বিধবাদের গ্রাম

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সংগ্রামপুর গ্রামটি কয়েক দিনেই লোকমুখে নতুন নাম পেয়েছে। সংগ্রামপুর এখন ‘বিধবাদের গ্রাম’। গত মঙ্গলবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সংগ্রামপুর গ্রামে বিষাক্ত চোলাই মদ পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন কয়েক শ মানুষ। পরদিন সকালে হাসপাতালে নিতে নিতে মারা যান অনেকে। এরপর হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। গতকাল রোববার পর্যন্ত প্রায় ১৭০ জন মারা গেছেন। হাসপাতালে ভর্তি আরও প্রায় ১০০ জনের অবস্থা


আশঙ্কাজনক। নিহত ব্যক্তিদের সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশ দরিদ্র রিকশাচালক বা শ্রমিক। তাঁদের অনেকেই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আয়ের লোকটিকে হারিয়ে তাঁদের পরিবারের এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
স্বামীকে হারিয়ে দিশেহারা গৃহবধূ রোসেরানা নস্কর। ছোট ছোট চারটি সন্তান আছে তাঁর। রোসেরানা বলেন, ‘আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি। বাড়িটি ছাড়া আমাদের আর কিছুই রইল না।’
মাস খানেক আগে বিয়ে হয়েছিল ২৩ বছরের আনোয়ারা বিবির। তাঁর স্বামী ছিলেন দর্জি। চোলাই মদ পানে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। নতুন সংসার শুরু করার পর মাস না পুরতেই বিধবা হলেন আনোয়ারা। তিনি জানান, বাবার বাড়ি ফিরে যাওয়া ছাড়া এখন তাঁর সামনে আর কোনো পথ নেই।
চোলাই মদ পান করে মারা গেছেন সিরাজুল মোল্লা। তাঁর স্ত্রী মিনা বিবি পাঁচ মেয়ে নিয়ে পড়েছেন অকূলপাথারে। তাঁর এখন একটাই ভাবনা, কীভাবে তিনি এই পাঁচ মেয়েকে বড় করবেন।
ডায়মন্ড হারবার শহরে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সবচেয়ে বড় হাসপাতালটির সামনে গত শনিবারও সারি করে রাখা ছিল লাশ। হাসপাতালটির ছোট মর্গে এত লাশ রাখার জায়গা ছিল না।
আবদুল মান্নান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে মনে হচ্ছে, সব রাস্তা কবরস্থান বা শ্মশানে গিয়ে মিশেছে।’ এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.