বাগমারায় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের দ্বন্দ্ব দুই প্রকল্পের অর্ধকোটি টাকা ফেরত যাওয়ার শঙ্কা

ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিরোধের কারণে রাজশাহীর বাগমারার বড়বিহানালী ইউনিয়নে দুটি প্রকল্পে বরাদ্দ পাওয়া অর্ধকোটি টাকা ফেরত যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বিরোধের কারণে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নানা কার্যক্রমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, একটি রাজনৈতিক মামলার আসামি হওয়ায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাগমারা উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রফিকুল ইসলামকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় গত ৭ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বরখাস্ত করে। একই দিন মন্ত্রণালয় ১ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান ইছার উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়।
উপজেলা পরিষদ সূত্রে আরও জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পরিষদের আট সদস্য আবদুল মজিদ, রমজান আলী, মোজামেঞ্চল হক, রমজান হোসেন, আলাউদ্দিন, আজাহার আলী, রোকেয়া বেগম ও লাইলী বিবিকে বাদ দিয়ে বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ জন্য চেয়ারম্যানের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ দেখা দেয়। এর জের ধরে তাঁরা পরিষদের সব সভা বর্জন করেন। তাঁরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদে ২ নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান আজাহার আলীকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়ে মে মাসে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন।
অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ওই মাসে আট ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে তাঁকে নানা কাজে সহায়তা না করার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
ইউপি সচিব রেজাউল করিম জানান, আট ইউপি সদস্যের অসহযোগিতার কারণে পরিষদের কার্যক্রম ভেঙে পড়েছে। কোরাম-সংকটে অপর চার সদস্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পর সব ব্যাংক হিসাব তাঁর নামে করার নিয়ম। কিন্তু অপর সদস্যরা সভায় উপস্থিত না হওয়ায় তা করা সম্ভব হয়নি। এতে ইউনিয়নের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দেওয়া স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) সাড়ে ছয় লাখ ও নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের ৪৩ লাখ টাকা ইউপির ব্যাংক হিসাবে পড়ে আছে। চলতি মাসের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে না পারলে বরাদ্দের টাকা ফেরত যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইছার উদ্দিন অভিযোগ করেন, বিধি অনুযায়ী তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাঁরা আজাহার আলীকে তাঁর পদে বসাতে চাচ্ছেন। এ জন্য আট ইউপি সদস্য তাঁকে সহযোগিতা করছেন না। তাঁরা সভায় উপস্থিত না হওয়ায় সিদ্ধান্তও নেওয়া যাচ্ছে না।
ইউপি সদস্য আজাহার আলী অভিযোগ করেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তাঁরা অতিষ্ঠ। তিনি বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করায় এবং তাঁদের বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাঁরা সভায় যান না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম জানান, উভয় পক্ষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। অচিরেই এ অবস্থার অবসান হবে।

No comments

Powered by Blogger.