি না। তাদের চাহিদার পাশাপাশি একটা দায়িত্ববোধ থেকে এ ধরনের প্রয়াস নিচ্ছি আমরা। তরুণ প্রজন্মকে ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করে তোলার জন্যও এটা একটা ভালো উপায়।’
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আক্কু চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ জাতি। আর তরুণেরা এ ব্যাপারে একধাপ এগিয়ে। তরুণেরা যে টি-শার্টের মাধ্যমে তাদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছে, এই ব্যাপারটা আমাদের আশাবাদী করে। এতে করে আমরা যে কৃতজ্ঞ জাতি, তা প্রমাণিত হয়। আমরা যেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এসে ঘুমিয়ে পড়েছি। আজ যখন দেখি, দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশের একটা টি-শার্ট পরে ঘুরছে এক তরুণ, তখন আশায় বুক বাঁধি।’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এভাবেই বহন করার ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী ত্রপা ইসলাম, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অবশ্যই আমাদের বহন করতে হবে। এই যে আমরা এখন পোশাকে জর্জ হ্যারিসনের একটা ছবি দেখছি, তাঁকে মনে পড়ছে। নিচে হয়তো তাঁর জন্মসালটারও উল্লেখ আছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এঁদের অবদানের কথাও ঠিক তখনই স্মরণ করছি আমরা। এভাবেই এই চেতনা সব সময় আমাদের ভেতরে অটুট থাকবে।’
No comments