সির্তে গাদ্দাফিপন্থীরা কোণঠাসা
গাদ্দাফির জন্মশহর সির্তে তার অনুগত সেনাদের একটি স্থানে কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে লিবিয়ার অন্তরর্বর্তী সরকারি বাহিনী। হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় রাস্তায় রাস্তায় সহিংস লড়াই চলার মধ্যেও শহর ছাড়ার জন্য বেপরোয়াভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে বেসামরিক নাগরিকরা। অন্তরর্বর্তী সরকার তথা এনটিসি’র পূর্বাঞ্চলীয় বাহিনীর একটি ইউনিটের কমান্ডার আবদুস সালাম জাভাল্লাহ জানান, ‘সাগরের কাছে দুটি আবাসিক এলাকার ২ কিলোমিটার জায়গার মধ্যে গাদ্দাফি অনুগতদের অবরুদ্ধ করে ফেলা হয়েছে, তবে তারা এখনও প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
’ ওই দুটি আবাসিক এলাকায় প্রচুর বেসামরিক লোক বসবাস করায় লড়াইয়ে এনটিসির সেনারা হালকা অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে জানান জাভাল্লাহ। জাবাল্লাহ এই কথা বলার কিছুক্ষণের মধ্যেই এনটিসি যোদ্ধাদের অবস্থানের অপর পাশের একটি বা থেকে তিনজন নারী, তিনটি ছোট শিশু ও দুজন বেসামরিক পুরুষ বের হয়ে আসে। এনটিসির যোদ্ধারা দ্রুত তাদের তল্লাশি করে একটি গাড়িতে তুলে দেয়। তারা আঙুল তুলে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে দ্রুতবেগে শহর ছেড়ে যায়। এনটিসির আরেকটি তল্লাশি চৌকিতে তিনজন নারী এক বেসামরিক পুরুষের একটি পরিবারকে থামায় এনটিসির যোদ্ধারা। তারা সির্ত ছেড়ে যাচ্ছে। তারা জানায়, লড়াইয়ের কারণে তারা শহরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল। এদের মধ্যে উম্মে ইসমাইল নামের এক নারী জানায়, অবরুদ্ধ শহরটির সব বাসিন্দাই কমবেশি আহত হচ্ছে। শহরে পানি, বিদ্যুত্ কিছু নেই। এর মধ্যে দিনেরাতে যে কোনো সময় অজ্ঞাত স্থান থেকে শহরবাসীর ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। প্রতিবেশীদের মধ্যে এমন মানুষ কমই আছে যে আঘাত পায়নি। হালকা অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে এনটিসির যোদ্ধারা জানালেও অন্তরবর্তী সরকারের ট্যাংক বহর শহরের দখলকৃত রাস্তাগুলোতে টহল দিচ্ছে। গাদ্দাফি অনুগতদের অবস্থান লক্ষ্য করে গোলাও বর্ষণ করছে। স্থানে স্থানে পিকআপের ওপর ভারী অস্ত্র সাঁজিয়ে এনটিসির যোদ্ধারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এদের ছত্রছায়ায় পদাতিক বাহিনী গাদ্দাফি অনুগতদের অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। সির্তে হামলায় অংশগ্রহণকারী এনটিসির যোদ্ধারা মূলত আশপাশের শহরগুলো থেকে এসে জড়ো হয়েছে। ত্রিপোলি দখলের সময় এনটিসি বাহিনীকে শহরবাসী যে রকম সমর্থন দিয়েছিল এখানে তা অনুপস্থিত। লড়াইয়ে ব্যাপক হারে বেসামরিক নাগরিক হতাহত হওয়ায় স্থায়ী শত্রুতার আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধরনের কিছু হলে যুদ্ধ শেষে এই বিশাল উত্তর আফ্রিকান দেশটিতে ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা অন্তরবর্তী সরকারের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।
No comments