ডিসকাউন্ট সুবিধা না থাকলে বীমা বিদেশি কম্পানিতে
পোশাক শিল্পমালিকরা আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ ডিসকাউন্টে বীমা করার সুবিধা পাচ্ছেন। সাধারণ বীমা কম্পানিগুলো বড় বড় শিল্প গ্রুপকে এ ধরনের ডিসকাউন্ট সুবিধা দিলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা শিল্পমালিকরা বীমায় মোটেই ডিসকাউন্ট পাচ্ছেন না। বড় ব্যবসায়ীদের দেওয়া 'ছাড়' মেটাতে হচ্ছে ছোট ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকায়। সম্প্রতি বীমা নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে এ ধরনের ডিসকাউন্ট দেওয়া বাতিল করেছে। তবে পোশাক শিল্পমালিকরা বলেছেন, তাঁরা এটি কোনোভাবেই মেনে নেবেন না। পোশাক শিল্পের বিদ্যমান সুবিধা প্রত্যাহার করা হলে তাঁরা বিদেশের কম্পানিতে বীমা করবেন।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) গতকাল বীমা খাত নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করে। জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ওই সেমিনারে পোশাক শিল্পমালিকরা এ কথা জানান।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, বীমা কম্পানিগুলোর মূল কাজ পরের ধনের পাহারা দেওয়া। তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারেরও কিছু ভূমিকা থাকে। সে জন্যই আইডিআরএ গঠন করা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা যাদের নিয়ন্ত্রণ করবে, উল্টো তারাই নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তখন নিজেদের স্বার্থে জনস্বার্থের পরিপন্থী স্বার্থরক্ষায় সচেষ্ট হয় তারা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যাতে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার ও সরকারের অন্যান্য সংস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয়, সে জন্যই এদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়। তবে নতুন কোনো বিধি-বিধান করার আগে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে করলে তাতে ভালো ফল আসে বলে মনে করেন তিনি।
আইডিআরএর চেয়ারম্যান শেফাক আহমেদ (একচুয়ারি) বলেন, আইডিআরএ এখন পর্যন্ত কোনো আইন করেনি। আইন করা সরকারের কাজ। আর কোনো বিধি-বিধানও এ পর্যন্ত গেজেট নোটিফিকেশন হয়নি। আর আইডিআরএ কোনো বিধান করার আগে ওয়েবসাইটে দিয়ে সবার মতামত গ্রহণ করে। তাই কারো সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফাভাবে বিধি-বিধান করছে_এমন দাবিও যৌক্তিক না। তিনি বলেন, কোনো খাতের ওপরই নতুন করে কোনো চার্জ আরোপ করা হয়নি। কোনো কোনো সেক্টর ট্যারিফ রেটে ডিসকাউন্ট সুবিধা ভোগ করত, তা বাতিল করে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে মাত্র। না হলে ছোট কম্পানির প্রিমিয়াম দ্বারা বড় গ্রুপ ভর্তুকি সুবিধা ভোগ করছে। ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট মোটেই টেকসই ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
বিদেশে ১৩ বছর ও দেশের ভেতর ১৪ বছর ধরে বীমা খাত নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আইডিআরএর চেয়ারম্যান আরো বলেন, সাধারণ বীমা কম্পানিগুলো রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পলিসি গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষাই আইডিআরএর প্রধান দায়িত্ব। পরে বীমা কম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থরক্ষাসহ সার্বিকভাবে এ খাতের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে আইডিআরএ। তিনি বলেন, দেশে ৪৪টি সাধারণ বীমা কম্পানি ও ১৮টি জীবন বীমা কম্পানি রয়েছে। জীবন বীমা কম্পানিগুলোর লাইফ ফান্ডের পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে ২০ হাজার কোটি টাকায়। এই টাকার ৯০ শতাংশের মালিক পলিসিহোল্ডাররা। কিন্তু বীমা কম্পানির পরিচালনা পর্ষদে তাঁদের কোনো প্রতিনিধি বা অংশীদারত্ব নেই। তাই আইডিআরএ তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে।
শেফাক আহমেদ বলেন, ২০১০ সালে জীবন বীমার প্রিমিয়াম ছিল পাঁচ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সেখানে ৪৪টি সাধারণ বীমা কম্পানির প্রিমিয়ামের পরিমাণ মাত্র এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার মতো। ৪৪টি কম্পানির এই পরিমাণ প্রিমিয়াম অপ্রতুল ও সন্তোষজনক নয়। সাধারণ বীমা কম্পানিগুলো ঠিকমতো প্রিমিয়াম আদায় করলে এর পরিমাণ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকায় পেঁৗছত। সাধারণ বীমা কম্পানিগুলো রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে। প্রথম প্রজন্মের পাঁচ-ছয়টি কম্পানি ছাড়া বাকিগুলোর আর্থিক অবস্থা খুবই নড়বড়ে। তাদের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আর এ কারণে দক্ষ জনবলের অভাবও আছে সেখানে। নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, একটি বীমা কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাঁকে জানান যে তিনি মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতন পান। কমিশন দিয়ে তাঁদের আর কিছুই থাকে না। আর্থিক অসক্ষমতার কারণে অনেক কম্পানি শেয়ারবাজারেও যেতে পারছে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বীমা খাত সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছিল। সেখানে আইডিআরএ জানিয়েছে, সাধারণ বীমা খাতে আর কোনো নতুন কম্পানির লাইসেন্স দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে জীবন বীমা কম্পানিগুলোর অবস্থা বেশ ভালো। সেখানে আর দুই-তিনটি কম্পানির লাইসেন্স দেওয়া যেতে পারে।
বীমা অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি নাসির আহমেদ চৌধুরী বলেন, পোশাক শিল্পের জন্য ওই সুবিধা প্রত্যাহার করা হলে তারা দেশের কম্পানিতে বীমা না করে বিদেশে বীমা করবে। এতে বীমা খাত আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বরং বিদ্যমান ট্যারিফ রেট বহাল রেখে নতুন নতুন খাতকে বীমার আওতায় আনার দাবি করেন। তিনি বলেন, 'আমরা নিজেরাই সুরক্ষিত না। অন্যকে সুরক্ষা দেব কিভাবে। ভারতে ৪০ হাজার কোটি রুপি প্রিমিয়াম হলেও সেখানে সরকারি-বেসরকারি মিলে বীমা কম্পানি মাত্র ২০টা। আমাদের দেশে আরো বীমার লাইসেন্স পেতে আরো কয়েক শ আবেদন পড়ে আছে।'
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম বলেন, আইডিআরএ যেসব বিধি জারি করেছে, তা স্থগিত করে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। না হলে আমরা ওই আইন মানব না। কোনো কিছু চাপিয়ে দিলে প্রাইভেট সেক্টর (বেসরকারি খাত) তা কখনই মেনে নেবে না।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, বীমা কম্পানিগুলোর মূল কাজ পরের ধনের পাহারা দেওয়া। তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারেরও কিছু ভূমিকা থাকে। সে জন্যই আইডিআরএ গঠন করা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা যাদের নিয়ন্ত্রণ করবে, উল্টো তারাই নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তখন নিজেদের স্বার্থে জনস্বার্থের পরিপন্থী স্বার্থরক্ষায় সচেষ্ট হয় তারা। নিয়ন্ত্রক সংস্থা যাতে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার ও সরকারের অন্যান্য সংস্থা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয়, সে জন্যই এদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়। তবে নতুন কোনো বিধি-বিধান করার আগে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে করলে তাতে ভালো ফল আসে বলে মনে করেন তিনি।
আইডিআরএর চেয়ারম্যান শেফাক আহমেদ (একচুয়ারি) বলেন, আইডিআরএ এখন পর্যন্ত কোনো আইন করেনি। আইন করা সরকারের কাজ। আর কোনো বিধি-বিধানও এ পর্যন্ত গেজেট নোটিফিকেশন হয়নি। আর আইডিআরএ কোনো বিধান করার আগে ওয়েবসাইটে দিয়ে সবার মতামত গ্রহণ করে। তাই কারো সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফাভাবে বিধি-বিধান করছে_এমন দাবিও যৌক্তিক না। তিনি বলেন, কোনো খাতের ওপরই নতুন করে কোনো চার্জ আরোপ করা হয়নি। কোনো কোনো সেক্টর ট্যারিফ রেটে ডিসকাউন্ট সুবিধা ভোগ করত, তা বাতিল করে সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে মাত্র। না হলে ছোট কম্পানির প্রিমিয়াম দ্বারা বড় গ্রুপ ভর্তুকি সুবিধা ভোগ করছে। ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট মোটেই টেকসই ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
বিদেশে ১৩ বছর ও দেশের ভেতর ১৪ বছর ধরে বীমা খাত নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন আইডিআরএর চেয়ারম্যান আরো বলেন, সাধারণ বীমা কম্পানিগুলো রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পলিসি গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষাই আইডিআরএর প্রধান দায়িত্ব। পরে বীমা কম্পানিগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থরক্ষাসহ সার্বিকভাবে এ খাতের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছে আইডিআরএ। তিনি বলেন, দেশে ৪৪টি সাধারণ বীমা কম্পানি ও ১৮টি জীবন বীমা কম্পানি রয়েছে। জীবন বীমা কম্পানিগুলোর লাইফ ফান্ডের পরিমাণ প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। ২০১৩ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে ২০ হাজার কোটি টাকায়। এই টাকার ৯০ শতাংশের মালিক পলিসিহোল্ডাররা। কিন্তু বীমা কম্পানির পরিচালনা পর্ষদে তাঁদের কোনো প্রতিনিধি বা অংশীদারত্ব নেই। তাই আইডিআরএ তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে।
শেফাক আহমেদ বলেন, ২০১০ সালে জীবন বীমার প্রিমিয়াম ছিল পাঁচ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। সেখানে ৪৪টি সাধারণ বীমা কম্পানির প্রিমিয়ামের পরিমাণ মাত্র এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার মতো। ৪৪টি কম্পানির এই পরিমাণ প্রিমিয়াম অপ্রতুল ও সন্তোষজনক নয়। সাধারণ বীমা কম্পানিগুলো ঠিকমতো প্রিমিয়াম আদায় করলে এর পরিমাণ তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকায় পেঁৗছত। সাধারণ বীমা কম্পানিগুলো রুগ্ণ হয়ে যাচ্ছে। প্রথম প্রজন্মের পাঁচ-ছয়টি কম্পানি ছাড়া বাকিগুলোর আর্থিক অবস্থা খুবই নড়বড়ে। তাদের অবস্থা নুন আনতে পান্তা ফুরায়। আর এ কারণে দক্ষ জনবলের অভাবও আছে সেখানে। নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, একটি বীমা কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাঁকে জানান যে তিনি মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতন পান। কমিশন দিয়ে তাঁদের আর কিছুই থাকে না। আর্থিক অসক্ষমতার কারণে অনেক কম্পানি শেয়ারবাজারেও যেতে পারছে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বীমা খাত সম্পর্কে অর্থ মন্ত্রণালয় একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন চেয়েছিল। সেখানে আইডিআরএ জানিয়েছে, সাধারণ বীমা খাতে আর কোনো নতুন কম্পানির লাইসেন্স দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে জীবন বীমা কম্পানিগুলোর অবস্থা বেশ ভালো। সেখানে আর দুই-তিনটি কম্পানির লাইসেন্স দেওয়া যেতে পারে।
বীমা অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি নাসির আহমেদ চৌধুরী বলেন, পোশাক শিল্পের জন্য ওই সুবিধা প্রত্যাহার করা হলে তারা দেশের কম্পানিতে বীমা না করে বিদেশে বীমা করবে। এতে বীমা খাত আরো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বরং বিদ্যমান ট্যারিফ রেট বহাল রেখে নতুন নতুন খাতকে বীমার আওতায় আনার দাবি করেন। তিনি বলেন, 'আমরা নিজেরাই সুরক্ষিত না। অন্যকে সুরক্ষা দেব কিভাবে। ভারতে ৪০ হাজার কোটি রুপি প্রিমিয়াম হলেও সেখানে সরকারি-বেসরকারি মিলে বীমা কম্পানি মাত্র ২০টা। আমাদের দেশে আরো বীমার লাইসেন্স পেতে আরো কয়েক শ আবেদন পড়ে আছে।'
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি আসিফ ইব্রাহীম বলেন, আইডিআরএ যেসব বিধি জারি করেছে, তা স্থগিত করে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। না হলে আমরা ওই আইন মানব না। কোনো কিছু চাপিয়ে দিলে প্রাইভেট সেক্টর (বেসরকারি খাত) তা কখনই মেনে নেবে না।
No comments