‘র‌্যাব সদস্য’ ভারতীয় জেলে!

বাংলাদেশের বিশেষ  বাহিনী র‌্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-এর এক সদস্য এখন ভারতের জেলে। ভারতীয় পাসপোর্ট আইন লংঘনের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। এরপর ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ তাকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা করে।
কিন্তু সে চেষ্টায় তারা ব্যর্থ হয়ে তাকে জেলে পাঠিয়েছে। র‌্যাবের ওই সদস্যের নাম মোহাম্মদ মিলান হোসেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য হিন্দু। এতে বলা হয়, ঘটনা পশ্চিম ত্রিপুরার। সেখানকার সিপাহিজালা জেলার সোনামুড়ার একটি আদালত তাকে দু’সপ্তাহের জন্য নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, মিলান হোসেন একটি র‌্যাব কন্টিনজেন্টের সঙ্গে শনিবার আন্তর্জাতিক সীমান্ত অতিক্রম করে রহিমপুর গ্রাম এলাকায় ভারতীয় অংশে প্রবেশ করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল কাশির নিষিদ্ধ সিরাপের সন্ধান করা। এই সিরাপটি বাংলাদেশে ব্যাপক আকারে পাচার হয়ে আসে। তারা ওই গ্রামে অভিযান চালাতে গেলে সেখানকার লোকজন তাতে প্রতিবাদ জানায়। এতে এক নারী ও কয়েকজন আহত হন। সিপাহিজালার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তিমির দাস বলেছেন, ওই সময় গ্রামবাসী এক র‌্যাব সদস্যকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। বাকিরা সীমান্ত অতিক্রম করে চলে যায়। তিনি আরও বলেছেন, র‌্যাব সদস্যরা তখন বেসামরিক পোশাকে ছিলেন। তবে তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। ধরা পড়ার পর মিলান হোসেন বিএসএফ ও পুলিশকে বলেছেন, মোহাম্মদ কামরুলজামান নামে একজন সিনিয়র কর্মকর্তার অধীনে তাদের টিমটি ওই অভিযান চালাচ্ছিলেন। সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করা এই র‌্যাব সদস্যকে বিএসএফ প্রথমে তাদের হেফাজতে নিয়ে আশাবাড়ি ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে ভারতীয় নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাকে। বিএসএফের এক কর্মকর্তা বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মিলান হোসেন তাদের সহযোগিতা করেছেন। আমরা মনে করি তিনি শুধুমাত্র ওই গ্রামে অনুসন্ধান অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। এ বিষয়ে বিএসএফ পতাকা বৈঠকের ডাক দিলে তাতে সাড়া দেয় বিজিবি। সেখানে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তোলা হয়। এই পতাকা বৈঠক শনিবার মধ্যরাত পর্যন্ত চলতে থাকে। কিন্তু বিজিবি মিলান হোসেনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চয়তা দেয় নি এবং তারা তাকে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ অবস্থায় বিএসএফ রোববার সকালে পুলিশে খবর দিয়ে মিলান হোসেনকে তাদের হেফাজতে দিয়ে দেয়। তিমির দাস বলেছেন, গ্রামবাসী তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেয় নি। তাই আমরা তাকে পাসপোর্ট আইনের অধীনে আটক রেখেছি। আদালত তাকে ১৪ দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সহযোগীদের মতো মিলান হোসেনও ছিলেন সশস্ত্র। কিন্তু যখন তিনি গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে যান তখন তার সহযোগীদের দিকে নিজের অস্ত্র ছুড়ে দেন। তার কাছ থেকে তার অফিসিয়াল পরিচয় পত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় পত্রিকার রিপোর্ট ও র‌্যাব সদস্য আটকের অভিযোগ অস্বীকার করেছে র‌্যাব। বলা হয়েছে, তাদের কোন সদস্য আটক হয়নি। 

No comments

Powered by Blogger.