৫৪ বছর নিভৃতপল্লীতে সেবা দিচ্ছেন বৃটিশ নাগরিক রোজ by আকতারুজ্জামান
চার
যুগেরও বেশি সময় ধরে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর হাসপাতালে
নার্সিং সেবা দিচ্ছেন জুলিয়ান এম রোজ নামের এক বৃটিশ নাগরিক। এদেশের
মানুষের সঙ্গে গড়ে উঠেছে আত্মার সখ্য। আজীবন কুমারী এই নার্স হাসপাতালের
রোগী ও প্রশিক্ষণার্থীদের সঙ্গে মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ। বাকি জীবন বাংলাদেশের
মানুষের সেবা করে কাটিয়ে দেয়ার আশা করেন। এত বছর এদেশে বসবাস করে সাধারণ
মানুষকে সেবা দিয়েও পাননি নাগরিকত্ব। ৫ বছর পর পর ভিসার মেয়াদ বাড়াতে পড়তে
হয় বিভিন্ন জটিলতায়। তাই দ্বৈত নাগরিকত্ব নেয়ার আগ্রহ রয়েছে জুলিয়ান এম
রোজের।
১৯৬৪ সালে খিষ্ট্রান ধর্ম প্রচারে বাংলাদেশে আসেন। পরে পেশা বদল করে ১৯৮১ সালে নার্স হিসেবে মুজিবনগরের নিভৃত পল্লী বল্লভপুর হাসপাতালে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে মায়ের সেবার করার লক্ষ্যে দেশে ফিরে গেলেও ১৯৯৬ সালে আবারো ফিরে আসেন মেহেরপুরে। চার্চ অব বাংলাদেশ পরিচালিত হাসপাতালে তখন থেকে অদ্যাবধি নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে রোজের একপ্রকার সখ্য গড়ে উঠেছে। ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এলাকার মানুষের হৃদয়ে এক অন্য রকম জায়গা করে নিয়েছেন। ব্রিটিশ সরকারের পেনশনে চলে রোজের এক সদস্য বিশিষ্ট সংসার। হাসপাতাল থেকে কোনো বেতন নেন না। অপরদিকে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও নিজের থেকে কিছু অর্থ দিয়ে হাসপাতালের দরিদ্র রোগীদের সেবা দেন তিনি। ভিনদেশি এই মহীয়সী নারীর মমত্বগাঁথা চিকিৎসা সেবায় অভিভূত এলাকাবাসী। জীবনের বাকি সময় এদেশের মানুষের সঙ্গেই কাটানোর আগ্রহ প্রকাশ করলেন জুলিয়ান এম রোজ। অন্য দেশের নাগরিক হয়েও এ দেশের মানুষকে পরম মমতা ও যত্নে সেবা দিয়ে মন কেড়েছেন তিনি। সবার কাছে প্রিয়মুখ এখন নিভৃতচারী রোজ। চলনে-বলনে বাঙালিয়ানা লুসির একটিই চাওয়া বাংলার মাটিতে শেষ বিদায়। বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারায় বেশ খুশি তিনি। যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এভাবে মানুষকে সেবা দিয়ে যাবেন। এদিকে তিনি নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলেন একটি বৃদ্ধাশ্রম।
জুলিয়ান এম রোজ বলেন, সেবাই হচ্ছে পরম ধর্ম। সেবার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরকে পাওয়া যায়। সরকার যদি আমাকে দ্বৈত নাগরিকত্ব দেয়, তাহলে আমার সম্মান বাড়বে। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন এভাবে সেবা দিয়ে যাবো। সেবা দিতে আমার ভালো লাগে। পৃথিবীতে এসেছি সেবা দিতে। বৃদ্ধাদের জন্য কেউ কিছু করে না। তাই আমি নিজে একটি বৃদ্ধাশ্রম খুলেছি।
তারা যেন ভালোভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি যখন ১৯৬৪ সালে এই দেশে আসি। তখন পূর্ব পাকিস্তান ছিল। পরে আমি মালয়েশিয়ায় চলে যাই। সেখান থেকে আবারো ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের খুলনা জেলায় সেবা দেওয়ার জন্য চলে আসি। খুলনায় বেশ কয়েক বছর বিহারি ক্যাম্পসহ গ্রমাঞ্চলে সেবা দিয়ে ১৯৮১ সালে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর মিশন হাসপাতালে যোগদান করি। স্থানীয় ইউপি সদস্য সংকর বিশ্বাস বলেন, বল্লভপুর হাসপাতালে নিজের প্রচেষ্টায় স্থাপন করেছেন স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিট। ফলে বিভিন্ন এলাকার শিশুরা কম খরচে এখানে সেবা পাচ্ছে। অপরদিকে রোজের তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে একটি বৃদ্ধাশ্রম। সেখানে বসবাসকারী বৃদ্ধদের দেখাশোনাও করেন রোজ।
হাসপাতালের সঙ্গে নার্সিং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মধ্য দিয়ে এলাকার দরিদ্র মেয়েদের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন অনেক অসহায় পরিবারের মেয়েরা। জুলিয়ান রোজ একটি আদর্শ। তার মতো করেই সেবা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন নার্সিং প্রশিক্ষণের ছাত্রীরা।
নার্সিং ছাত্রী মেরি মন্ডল ও শিলা বলেন, আমাদের মায়ের মমতা দিয়েই কাজ শেখান তিনি। তার মতোই জীবন গড়তে চাই আমরা।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী বরিশালের রবি সমাদ্দর ও চুয়াডাঙ্গার সুকেশ মন্ডল বলেন, এখানে চিকিৎসার পাশাপাশি তিন বেলা খবার পাই। রোজের হাতের ছোঁয়ায় আমাদের রোগ সেরে যায়। যত দিন বেঁচে থাকবো এখানেই থাকব।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা আক্তারের মতে একজন সেবিকাকে এদেশে রাখার চেষ্টা করব। তাঁর সম্মানে নাগরিকত্বের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
১৯৬৪ সালে খিষ্ট্রান ধর্ম প্রচারে বাংলাদেশে আসেন। পরে পেশা বদল করে ১৯৮১ সালে নার্স হিসেবে মুজিবনগরের নিভৃত পল্লী বল্লভপুর হাসপাতালে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে মায়ের সেবার করার লক্ষ্যে দেশে ফিরে গেলেও ১৯৯৬ সালে আবারো ফিরে আসেন মেহেরপুরে। চার্চ অব বাংলাদেশ পরিচালিত হাসপাতালে তখন থেকে অদ্যাবধি নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে রোজের একপ্রকার সখ্য গড়ে উঠেছে। ২৪ ঘণ্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এলাকার মানুষের হৃদয়ে এক অন্য রকম জায়গা করে নিয়েছেন। ব্রিটিশ সরকারের পেনশনে চলে রোজের এক সদস্য বিশিষ্ট সংসার। হাসপাতাল থেকে কোনো বেতন নেন না। অপরদিকে বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও নিজের থেকে কিছু অর্থ দিয়ে হাসপাতালের দরিদ্র রোগীদের সেবা দেন তিনি। ভিনদেশি এই মহীয়সী নারীর মমত্বগাঁথা চিকিৎসা সেবায় অভিভূত এলাকাবাসী। জীবনের বাকি সময় এদেশের মানুষের সঙ্গেই কাটানোর আগ্রহ প্রকাশ করলেন জুলিয়ান এম রোজ। অন্য দেশের নাগরিক হয়েও এ দেশের মানুষকে পরম মমতা ও যত্নে সেবা দিয়ে মন কেড়েছেন তিনি। সবার কাছে প্রিয়মুখ এখন নিভৃতচারী রোজ। চলনে-বলনে বাঙালিয়ানা লুসির একটিই চাওয়া বাংলার মাটিতে শেষ বিদায়। বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারায় বেশ খুশি তিনি। যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এভাবে মানুষকে সেবা দিয়ে যাবেন। এদিকে তিনি নিজ উদ্যোগে গড়ে তোলেন একটি বৃদ্ধাশ্রম।
জুলিয়ান এম রোজ বলেন, সেবাই হচ্ছে পরম ধর্ম। সেবার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরকে পাওয়া যায়। সরকার যদি আমাকে দ্বৈত নাগরিকত্ব দেয়, তাহলে আমার সম্মান বাড়বে। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন এভাবে সেবা দিয়ে যাবো। সেবা দিতে আমার ভালো লাগে। পৃথিবীতে এসেছি সেবা দিতে। বৃদ্ধাদের জন্য কেউ কিছু করে না। তাই আমি নিজে একটি বৃদ্ধাশ্রম খুলেছি।
তারা যেন ভালোভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি যখন ১৯৬৪ সালে এই দেশে আসি। তখন পূর্ব পাকিস্তান ছিল। পরে আমি মালয়েশিয়ায় চলে যাই। সেখান থেকে আবারো ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের খুলনা জেলায় সেবা দেওয়ার জন্য চলে আসি। খুলনায় বেশ কয়েক বছর বিহারি ক্যাম্পসহ গ্রমাঞ্চলে সেবা দিয়ে ১৯৮১ সালে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর মিশন হাসপাতালে যোগদান করি। স্থানীয় ইউপি সদস্য সংকর বিশ্বাস বলেন, বল্লভপুর হাসপাতালে নিজের প্রচেষ্টায় স্থাপন করেছেন স্পেশাল বেবি কেয়ার ইউনিট। ফলে বিভিন্ন এলাকার শিশুরা কম খরচে এখানে সেবা পাচ্ছে। অপরদিকে রোজের তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে একটি বৃদ্ধাশ্রম। সেখানে বসবাসকারী বৃদ্ধদের দেখাশোনাও করেন রোজ।
হাসপাতালের সঙ্গে নার্সিং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মধ্য দিয়ে এলাকার দরিদ্র মেয়েদের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন অনেক অসহায় পরিবারের মেয়েরা। জুলিয়ান রোজ একটি আদর্শ। তার মতো করেই সেবা দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন নার্সিং প্রশিক্ষণের ছাত্রীরা।
নার্সিং ছাত্রী মেরি মন্ডল ও শিলা বলেন, আমাদের মায়ের মমতা দিয়েই কাজ শেখান তিনি। তার মতোই জীবন গড়তে চাই আমরা।
হাসপাতালে ভর্তি রোগী বরিশালের রবি সমাদ্দর ও চুয়াডাঙ্গার সুকেশ মন্ডল বলেন, এখানে চিকিৎসার পাশাপাশি তিন বেলা খবার পাই। রোজের হাতের ছোঁয়ায় আমাদের রোগ সেরে যায়। যত দিন বেঁচে থাকবো এখানেই থাকব।
মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদা আক্তারের মতে একজন সেবিকাকে এদেশে রাখার চেষ্টা করব। তাঁর সম্মানে নাগরিকত্বের বিষয়টি বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।
No comments