১৭ অধিবেশনে মাত্র পাঁচটিতে যোগ দিয়েছে বিএনপি by হারুন আল রশীদ
বর্তমান নবম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হতে
চলছে। ইতিমধ্যে ১৭টি অধিবেশন শেষ হয়ে গেছে। বিরোধীদলীয় জোট যোগ দিয়েছে
মাত্র পাঁচটি অধিবেশনে।
ইতিমধ্যে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি
সংসদ বর্জনের ক্ষেত্রে অতীতের সব পরিসংখ্যান ভেঙে ফেলেছে। বর্তমান সংসদে
এখন পর্যন্ত ৩৭০ কার্যদিবসের মধ্যে ৩১৬ কার্যদিবসই তারা সংসদের বাইরে
থেকেছে। এর আগে পঞ্চম সংসদে ৪০০ কার্যদিবসের মধ্যে বিরোধী দল আওয়ামী লীগ
বর্জন করেছিল ১৩৫ কার্যদিবস। সপ্তম সংসদে ৪০০ কার্যদিবসের মধ্যে বিরোধী দল
বিএনপি বর্জন করেছিল ১৬৩ কার্যদিবস। অষ্টম সংসদে ৩৭৩ কার্যদিবসের মধ্যে
বিরোধী দল আওয়ামী লীগ বর্জন করেছিল ২২৩ দিন।
সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনো সাংসদ অনুমতি না নিয়ে টানা ৯০ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। এই সমীকরণ মাথায় রেখেই বিএনপি নবম সংসদের পাঁচটি অধিবেশনে যোগ দিয়েছে এবং সদস্যপদ রক্ষার জন্য চলতি অধিবেশনেও সংসদে ফিরছে।
এ বিষয়ে সংসদবিষয়ক গবেষক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি ও বিরোধী দল—কেউই সংসদকে জবাবদিহির জায়গা হিসেবে দেখতে চায় না। সরকারি দল কখনোই আন্তরিকভাবে চায়নি বিরোধী দল সংসদে থাকুক। আর বিরোধী দলকে জনগণ যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা তারা পালন করেনি। সংসদে থাকলে তারা নিজেদের ও দেশের মানুষের জন্য কিছু কথা বলতে পারত।
সংসদ বর্জন করে তারা সেই সুযোগ নষ্ট করেছে। অথচ বেতনভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি নেওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু এক পয়সাও ছাড় দিচ্ছে না।
নবম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি। বিরোধী দল ওই দিন সংসদে যোগ দিয়ে পরদিন থেকে বর্জন শুরু করে। প্রায় এক মাস পর তারা ২৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে ফেরে। এরপর অধিবেশনের শেষ দিন ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তারা সংসদে অবস্থান করে।
এরপর টানা ৬৩ দিন অনুপস্থিত থাকার পর ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি (চতুর্থ অধিবেশন) বিএনপি সংসদে ফেরে। দলীয়ভাবে ৬৩ দিন অনুপস্থিত থাকলেও কোনো কোনো সদস্যের অনুপস্থিতি ৮০ দিনের বেশি হওয়ায় তাঁরা মাঝে সংসদে যোগ দেন। চতুর্থ অধিবেশনে বিএনপি অনিয়মিত হলেও ৪ এপ্রিল (২০১০) সংসদ ছেড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মোট ২১ কার্যদিবস সংসদে উপস্থিত ছিল। এরপর একই বছরের বাজেট অধিবেশনে একদিনের (২ জুন) জন্য যোগ দিয়ে বাজেট উপস্থাপনের আগেই সংসদ ছেড়ে যায়।
টানা ৭৪ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর ২০১১ সালের ১৫ মার্চ বিএনপি সংসদে ফেরে। সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দলীয়ভাবে ৭৪ দিন অনুপস্থিত হলেও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি ৯০ দিন পূর্ণ হওয়ার ১৬ দিন আগেই বিএনপিকে সংসদে যেতে হয়েছে।
এরপর বিএনপি ৭৮ কার্যদিবস শেষে সংসদে ফেরে ২০১২ সালের ১৮ মার্চ। দলীয়ভাবে ৭৮ কার্যদিবস হলেও খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি ৮৪ কার্যদিবস হয়ে যাওয়ার আগেই তাদের সংসদে ফিরতে হয়েছে। ২০ মার্চ অধিবেশনের শেষ দিন পর্যন্ত তারা সংসদে কাটায়। সে দিন বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া মোট এক ঘণ্টা ৫৩ মিনিট বক্তব্য দেন, যা সংসদের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংসদে বিএনপির অনুপস্থিতি ৮৩ কার্যদিবস। সদস্যপদ রক্ষা করতে হলে এই অধিবেশনেই তাদের যোগ দিতে হবে।
সংসদ সচিবালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পঞ্চম সংসদের মোট ৪০০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া কত দিন সংসদে ছিলেন, তার তথ্য নেই। কারণ, খালেদা জিয়া হাজিরা বইতে সই করেননি। আর বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন ১৩৫ দিন।
সপ্তম সংসদে ৩৮২ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন ২৯৮ দিন। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২৮ দিন।
অষ্টম সংসদে ৩৭৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন ১৯৫ দিন। বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন মাত্র ৪৫ দিন।
নবম সংসদে এখন পর্যন্ত ৩৭০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন ২৯৮ দিন। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন মাত্র আট দিন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কখনো চাইনি, সংসদ অকার্যকর হোক। কিন্তু সরকার চায়নি আমরা সংসদে থাকি। সেই পরিবেশ তারা তৈরি করেছে। সে জন্যই আমরা সংসদ বর্জন করেছি।’
সংবিধানের ৬৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, কোনো সাংসদ অনুমতি না নিয়ে টানা ৯০ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হয়ে যাবে। এই সমীকরণ মাথায় রেখেই বিএনপি নবম সংসদের পাঁচটি অধিবেশনে যোগ দিয়েছে এবং সদস্যপদ রক্ষার জন্য চলতি অধিবেশনেও সংসদে ফিরছে।
এ বিষয়ে সংসদবিষয়ক গবেষক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি ও বিরোধী দল—কেউই সংসদকে জবাবদিহির জায়গা হিসেবে দেখতে চায় না। সরকারি দল কখনোই আন্তরিকভাবে চায়নি বিরোধী দল সংসদে থাকুক। আর বিরোধী দলকে জনগণ যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা তারা পালন করেনি। সংসদে থাকলে তারা নিজেদের ও দেশের মানুষের জন্য কিছু কথা বলতে পারত।
সংসদ বর্জন করে তারা সেই সুযোগ নষ্ট করেছে। অথচ বেতনভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি নেওয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু এক পয়সাও ছাড় দিচ্ছে না।
নবম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি। বিরোধী দল ওই দিন সংসদে যোগ দিয়ে পরদিন থেকে বর্জন শুরু করে। প্রায় এক মাস পর তারা ২৩ ফেব্রুয়ারি সংসদে ফেরে। এরপর অধিবেশনের শেষ দিন ৭ এপ্রিল পর্যন্ত তারা সংসদে অবস্থান করে।
এরপর টানা ৬৩ দিন অনুপস্থিত থাকার পর ২০১০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি (চতুর্থ অধিবেশন) বিএনপি সংসদে ফেরে। দলীয়ভাবে ৬৩ দিন অনুপস্থিত থাকলেও কোনো কোনো সদস্যের অনুপস্থিতি ৮০ দিনের বেশি হওয়ায় তাঁরা মাঝে সংসদে যোগ দেন। চতুর্থ অধিবেশনে বিএনপি অনিয়মিত হলেও ৪ এপ্রিল (২০১০) সংসদ ছেড়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মোট ২১ কার্যদিবস সংসদে উপস্থিত ছিল। এরপর একই বছরের বাজেট অধিবেশনে একদিনের (২ জুন) জন্য যোগ দিয়ে বাজেট উপস্থাপনের আগেই সংসদ ছেড়ে যায়।
টানা ৭৪ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর ২০১১ সালের ১৫ মার্চ বিএনপি সংসদে ফেরে। সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দলীয়ভাবে ৭৪ দিন অনুপস্থিত হলেও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি ৯০ দিন পূর্ণ হওয়ার ১৬ দিন আগেই বিএনপিকে সংসদে যেতে হয়েছে।
এরপর বিএনপি ৭৮ কার্যদিবস শেষে সংসদে ফেরে ২০১২ সালের ১৮ মার্চ। দলীয়ভাবে ৭৮ কার্যদিবস হলেও খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি ৮৪ কার্যদিবস হয়ে যাওয়ার আগেই তাদের সংসদে ফিরতে হয়েছে। ২০ মার্চ অধিবেশনের শেষ দিন পর্যন্ত তারা সংসদে কাটায়। সে দিন বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া মোট এক ঘণ্টা ৫৩ মিনিট বক্তব্য দেন, যা সংসদের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তারপর থেকে এখন পর্যন্ত সংসদে বিএনপির অনুপস্থিতি ৮৩ কার্যদিবস। সদস্যপদ রক্ষা করতে হলে এই অধিবেশনেই তাদের যোগ দিতে হবে।
সংসদ সচিবালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পঞ্চম সংসদের মোট ৪০০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া কত দিন সংসদে ছিলেন, তার তথ্য নেই। কারণ, খালেদা জিয়া হাজিরা বইতে সই করেননি। আর বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন ১৩৫ দিন।
সপ্তম সংসদে ৩৮২ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন ২৯৮ দিন। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২৮ দিন।
অষ্টম সংসদে ৩৭৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন ১৯৫ দিন। বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ছিলেন মাত্র ৪৫ দিন।
নবম সংসদে এখন পর্যন্ত ৩৭০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন ২৯৮ দিন। বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন মাত্র আট দিন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কখনো চাইনি, সংসদ অকার্যকর হোক। কিন্তু সরকার চায়নি আমরা সংসদে থাকি। সেই পরিবেশ তারা তৈরি করেছে। সে জন্যই আমরা সংসদ বর্জন করেছি।’
No comments