রূপান্তরের কারিগর by বিষুষ্ণপদ ভৌমিক
মৃত্যু শরীরের ধর্ম। আত্মা অবিনাশী। কারণ
আত্মার জন্ম নেই, মৃত্যুও নেই। ভগবান অজন্মা। তিনি জন্ম নেন, মনুষ্য শরীর
গ্রহণ করেন কেবল ধর্ম সংস্থাপনের জন্য।
সাধুর পরিত্রাণের
জন্য আর অশারীরিকতার প্রভাব থেকে মানুষকে উদ্ধার করার জন্য। মায়ার শরীরটি
ধারণ করেও মায়াতীত। লোকনাথ নিত্যসত্তা। বারদীর মহাতীর্থে জ্ঞান-ভক্তিকর্ম
এবং যোগের যে মহাসমন্বয়ের পথ তিনি তার অসামান্য দিব্যলীলার মাধ্যমে প্রকাশ
করলেন, তা কেবল এক মহাসম্ভাবনাময় সত্যযুগের আবির্ভাবের পথকে সুগম করার এক
দিব্য প্রয়াস। এ কথা আজ লোকনাথ ভক্তমহলে তথা মানুষের হৃদয়ে অনুভূত সত্য।
বাংলাদেশের বারদী গ্রাম। কালে রূপান্তরিত হয়েছে এক মহাতীর্থে। যেখানে
হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাই দর্শন করেছেন তাদের নিজ নিজ
ধর্মের প্রাণপুরুষকে। বাবা ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনার মূর্ত প্রতীক।
তিনি কোনো সম্প্রদায়, শিষ্য বা বিশেষ শ্রেণী তৈরি করেননি। সমদর্শী লোকনাথ
ছিলেন জীবন্তগীতার মূর্ত বিগ্রহ। যেখানে গীতা ত্যাগের মহিমায় মহীয়ান বাবাও
সেই ত্যাগের মূর্ত বিগ্রহ। সন্ন্যাসী হয়েও বিকারগ্রস্ত মানুষের মনবিদ।
অন্তর জগতের সম্রাট প্রজাহীন রাজা কোনো দেশ, কোনো ভৌগোলিক সীমানায় তার
পরিচয় বা পরিমাপ করা যায় না।
সিদ্ধজীবনী গ্রন্থের (বাবার জীবনী) প্রথম লেখক বাবার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সৌভাগ্যবান ব্যক্তিত্ব তারাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত তখনই বারদীধামে বাবার সানি্নধ্যে আসেন। কথা প্রসঙ্গে বাবার সঙ্গে প্রশ্ন রাখেন, বাবা আমার বদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার কৌশল কী? বাবা বলেন, মাকড়সা তার রেশম বিস্তার করে নিজেই সেই জালে আটকে থাকে, কালে পূর্বরূপ পরিবর্তন করে প্রজাপতি আকারে বের হয়ে আসে।
তোমার সেই রূপ পরিবর্তন কৌশল অভ্যাসের মাধ্যমে মুক্তির দুয়ারে পেঁৗছাতে পারবে। অর্থাৎ ঈড়হাবৎঃ (রূপান্তর) ঘটানো মানুষের নৈতিক মূল্যবোধের প্রথম সোপান। অশুদ্ধ-শুদ্ধ-বিশুদ্ধ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ার মাঝেই মানুষের সর্বজনীন প্রয়াস চলছে, চলবে। তারাকান্ত বাবার কৃপায় ব্রহ্মানন্দে রূপান্তর, ভোগী জমিদার অখিল সেন বাবার কৃপায় সুরথ ব্রহ্মচারীরূপে নিজেকে প্রকাশ করেন। লোহাকে সোনায় রূপান্তর প্রক্রিয়া করার যে কৌশল যোগসিদ্ধ মহাপুরুষের বারদীধামে আগমনের এটাও অন্যতম কারণ।
মন নিজেই নিজের শত্রু, নিজেই তার মিত্র। তেমনি মানুষের জীবনপ্রবাহ তার নিজেরই তৈরি। বাবা লোকনাথ বলেছেন, তোমার আত্মবিশ্বাস আত্মজ্যোতিতে রূপান্তরিত হয়ে আত্মজ্ঞান লাভের পথকে খুলে দেয় নিজকে চেনার-জানার রাস্তা গড়ে তোলে। মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্যের রচনা করে পৃথিবীতে স্বর্গরাজ্য তৈরি করে। আবার অমর হয়ে নিজেই পরিচয় বহন করে।
শান্তির অন্বেষণে মানুষ বিভিন্ন প্রকার রাস্তা খোঁজে, যেমন_ কেউ অ্যালকোহলে, কেউ তামাক পাতায়, কেউ পানের পাতায়, কেউ দেহাকর্ষণে, কেউ বিভিন্ন ড্রাগের নেশায় শান্তির অনুসন্ধানে ব্যস্ত থাকে। আসলে ধর্ম ও আধ্যাত্মিক চেতনার মূল সুর সুপ্ত শুভ চেতনার উন্মেষ ঘটানো, শুভ চিন্তা ও চেতনার চর্চা ও অনুশীলন করা।
আসলে ধর্ম মানে নিজের ভেতরে শুভ ভাবনার বীজ বপন করা, তারপর সচ্চিদানন্দের চেতনার আলোকে তাকে আলোকিত করা। ধর্ম আচরণ কেবল মনুষ্যত্বের বিকাশমান ধারার সক্রিয়তার জন্য কয়েকটি প্রাণহীন আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে তা যেন সীমাবদ্ধ না হয়। সবার মাঝে ভালোবাসার রূপান্তর ঘটিয়ে নিজের ইষ্টগুরুর কাছে আত্মসমর্পণ করার মধ্যেই মহানন্দের অনুভব।
লিখিতে তোমার কথা অক্ষম যে আমি,
অন্তরে আসন লহ, ওগো অন্তর্যামী।
সিদ্ধজীবনী গ্রন্থের (বাবার জীবনী) প্রথম লেখক বাবার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সৌভাগ্যবান ব্যক্তিত্ব তারাকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত তখনই বারদীধামে বাবার সানি্নধ্যে আসেন। কথা প্রসঙ্গে বাবার সঙ্গে প্রশ্ন রাখেন, বাবা আমার বদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত হওয়ার কৌশল কী? বাবা বলেন, মাকড়সা তার রেশম বিস্তার করে নিজেই সেই জালে আটকে থাকে, কালে পূর্বরূপ পরিবর্তন করে প্রজাপতি আকারে বের হয়ে আসে।
তোমার সেই রূপ পরিবর্তন কৌশল অভ্যাসের মাধ্যমে মুক্তির দুয়ারে পেঁৗছাতে পারবে। অর্থাৎ ঈড়হাবৎঃ (রূপান্তর) ঘটানো মানুষের নৈতিক মূল্যবোধের প্রথম সোপান। অশুদ্ধ-শুদ্ধ-বিশুদ্ধ এই রূপান্তর প্রক্রিয়ার মাঝেই মানুষের সর্বজনীন প্রয়াস চলছে, চলবে। তারাকান্ত বাবার কৃপায় ব্রহ্মানন্দে রূপান্তর, ভোগী জমিদার অখিল সেন বাবার কৃপায় সুরথ ব্রহ্মচারীরূপে নিজেকে প্রকাশ করেন। লোহাকে সোনায় রূপান্তর প্রক্রিয়া করার যে কৌশল যোগসিদ্ধ মহাপুরুষের বারদীধামে আগমনের এটাও অন্যতম কারণ।
মন নিজেই নিজের শত্রু, নিজেই তার মিত্র। তেমনি মানুষের জীবনপ্রবাহ তার নিজেরই তৈরি। বাবা লোকনাথ বলেছেন, তোমার আত্মবিশ্বাস আত্মজ্যোতিতে রূপান্তরিত হয়ে আত্মজ্ঞান লাভের পথকে খুলে দেয় নিজকে চেনার-জানার রাস্তা গড়ে তোলে। মানুষ নিজেই নিজের ভাগ্যের রচনা করে পৃথিবীতে স্বর্গরাজ্য তৈরি করে। আবার অমর হয়ে নিজেই পরিচয় বহন করে।
শান্তির অন্বেষণে মানুষ বিভিন্ন প্রকার রাস্তা খোঁজে, যেমন_ কেউ অ্যালকোহলে, কেউ তামাক পাতায়, কেউ পানের পাতায়, কেউ দেহাকর্ষণে, কেউ বিভিন্ন ড্রাগের নেশায় শান্তির অনুসন্ধানে ব্যস্ত থাকে। আসলে ধর্ম ও আধ্যাত্মিক চেতনার মূল সুর সুপ্ত শুভ চেতনার উন্মেষ ঘটানো, শুভ চিন্তা ও চেতনার চর্চা ও অনুশীলন করা।
আসলে ধর্ম মানে নিজের ভেতরে শুভ ভাবনার বীজ বপন করা, তারপর সচ্চিদানন্দের চেতনার আলোকে তাকে আলোকিত করা। ধর্ম আচরণ কেবল মনুষ্যত্বের বিকাশমান ধারার সক্রিয়তার জন্য কয়েকটি প্রাণহীন আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে তা যেন সীমাবদ্ধ না হয়। সবার মাঝে ভালোবাসার রূপান্তর ঘটিয়ে নিজের ইষ্টগুরুর কাছে আত্মসমর্পণ করার মধ্যেই মহানন্দের অনুভব।
লিখিতে তোমার কথা অক্ষম যে আমি,
অন্তরে আসন লহ, ওগো অন্তর্যামী।
No comments