বিজেপির ঝান্ডা মোদির হাতেই
শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ২০১৪ সালের নির্বাচনী প্রচার অভিযানের মূল দায়িত্ব গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতেই তুলে দিল। গোয়ায় দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের শেষ দিন গতকাল রোববার মোদিকে নির্বাচনী প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন দলের সভাপতি রাজনাথ সিং। মোদির প্রতি বিরোধিতার কারণেই ওই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন দলের প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি। যদিও সভাপতি রাজনাথ জানান, মোদিকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সর্বসম্মতিক্রমে। বৈঠক শেষে রাজনাথ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিজেপির নির্বাচনের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করছি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ও এতে জয়ের চ্যালেঞ্জের কথা মাথায় রেখেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ ‘অসুস্থতা’র কথা বলে নির্বাহী বৈঠকে আদভানি অনুপস্থিত থাকলেও নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই তাঁকে ফোন করে আশীর্বাদ চান মোদি। বৈঠক শেষে ইন্টারনেটে টুইট বার্তায় এ কথা জানান তিনি। গোয়া বৈঠকের মূল আকর্ষণই ছিলেন মোদি। গুজরাটের গণ্ডি পেরিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিপ্রায় তাঁর পূরণ হয় কি না, সেদিকেই নিবদ্ধ ছিল ভারতের নজর। সেই অভিপ্রায় বাস্তবায়িত হওয়ার প্রথম ধাপ হিসেবে উঠে আসে প্রচারাভিযান কমিটির প্রধানের পদটি। বিজেপির অধিকাংশের ধারণা, মোদি উন্নয়নের যে মডেল তুলে ধরেছেন, দেশের যুব সম্প্রদায়ের কাছে তা এক আশার বার্তা বয়ে এনেছে। ভোটের বাক্সে এর ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটবে। আদভানিসহ যাঁরা এ ধারণার বিরুদ্ধে, তাঁদের যুক্তি ছিল—বিতর্কিত মোদিকে এভাবে গুরুত্ব দিলে তা বিরোধীদের হাতই যে শুধু শক্ত করবে তা নয়, মোদির অতীত রেকর্ডের কারণে দেশ ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সাম্প্রদায়িক’—এই দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে যাবে। বিজেপির এ সিদ্ধান্তে এনডিএ জোটের শরিকেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছে। অকালি দল ও শিবসেনা বলেছে, মোদি এনডিএকে নিশ্চয়ই জয়ের পথে নিয়ে যাবেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী পদে মোদি যে তাদের পছন্দ নয়, শিবসেনা তা আগে একাধিকবার জানিয়ে দিয়েছে। জনতা দল (সংযুক্ত) বলেছে, জোটই বিষয়টি ঠিক করবে। জনতা দল (সংযুক্ত) নেতারা ইতিপূর্বে বলেছেন, জোটের প্রধানমন্ত্রী তিনিই হবেন, সবার কাছে যাঁর গ্রহণযোগ্যতা আছে।
No comments