আজ বসছে সংসদের বাজেট অধিবেশনঃ ফ্যাসিস্ট চিন্তা ছেড়ে গণতন্ত্রে ফিরে আসুন
আজ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু
হচ্ছে। এতে অর্থমন্ত্রী পঞ্চমবারের মতো বাজেট পেশ করবেন। বাজেটে অর্থের
পরিমাণও তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো—দুই লাখ হাজার কোটি টাকা! নির্বাচনী বাজেট
বলে বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন জোটের এমপিরা তেমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি করবেন না
বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
ফলে এত বিপুল অর্থের সংস্থান ঠিক
কোন কোন খাত থেকে করা হবে কিংবা বাজেটের বড় অংশের জন্যই বিদেশি সাহায্যের
ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে কিনা এসব নিয়ে বিতর্কও বেশি হওয়ার কথা নয়।
অর্থাত্ বছরের পর বছর ধরে বাজেট অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প ও সার্বিক
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলেও অর্থমন্ত্রী এবারের অধিবেশনেও দিব্যি পার
পেয়ে যাবেন। বাজেট বরাদ্দের পরিমাণের দিক থেকে রেকর্ডও করবেন তিনি। কারণ,
বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে তার আগে আর কোনো সরকারের অর্থমন্ত্রী দুই লাখ
হাজার কোটি টাকার বিপুল অর্থের বাজেট প্রণয়ন ও পেশ করেননি।
অন্যকিছু কারণেও সংসদের এই অধিবেশন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে। সাধারণ মানুষের কথা অবশ্য আলাদা। কারণ, তারা প্রায় ভুলেই গেছে যে, দেশে এখনও একটি ‘নির্বাচিত’ জাতীয় সংসদ রয়েছে এবং সে সংসদের অধিবেশনও নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে! অন্যদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কারণ, বহুদিন পর এবারের অধিবেশনে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দল। গত বছরের ১৮ মার্চ বিরোধী দলের এমপিরা গিয়েছিলেন টানা ৭৭ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর। এবার এরই মধ্যে ৮৩ দিন পার হয়ে গেছে। আর মাত্র সাতদিন অনুপস্থিত থাকলে অর্থাত্ ৯০ হলেই তাদের সদস্যপদ বাতিল হবে। সে ব্যাখ্যার আলোকেই বলা হচ্ছে, সদস্যপদ ধরে রাখার জন্য হলেও বিরোধী দলকে এবার সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে হবে।
বাজেট অধিবেশনকেন্দ্রিক অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার পদে নির্বাচিত হওয়ার আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি, সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন সংরক্ষিত মহিলা কোটা থেকে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসার গৌরব ও অর্জন ছিল না তার। এজন্যই বলা হয়েছে, ডজন ডজন অভিজ্ঞ নেতা ও এমপি থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগে সম্ভবত যোগ্য ব্যক্তির এতটাই ‘আকাল’ পড়েছিল যে, একজন অনির্বাচিত প্রতিমন্ত্রীকে স্পিকার বানাতে হয়েছে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর গঠিত বাংলাদেশ গণপরিষদের প্রথম স্পিকার শাহ আবদুল হামিদ থেকে জাতীয় সংসদের সর্বশেষ স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট পর্যন্ত প্রত্যেকেই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এমপি ছিলেন। তাছাড়া স্পিকারের মৃত্যুর পর সাধারণত ডেপুটি স্পিকারকেই স্পিকার পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। কিন্তু সবদিক থেকেই ব্যতিক্রম ঘটেছে নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর ক্ষেত্রে। তিনি অবশ্য এরই মধ্যে আশা সৃষ্টিকারী অনেক কথা বলেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দলকে সুযোগ দেয়ার এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে। এগুলো তার মনের কথা হতে পারে, তার সদিচ্ছাও হয়তো রয়েছে। অন্যদিকে বাস্তবতা হলো, স্পিকার যিনিই হোন না কেন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছানুসারেই চলতে হবে—যেমনটি চলতে হয়েছে স্পিকার পদ থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি হওয়া আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেটকেও। নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকেই নিজেকে সর্বতোভাবে আওয়ামী লীগের স্পিকার হিসেবে হাজির করেছিলেন তিনি। এজন্যই প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনই বিরোধী দলকে অধিবেশন বর্জন করতে হয়েছিল। ক্ষমতাসীনরা তো বটেই, স্পিকার আবদুল হামিদও বিরোধী দলের এমপিদের অধিবেশনে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশ্বাসযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেননি। একই কারণে নতুন স্পিকারের আশ্বাসে ঠিক ভরসা রাখতে পারছে না বিরোধী দল। এখন দেখার বিষয়, বিরোধী দলের প্রতি কতটা ন্যায়বিচার করতে পারেন ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
বাজেট অধিবেশন হলেও জাতীয় সংসদের এবারের অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক তথা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রবল বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে অবশ্য কেউই আশান্বিত হতে পারছেন না। কারণ, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সরকারের নামের প্রশ্নে ছাড় দেয়া হলেও ক্ষমতাসীনরা এমনভাবেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে চলেছেন, যা শুনে মনে হতে পারে যেন, সংবিধানে আগে কখনও তত্ত্বাবধায়ক নামের কোনো বিধান বা ব্যবস্থাই ছিল না! উচ্চ আদালতের একটি বিতর্কিত রায়কে অজুহাত বানিয়ে ব্যবস্থাটিকে যে নিজেরাই বাতিল করেছেন সে কথাটাও তারা স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটও জটিল ও মারাত্মক হয়েছে একই কারণে। অথচ এ শুধু বিরোধী দলের দাবি নয়, সংবাদ মাধ্যমের জরিপেও দেখা গেছে, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল চান। আমরা মনে করি, ক্ষমতাসীনদের উচিত জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো এবং এবারের অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধন করে ব্যবস্থাটি পুনর্বহাল করা। না হলে বুঝতে হবে, মুখে যা-ই বলুন না কেন, ক্ষমতাসীনরা আসলে বাকশালের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। বলাবাহুল্য, তেমন কোনো পরিকল্পনা সফল হওয়ার সামান্য সম্ভাবনাও বর্তমান বাংলাদেশে নেই। সুতরাং ক্ষমতাসীনদের উচিত, গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া। সে উদ্দেশ্যে উদ্যোগ বাজেট অধিবেশনেই নেয়া হবে বলে আমরা আশা করতে চাই।আজ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। এতে অর্থমন্ত্রী পঞ্চমবারের মতো বাজেট পেশ করবেন। বাজেটে অর্থের পরিমাণও তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো—দুই লাখ হাজার কোটি টাকা! নির্বাচনী বাজেট বলে বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন জোটের এমপিরা তেমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি করবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে এত বিপুল অর্থের সংস্থান ঠিক কোন কোন খাত থেকে করা হবে কিংবা বাজেটের বড় অংশের জন্যই বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে কিনা এসব নিয়ে বিতর্কও বেশি হওয়ার কথা নয়। অর্থাত্ বছরের পর বছর ধরে বাজেট অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প ও সার্বিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলেও অর্থমন্ত্রী এবারের অধিবেশনেও দিব্যি পার পেয়ে যাবেন। বাজেট বরাদ্দের পরিমাণের দিক থেকে রেকর্ডও করবেন তিনি। কারণ, বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে তার আগে আর কোনো সরকারের অর্থমন্ত্রী দুই লাখ হাজার কোটি টাকার বিপুল অর্থের বাজেট প্রণয়ন ও পেশ করেননি।
অন্যকিছু কারণেও সংসদের এই অধিবেশন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে। সাধারণ মানুষের কথা অবশ্য আলাদা। কারণ, তারা প্রায় ভুলেই গেছে যে, দেশে এখনও একটি ‘নির্বাচিত’ জাতীয় সংসদ রয়েছে এবং সে সংসদের অধিবেশনও নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে! অন্যদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কারণ, বহুদিন পর এবারের অধিবেশনে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দল। গত বছরের ১৮ মার্চ বিরোধী দলের এমপিরা গিয়েছিলেন টানা ৭৭ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর। এবার এরই মধ্যে ৮৩ দিন পার হয়ে গেছে। আর মাত্র সাতদিন অনুপস্থিত থাকলে অর্থাত্ ৯০ হলেই তাদের সদস্যপদ বাতিল হবে। সে ব্যাখ্যার আলোকেই বলা হচ্ছে, সদস্যপদ ধরে রাখার জন্য হলেও বিরোধী দলকে এবার সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে হবে।
বাজেট অধিবেশনকেন্দ্রিক অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার পদে নির্বাচিত হওয়ার আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি, সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন সংরক্ষিত মহিলা কোটা থেকে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসার গৌরব ও অর্জন ছিল না তার। এজন্যই বলা হয়েছে, ডজন ডজন অভিজ্ঞ নেতা ও এমপি থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগে সম্ভবত যোগ্য ব্যক্তির এতটাই ‘আকাল’ পড়েছিল যে, একজন অনির্বাচিত প্রতিমন্ত্রীকে স্পিকার বানাতে হয়েছে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর গঠিত বাংলাদেশ গণপরিষদের প্রথম স্পিকার শাহ আবদুল হামিদ থেকে জাতীয় সংসদের সর্বশেষ স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট পর্যন্ত প্রত্যেকেই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এমপি ছিলেন। তাছাড়া স্পিকারের মৃত্যুর পর সাধারণত ডেপুটি স্পিকারকেই স্পিকার পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। কিন্তু সবদিক থেকেই ব্যতিক্রম ঘটেছে নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর ক্ষেত্রে। তিনি অবশ্য এরই মধ্যে আশা সৃষ্টিকারী অনেক কথা বলেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দলকে সুযোগ দেয়ার এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে। এগুলো তার মনের কথা হতে পারে, তার সদিচ্ছাও হয়তো রয়েছে। অন্যদিকে বাস্তবতা হলো, স্পিকার যিনিই হোন না কেন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছানুসারেই চলতে হবে—যেমনটি চলতে হয়েছে স্পিকার পদ থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি হওয়া আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেটকেও। নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকেই নিজেকে সর্বতোভাবে আওয়ামী লীগের স্পিকার হিসেবে হাজির করেছিলেন তিনি। এজন্যই প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনই বিরোধী দলকে অধিবেশন বর্জন করতে হয়েছিল। ক্ষমতাসীনরা তো বটেই, স্পিকার আবদুল হামিদও বিরোধী দলের এমপিদের অধিবেশনে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশ্বাসযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেননি। একই কারণে নতুন স্পিকারের আশ্বাসে ঠিক ভরসা রাখতে পারছে না বিরোধী দল। এখন দেখার বিষয়, বিরোধী দলের প্রতি কতটা ন্যায়বিচার করতে পারেন ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
বাজেট অধিবেশন হলেও জাতীয় সংসদের এবারের অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক তথা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রবল বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে অবশ্য কেউই আশান্বিত হতে পারছেন না। কারণ, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সরকারের নামের প্রশ্নে ছাড় দেয়া হলেও ক্ষমতাসীনরা এমনভাবেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে চলেছেন, যা শুনে মনে হতে পারে যেন, সংবিধানে আগে কখনও তত্ত্বাবধায়ক নামের কোনো বিধান বা ব্যবস্থাই ছিল না! উচ্চ আদালতের একটি বিতর্কিত রায়কে অজুহাত বানিয়ে ব্যবস্থাটিকে যে নিজেরাই বাতিল করেছেন সে কথাটাও তারা স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটও জটিল ও মারাত্মক হয়েছে একই কারণে। অথচ এ শুধু বিরোধী দলের দাবি নয়, সংবাদ মাধ্যমের জরিপেও দেখা গেছে, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল চান। আমরা মনে করি, ক্ষমতাসীনদের উচিত জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো এবং এবারের অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধন করে ব্যবস্থাটি পুনর্বহাল করা। না হলে বুঝতে হবে, মুখে যা-ই বলুন না কেন, ক্ষমতাসীনরা আসলে বাকশালের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। বলাবাহুল্য, তেমন কোনো পরিকল্পনা সফল হওয়ার সামান্য সম্ভাবনাও বর্তমান বাংলাদেশে নেই। সুতরাং ক্ষমতাসীনদের উচিত, গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া। সে উদ্দেশ্যে উদ্যোগ বাজেট অধিবেশনেই নেয়া হবে বলে আমরা আশা করতে চাই।
অন্যকিছু কারণেও সংসদের এই অধিবেশন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে। সাধারণ মানুষের কথা অবশ্য আলাদা। কারণ, তারা প্রায় ভুলেই গেছে যে, দেশে এখনও একটি ‘নির্বাচিত’ জাতীয় সংসদ রয়েছে এবং সে সংসদের অধিবেশনও নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে! অন্যদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কারণ, বহুদিন পর এবারের অধিবেশনে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দল। গত বছরের ১৮ মার্চ বিরোধী দলের এমপিরা গিয়েছিলেন টানা ৭৭ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর। এবার এরই মধ্যে ৮৩ দিন পার হয়ে গেছে। আর মাত্র সাতদিন অনুপস্থিত থাকলে অর্থাত্ ৯০ হলেই তাদের সদস্যপদ বাতিল হবে। সে ব্যাখ্যার আলোকেই বলা হচ্ছে, সদস্যপদ ধরে রাখার জন্য হলেও বিরোধী দলকে এবার সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে হবে।
বাজেট অধিবেশনকেন্দ্রিক অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার পদে নির্বাচিত হওয়ার আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি, সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন সংরক্ষিত মহিলা কোটা থেকে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসার গৌরব ও অর্জন ছিল না তার। এজন্যই বলা হয়েছে, ডজন ডজন অভিজ্ঞ নেতা ও এমপি থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগে সম্ভবত যোগ্য ব্যক্তির এতটাই ‘আকাল’ পড়েছিল যে, একজন অনির্বাচিত প্রতিমন্ত্রীকে স্পিকার বানাতে হয়েছে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর গঠিত বাংলাদেশ গণপরিষদের প্রথম স্পিকার শাহ আবদুল হামিদ থেকে জাতীয় সংসদের সর্বশেষ স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট পর্যন্ত প্রত্যেকেই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এমপি ছিলেন। তাছাড়া স্পিকারের মৃত্যুর পর সাধারণত ডেপুটি স্পিকারকেই স্পিকার পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। কিন্তু সবদিক থেকেই ব্যতিক্রম ঘটেছে নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর ক্ষেত্রে। তিনি অবশ্য এরই মধ্যে আশা সৃষ্টিকারী অনেক কথা বলেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দলকে সুযোগ দেয়ার এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে। এগুলো তার মনের কথা হতে পারে, তার সদিচ্ছাও হয়তো রয়েছে। অন্যদিকে বাস্তবতা হলো, স্পিকার যিনিই হোন না কেন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছানুসারেই চলতে হবে—যেমনটি চলতে হয়েছে স্পিকার পদ থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি হওয়া আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেটকেও। নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকেই নিজেকে সর্বতোভাবে আওয়ামী লীগের স্পিকার হিসেবে হাজির করেছিলেন তিনি। এজন্যই প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনই বিরোধী দলকে অধিবেশন বর্জন করতে হয়েছিল। ক্ষমতাসীনরা তো বটেই, স্পিকার আবদুল হামিদও বিরোধী দলের এমপিদের অধিবেশনে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশ্বাসযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেননি। একই কারণে নতুন স্পিকারের আশ্বাসে ঠিক ভরসা রাখতে পারছে না বিরোধী দল। এখন দেখার বিষয়, বিরোধী দলের প্রতি কতটা ন্যায়বিচার করতে পারেন ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
বাজেট অধিবেশন হলেও জাতীয় সংসদের এবারের অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক তথা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রবল বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে অবশ্য কেউই আশান্বিত হতে পারছেন না। কারণ, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সরকারের নামের প্রশ্নে ছাড় দেয়া হলেও ক্ষমতাসীনরা এমনভাবেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে চলেছেন, যা শুনে মনে হতে পারে যেন, সংবিধানে আগে কখনও তত্ত্বাবধায়ক নামের কোনো বিধান বা ব্যবস্থাই ছিল না! উচ্চ আদালতের একটি বিতর্কিত রায়কে অজুহাত বানিয়ে ব্যবস্থাটিকে যে নিজেরাই বাতিল করেছেন সে কথাটাও তারা স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটও জটিল ও মারাত্মক হয়েছে একই কারণে। অথচ এ শুধু বিরোধী দলের দাবি নয়, সংবাদ মাধ্যমের জরিপেও দেখা গেছে, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল চান। আমরা মনে করি, ক্ষমতাসীনদের উচিত জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো এবং এবারের অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধন করে ব্যবস্থাটি পুনর্বহাল করা। না হলে বুঝতে হবে, মুখে যা-ই বলুন না কেন, ক্ষমতাসীনরা আসলে বাকশালের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। বলাবাহুল্য, তেমন কোনো পরিকল্পনা সফল হওয়ার সামান্য সম্ভাবনাও বর্তমান বাংলাদেশে নেই। সুতরাং ক্ষমতাসীনদের উচিত, গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া। সে উদ্দেশ্যে উদ্যোগ বাজেট অধিবেশনেই নেয়া হবে বলে আমরা আশা করতে চাই।আজ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। এতে অর্থমন্ত্রী পঞ্চমবারের মতো বাজেট পেশ করবেন। বাজেটে অর্থের পরিমাণও তাক লাগিয়ে দেয়ার মতো—দুই লাখ হাজার কোটি টাকা! নির্বাচনী বাজেট বলে বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন জোটের এমপিরা তেমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি করবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ফলে এত বিপুল অর্থের সংস্থান ঠিক কোন কোন খাত থেকে করা হবে কিংবা বাজেটের বড় অংশের জন্যই বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে কিনা এসব নিয়ে বিতর্কও বেশি হওয়ার কথা নয়। অর্থাত্ বছরের পর বছর ধরে বাজেট অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্প ও সার্বিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলেও অর্থমন্ত্রী এবারের অধিবেশনেও দিব্যি পার পেয়ে যাবেন। বাজেট বরাদ্দের পরিমাণের দিক থেকে রেকর্ডও করবেন তিনি। কারণ, বাংলাদেশের মতো গরিব দেশে তার আগে আর কোনো সরকারের অর্থমন্ত্রী দুই লাখ হাজার কোটি টাকার বিপুল অর্থের বাজেট প্রণয়ন ও পেশ করেননি।
অন্যকিছু কারণেও সংসদের এই অধিবেশন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে। সাধারণ মানুষের কথা অবশ্য আলাদা। কারণ, তারা প্রায় ভুলেই গেছে যে, দেশে এখনও একটি ‘নির্বাচিত’ জাতীয় সংসদ রয়েছে এবং সে সংসদের অধিবেশনও নিয়মিতভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে! অন্যদিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কারণ, বহুদিন পর এবারের অধিবেশনে যোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দল। গত বছরের ১৮ মার্চ বিরোধী দলের এমপিরা গিয়েছিলেন টানা ৭৭ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকার পর। এবার এরই মধ্যে ৮৩ দিন পার হয়ে গেছে। আর মাত্র সাতদিন অনুপস্থিত থাকলে অর্থাত্ ৯০ হলেই তাদের সদস্যপদ বাতিল হবে। সে ব্যাখ্যার আলোকেই বলা হচ্ছে, সদস্যপদ ধরে রাখার জন্য হলেও বিরোধী দলকে এবার সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে হবে।
বাজেট অধিবেশনকেন্দ্রিক অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আলোচিত হচ্ছেন নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার পদে নির্বাচিত হওয়ার আগে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি, সংসদ সদস্যও হয়েছিলেন সংরক্ষিত মহিলা কোটা থেকে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসার গৌরব ও অর্জন ছিল না তার। এজন্যই বলা হয়েছে, ডজন ডজন অভিজ্ঞ নেতা ও এমপি থাকা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগে সম্ভবত যোগ্য ব্যক্তির এতটাই ‘আকাল’ পড়েছিল যে, একজন অনির্বাচিত প্রতিমন্ত্রীকে স্পিকার বানাতে হয়েছে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর গঠিত বাংলাদেশ গণপরিষদের প্রথম স্পিকার শাহ আবদুল হামিদ থেকে জাতীয় সংসদের সর্বশেষ স্পিকার আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেট পর্যন্ত প্রত্যেকেই জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত এমপি ছিলেন। তাছাড়া স্পিকারের মৃত্যুর পর সাধারণত ডেপুটি স্পিকারকেই স্পিকার পদে নির্বাচিত করা হয়েছে। কিন্তু সবদিক থেকেই ব্যতিক্রম ঘটেছে নতুন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীর ক্ষেত্রে। তিনি অবশ্য এরই মধ্যে আশা সৃষ্টিকারী অনেক কথা বলেছেন। বিশেষ করে বিরোধী দলকে সুযোগ দেয়ার এবং সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে। এগুলো তার মনের কথা হতে পারে, তার সদিচ্ছাও হয়তো রয়েছে। অন্যদিকে বাস্তবতা হলো, স্পিকার যিনিই হোন না কেন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছানুসারেই চলতে হবে—যেমনটি চলতে হয়েছে স্পিকার পদ থেকে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি হওয়া আবদুল হামিদ অ্যাডভোকেটকেও। নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকেই নিজেকে সর্বতোভাবে আওয়ামী লীগের স্পিকার হিসেবে হাজির করেছিলেন তিনি। এজন্যই প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনই বিরোধী দলকে অধিবেশন বর্জন করতে হয়েছিল। ক্ষমতাসীনরা তো বটেই, স্পিকার আবদুল হামিদও বিরোধী দলের এমপিদের অধিবেশনে ফিরিয়ে আনার জন্য বিশ্বাসযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেননি। একই কারণে নতুন স্পিকারের আশ্বাসে ঠিক ভরসা রাখতে পারছে না বিরোধী দল। এখন দেখার বিষয়, বিরোধী দলের প্রতি কতটা ন্যায়বিচার করতে পারেন ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।
বাজেট অধিবেশন হলেও জাতীয় সংসদের এবারের অধিবেশনে তত্ত্বাবধায়ক তথা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রবল বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে অবশ্য কেউই আশান্বিত হতে পারছেন না। কারণ, বিরোধী দলের পক্ষ থেকে সরকারের নামের প্রশ্নে ছাড় দেয়া হলেও ক্ষমতাসীনরা এমনভাবেই সংবিধানের দোহাই দিয়ে চলেছেন, যা শুনে মনে হতে পারে যেন, সংবিধানে আগে কখনও তত্ত্বাবধায়ক নামের কোনো বিধান বা ব্যবস্থাই ছিল না! উচ্চ আদালতের একটি বিতর্কিত রায়কে অজুহাত বানিয়ে ব্যবস্থাটিকে যে নিজেরাই বাতিল করেছেন সে কথাটাও তারা স্বীকার করতে চাচ্ছেন না। দেশে রাজনৈতিক সঙ্কটও জটিল ও মারাত্মক হয়েছে একই কারণে। অথচ এ শুধু বিরোধী দলের দাবি নয়, সংবাদ মাধ্যমের জরিপেও দেখা গেছে, দেশের ৯০ শতাংশ মানুষই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনর্বহাল চান। আমরা মনে করি, ক্ষমতাসীনদের উচিত জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো এবং এবারের অধিবেশনেই সংবিধান সংশোধন করে ব্যবস্থাটি পুনর্বহাল করা। না হলে বুঝতে হবে, মুখে যা-ই বলুন না কেন, ক্ষমতাসীনরা আসলে বাকশালের একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। বলাবাহুল্য, তেমন কোনো পরিকল্পনা সফল হওয়ার সামান্য সম্ভাবনাও বর্তমান বাংলাদেশে নেই। সুতরাং ক্ষমতাসীনদের উচিত, গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার পদক্ষেপ নেয়া। সে উদ্দেশ্যে উদ্যোগ বাজেট অধিবেশনেই নেয়া হবে বলে আমরা আশা করতে চাই।
No comments