আইসক্রিমের কাঠিতেও বিষ! আক্রান্তের ঝুঁকিতে কিডনি-লিভার, হৃদযন্ত্র
গরম
যতই বাড়ছে, আইসক্রিম খাওয়ার প্রতি ততই বেশি ঝুঁকছে নারী-পুরুষ ও শিশুরা।
এদের অনেকেই জানেন না বিষাক্ত রঙ-ঘনচিনিসহ অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে
আইসক্রিম। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
গরমে দেখা যায় দোকান ও রাস্তা থেকে আইসক্রিম কিনে খাচ্ছে অবুঝ শিশু ও নারী পুরুষ। বাবারাও শিশুকে কিনে খাওয়াচ্ছেন আইসক্রিম। এই আইসক্রিমের সঙ্গে আরও একটি মারাত্মক বিষ শিশুদের মুখে তুলে দেয়া হচ্ছে। সেটা হচ্ছে আইসক্রিমের কাঠি।
এ কাঠি আইসক্রিমের সঙ্গে শিশুরা জিহ্বা দিয়ে চুষতে দেখা যায়। আইসক্রিম শেষ হওয়ার পরও চিনির মিষ্টতা যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ চুষতে থাকে কাঠিটি। কিন্তু শিশুরা তো দূরের কথা সচেতন অভিভাবক মহলের অনেকে জানেন না, এতেও মারাত্মক বিষ রয়েছে।
আর এই কথাটি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বন গবেষণা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, বনের ভেতর প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা পিটুলিগাছের কাঠি দিয়ে এক সময় আইসক্রিম তৈরি করা হতো। এই গাছ ভূমিক্ষয়রোধে সহায়ক। সেই সাথে এই গাছ ওষুধি গাছের শ্রেণিভুক্ত। কিন্তু প্রাকৃতিক বন উজাড় হওয়ার পাশাপাশি এই পিটুলিগাছও বিলুপ্তির পথে। তবে খুলনা ও সুন্দরবন অঞ্চলের প্রাকৃতিক বনভূমিতে এই গাছ এখনো পাওয়া যায়। যেখান থেকে কাঠুরিয়ারা কেটে ওই অঞ্চলের আইসক্রিম কারখানাগুলোতে সরবরাহ করে। কিন্তু চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে এই গাছ এখন পাওয়া যায় না। আর আইসক্রিম তো তৈরি হচ্ছেই। তাহলে আইসক্রিমের ওই কাঠিটি- কী গাছের প্রশ্ন করেন আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে আইসক্রিমের ওই কাঠি বানানো হচ্ছে সংরক্ষিত বনের বিষাক্ত গামারি, গর্জন, আকাশমনি, চাপালিশ, মেহগনিসহ নানা রকম গাছের উচ্ছিষ্ট বা ছাঁটা অংশ থেকে। যেসব গাছের বিষাক্ত রস-কষ মানুষের পেটে গেলে নানা রোগ যেমন লিভার, কিডনি ও হৃৎপিণ্ড আক্রান্ত হতে পারে। আর শিশু স্বাস্থ্যের জন্য এই কাঠি হতে পারে মারাত্মক প্রাণহানিকর।
তিনি বলেন, গামারি, গর্জন, মেহগনি, আকাশমনিসহ এসব বনজগাছ ঘরের আসবাব তৈরির উপযোগী। এসব গাছ বিষাক্ত বলে সহজে ঘুণে ধরে না। পোকায় খায় না। যেসব গাছ বিষাক্ত নয় সেসব গাছ ঘুণে ও পোকায় খায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন আইসক্রিম তৈরির কারখানা এমনিতেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তার উপর বিভিন্ন প্রকার কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক ব্যবহার করে আইসক্রিম তৈরি করা হয়। যা খেয়ে নিত্য পেটের পীড়ায় ভুগে শিশুরা। তন্মধ্যে আইসক্রিম তৈরির বিষাক্ত কাঠি সংগ্রহ করে তারা নগর ও জেলার বিভিন্ন করাত কল থেকে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা বলির হাটে অবস্থিত এমন একাধিক করাতকলে তৈরি হয় আইসক্রিম তৈরির কাঠি। মোহরা স’মিল নামক কারখানার ম্যানেজার জসিম উদ্দিন আইসক্রিম তৈরির কাঠি তৈরির কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, বাজারে কাঠের মূল্য অনেক বেশি। তাই ঘরের আসবাবপত্র (ফার্নিচার) তৈরি করে অপ্রয়োজনীয় কাঠ থেকে আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করা হয়। প্রতিহাজার কাঠি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রয় করেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আইসক্রিমের কাঠি ছোট, তাই নরম কাঠ দিয়ে এ কাঠি হয় না। ফার্নিচার তৈরির কাঠ গামারি, গর্জন, আকাশমনি, সেগুন, মেহগনি, চাপালিশ থেকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার বনজ গাছের উচ্ছিষ্ট বা ছাঁটা অংশ দিয়ে আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করা হয়। তবে এসব গাছ বিষাক্ত কি না তিনি তা জানেন না বলে জানান।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে এ রকম বহু স’মিল বা করাতকল রয়েছে যেখানে আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করে বিক্রি করা হয়। কিন্তু এসব কাঠিতে বিষের ব্যাপারে কোনো সময় শুনিনি। কেউ কোনো সময় বলেনি।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম স্টারল্যাবের লিভার বিশেষজ্ঞ সেলিম সরোয়ার বলেন, পিটুলিগাছ নামক এক ধরনের গাছ থেকে আইসক্রিম তৈরির কাঠি তৈরির কথা জানতাম। তবে বিভিন্ন বনজগাছ থেকে যে কাঠি তৈরি করে আইসক্রিম তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক। কারণ এসব গাছ বিষাক্ত হতেই পারে।
তিনি বলেন, ঔষধী গাছ যেমন আছে, তেমনি বিষও তৈরি হয় গাছপালা থেকে। বিজ্ঞানের আলোকে তৈরি ওষুধের মূল নির্যাসই হচ্ছে গাছপালা। আর এই ওষুধ হচ্ছে বিষে বিষক্ষয়। তবে বিষয়টি বন গবেষকরাই নিশ্চিত করে বলতে পারবেন।
গরমে দেখা যায় দোকান ও রাস্তা থেকে আইসক্রিম কিনে খাচ্ছে অবুঝ শিশু ও নারী পুরুষ। বাবারাও শিশুকে কিনে খাওয়াচ্ছেন আইসক্রিম। এই আইসক্রিমের সঙ্গে আরও একটি মারাত্মক বিষ শিশুদের মুখে তুলে দেয়া হচ্ছে। সেটা হচ্ছে আইসক্রিমের কাঠি।
এ কাঠি আইসক্রিমের সঙ্গে শিশুরা জিহ্বা দিয়ে চুষতে দেখা যায়। আইসক্রিম শেষ হওয়ার পরও চিনির মিষ্টতা যতক্ষণ থাকে ততক্ষণ চুষতে থাকে কাঠিটি। কিন্তু শিশুরা তো দূরের কথা সচেতন অভিভাবক মহলের অনেকে জানেন না, এতেও মারাত্মক বিষ রয়েছে।
আর এই কথাটি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের বন গবেষণা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, বনের ভেতর প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে উঠা পিটুলিগাছের কাঠি দিয়ে এক সময় আইসক্রিম তৈরি করা হতো। এই গাছ ভূমিক্ষয়রোধে সহায়ক। সেই সাথে এই গাছ ওষুধি গাছের শ্রেণিভুক্ত। কিন্তু প্রাকৃতিক বন উজাড় হওয়ার পাশাপাশি এই পিটুলিগাছও বিলুপ্তির পথে। তবে খুলনা ও সুন্দরবন অঞ্চলের প্রাকৃতিক বনভূমিতে এই গাছ এখনো পাওয়া যায়। যেখান থেকে কাঠুরিয়ারা কেটে ওই অঞ্চলের আইসক্রিম কারখানাগুলোতে সরবরাহ করে। কিন্তু চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে এই গাছ এখন পাওয়া যায় না। আর আইসক্রিম তো তৈরি হচ্ছেই। তাহলে আইসক্রিমের ওই কাঠিটি- কী গাছের প্রশ্ন করেন আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে আইসক্রিমের ওই কাঠি বানানো হচ্ছে সংরক্ষিত বনের বিষাক্ত গামারি, গর্জন, আকাশমনি, চাপালিশ, মেহগনিসহ নানা রকম গাছের উচ্ছিষ্ট বা ছাঁটা অংশ থেকে। যেসব গাছের বিষাক্ত রস-কষ মানুষের পেটে গেলে নানা রোগ যেমন লিভার, কিডনি ও হৃৎপিণ্ড আক্রান্ত হতে পারে। আর শিশু স্বাস্থ্যের জন্য এই কাঠি হতে পারে মারাত্মক প্রাণহানিকর।
তিনি বলেন, গামারি, গর্জন, মেহগনি, আকাশমনিসহ এসব বনজগাছ ঘরের আসবাব তৈরির উপযোগী। এসব গাছ বিষাক্ত বলে সহজে ঘুণে ধরে না। পোকায় খায় না। যেসব গাছ বিষাক্ত নয় সেসব গাছ ঘুণে ও পোকায় খায়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন আইসক্রিম তৈরির কারখানা এমনিতেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তার উপর বিভিন্ন প্রকার কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক ব্যবহার করে আইসক্রিম তৈরি করা হয়। যা খেয়ে নিত্য পেটের পীড়ায় ভুগে শিশুরা। তন্মধ্যে আইসক্রিম তৈরির বিষাক্ত কাঠি সংগ্রহ করে তারা নগর ও জেলার বিভিন্ন করাত কল থেকে।
চট্টগ্রাম মহানগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা বলির হাটে অবস্থিত এমন একাধিক করাতকলে তৈরি হয় আইসক্রিম তৈরির কাঠি। মোহরা স’মিল নামক কারখানার ম্যানেজার জসিম উদ্দিন আইসক্রিম তৈরির কাঠি তৈরির কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, বাজারে কাঠের মূল্য অনেক বেশি। তাই ঘরের আসবাবপত্র (ফার্নিচার) তৈরি করে অপ্রয়োজনীয় কাঠ থেকে আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করা হয়। প্রতিহাজার কাঠি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রয় করেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, আইসক্রিমের কাঠি ছোট, তাই নরম কাঠ দিয়ে এ কাঠি হয় না। ফার্নিচার তৈরির কাঠ গামারি, গর্জন, আকাশমনি, সেগুন, মেহগনি, চাপালিশ থেকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার বনজ গাছের উচ্ছিষ্ট বা ছাঁটা অংশ দিয়ে আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করা হয়। তবে এসব গাছ বিষাক্ত কি না তিনি তা জানেন না বলে জানান।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে এ রকম বহু স’মিল বা করাতকল রয়েছে যেখানে আইসক্রিমের কাঠি তৈরি করে বিক্রি করা হয়। কিন্তু এসব কাঠিতে বিষের ব্যাপারে কোনো সময় শুনিনি। কেউ কোনো সময় বলেনি।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম স্টারল্যাবের লিভার বিশেষজ্ঞ সেলিম সরোয়ার বলেন, পিটুলিগাছ নামক এক ধরনের গাছ থেকে আইসক্রিম তৈরির কাঠি তৈরির কথা জানতাম। তবে বিভিন্ন বনজগাছ থেকে যে কাঠি তৈরি করে আইসক্রিম তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক। কারণ এসব গাছ বিষাক্ত হতেই পারে।
তিনি বলেন, ঔষধী গাছ যেমন আছে, তেমনি বিষও তৈরি হয় গাছপালা থেকে। বিজ্ঞানের আলোকে তৈরি ওষুধের মূল নির্যাসই হচ্ছে গাছপালা। আর এই ওষুধ হচ্ছে বিষে বিষক্ষয়। তবে বিষয়টি বন গবেষকরাই নিশ্চিত করে বলতে পারবেন।
No comments