পবিত্র কোরআনের আলো-স্বপ্নের ব্যাখ্যা ও তা চর্চায় দোষ নেই
৪২. ওয়া কা-লা লিল্লাযী যান্না আন্নাহূ
না-জিম মিনহুমাযকুরনী 'ইনদা রাব্বিকা, ফাআনসা-হুশ শাইতা-নু যিকরা রাব্বিহী
ফালাবিছা ফিস সিজনি বিদ'আ সিনীনা। ৪৩. ওয়া কা-লাল মালিকু ইন্নী আরা- সাব'আ
বাকারা-তিন সিমা-নিই
য়া'কুলুহুন্না সাব'উন 'ইজাফুও ওয়া
সাব'আ সুমবুলা-তিন খুদরিও ওয়া উখারু য়া-বিসা-তিন, য়া--- আয়্যুহাল মালাউ
আফতূনী ফী রু'য়া-য়া ইন কুনতুম লির রু'য়া তা'বুরূনা। ৪৪. কা-লূ আদগা-ছু
আহলা-মিন, ওয়া মা- নাহনু বিতা'বীলিল আহলা-মি বি'আ-লিমীনা। (সুরা ইউসুফ,
আয়াত ৪২-৪৪)
অনুবাদ : ৪২. যে ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণা ছিল, সে মুক্তি পাবে, তাকে ইউসুফ বলে দিলেন, তুমি গিয়ে তোমার মনিবের কাছে আমার বিষয়ে আলোচনা করবে। এরপর শয়তান তাকে তার মনিবের কাছে গিয়ে সে বিষয়ে আলোচনা করতে ভুলিয়ে দেয়। ফলে তাঁকে কয়েক বছর কারাগারে অবস্থান করতে হলো। * ৪৩. বাদশাহ বললেন, আমি স্বপ্নে এমন সাতটি মোটাতাজা গাভি দেখতে পেয়েছি যে এদের সাতটি শীর্ণকায় গাভি খেয়ে ফেলছে। এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অন্য সাতটি শুষ্ক শীষ দেখতে পেয়েছি। হে আমার পর্ষদ সদস্যবৃন্দ, তোমরা সত্যি স্বপ্নের ব্যাখ্যা বিষয়ে পারদর্শী হয়ে থাকলে আমাকে আমার এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা বর্ণনা করো। ৪৪. তারা বলল, এটি কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। এমন স্বপ্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই।*
তাফসির : * কারাবন্দি যে যুবক সম্পর্কে ইউসুফ (আ.) স্বপ্নের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, তোমার মুক্তি মিলবে। তুমি গিয়ে তোমার মনিবকে আমার বিষয়ে তথ্য দেবে। বলবে, নিরপরাধ এই লোকটি কারাগারে বন্দি আছে। ওই যুবক ইউসুফ (আ.)-এর বলে দেওয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী ঠিকই মুক্তি পেয়েছিল। বাদশার ঘনিষ্ঠতাও ফিরে পেয়েছিল। কিন্তু সে ইউসুফ (আ.)-এর বিষয়ে কোনো আলোচনা করার সুযোগ পায়নি। কারণ, কারাগার থেকে মুক্তির পর শয়তান তার মাথা থেকে ইউসুফ (আ.)-এর প্রসঙ্গটিই ভুলিয়ে দেয়। আলোচ্য আয়াতে আরবি 'বিদ'আ সিনীনা' শব্দ দুটির উল্লেখ করা হয়েছে। এটি তিন থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা বোঝায়। যুবকের সঙ্গে সংঘটিত ঘটনার পরও ইউসুফ (আ.) আরো সাত বছর কারাগারে বন্দি ছিলেন।
* মিসরের বাদশা এই যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, শেষমেশ তাঁর এই স্বপ্নের অসিলায়ই ইউসুফ (আ.) সম্মানের সঙ্গে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। কারণ বাদশা এই অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেই বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ফলে স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা জানতে তিনি দেশের বরেণ্য জ্ঞানী-গুণী, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, জ্যোতিষী এবং অতীন্দ্রিয়বাদীদের পাশাপাশি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও জমায়েত করে স্বপ্নের পুরো ঘটনা তুলে ধরলেন। উপস্থিত কেউই তাঁর স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পেরে নিজেদের অযোগ্যতাই স্বীকার করে নিল। বলল, 'এটি কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন, এরূপ স্বপ্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই।' এখানে আরবি 'আদগাছু' বহুবচন শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ, এমন পুঁটলি, যাতে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা ও ঘাসখড় জমা থাকে। অর্থাৎ এ স্বপ্নটি মিশ্র ধরনের। এতে কল্পনার ব্যাপক মিশ্রণ ঘটেছে। এমন অদ্ভুত স্বপ্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই। সত্য স্বপ্ন হলে ব্যাখ্যা বলা সম্ভব ছিল। ইসলামে স্বপ্নব্যাখ্যায় পারদর্শিতা অর্জন দোষের কিছু নয়। এর মাধ্যমেও ইসলামের খেদমত করা সম্ভব। বুজুর্গ মুসলিম মনীষীরা এমনটি চর্চা করে থাকেন।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মা'আরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ৪২. যে ব্যক্তি সম্পর্কে ধারণা ছিল, সে মুক্তি পাবে, তাকে ইউসুফ বলে দিলেন, তুমি গিয়ে তোমার মনিবের কাছে আমার বিষয়ে আলোচনা করবে। এরপর শয়তান তাকে তার মনিবের কাছে গিয়ে সে বিষয়ে আলোচনা করতে ভুলিয়ে দেয়। ফলে তাঁকে কয়েক বছর কারাগারে অবস্থান করতে হলো। * ৪৩. বাদশাহ বললেন, আমি স্বপ্নে এমন সাতটি মোটাতাজা গাভি দেখতে পেয়েছি যে এদের সাতটি শীর্ণকায় গাভি খেয়ে ফেলছে। এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অন্য সাতটি শুষ্ক শীষ দেখতে পেয়েছি। হে আমার পর্ষদ সদস্যবৃন্দ, তোমরা সত্যি স্বপ্নের ব্যাখ্যা বিষয়ে পারদর্শী হয়ে থাকলে আমাকে আমার এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা বর্ণনা করো। ৪৪. তারা বলল, এটি কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন। এমন স্বপ্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই।*
তাফসির : * কারাবন্দি যে যুবক সম্পর্কে ইউসুফ (আ.) স্বপ্নের ব্যাখ্যায় বলেছিলেন, তোমার মুক্তি মিলবে। তুমি গিয়ে তোমার মনিবকে আমার বিষয়ে তথ্য দেবে। বলবে, নিরপরাধ এই লোকটি কারাগারে বন্দি আছে। ওই যুবক ইউসুফ (আ.)-এর বলে দেওয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী ঠিকই মুক্তি পেয়েছিল। বাদশার ঘনিষ্ঠতাও ফিরে পেয়েছিল। কিন্তু সে ইউসুফ (আ.)-এর বিষয়ে কোনো আলোচনা করার সুযোগ পায়নি। কারণ, কারাগার থেকে মুক্তির পর শয়তান তার মাথা থেকে ইউসুফ (আ.)-এর প্রসঙ্গটিই ভুলিয়ে দেয়। আলোচ্য আয়াতে আরবি 'বিদ'আ সিনীনা' শব্দ দুটির উল্লেখ করা হয়েছে। এটি তিন থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা বোঝায়। যুবকের সঙ্গে সংঘটিত ঘটনার পরও ইউসুফ (আ.) আরো সাত বছর কারাগারে বন্দি ছিলেন।
* মিসরের বাদশা এই যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, শেষমেশ তাঁর এই স্বপ্নের অসিলায়ই ইউসুফ (আ.) সম্মানের সঙ্গে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছিলেন। কারণ বাদশা এই অদ্ভুত স্বপ্ন দেখেই বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ফলে স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা জানতে তিনি দেশের বরেণ্য জ্ঞানী-গুণী, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, জ্যোতিষী এবং অতীন্দ্রিয়বাদীদের পাশাপাশি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও জমায়েত করে স্বপ্নের পুরো ঘটনা তুলে ধরলেন। উপস্থিত কেউই তাঁর স্বপ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পেরে নিজেদের অযোগ্যতাই স্বীকার করে নিল। বলল, 'এটি কল্পনাপ্রসূত স্বপ্ন, এরূপ স্বপ্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই।' এখানে আরবি 'আদগাছু' বহুবচন শব্দের ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থ, এমন পুঁটলি, যাতে বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা ও ঘাসখড় জমা থাকে। অর্থাৎ এ স্বপ্নটি মিশ্র ধরনের। এতে কল্পনার ব্যাপক মিশ্রণ ঘটেছে। এমন অদ্ভুত স্বপ্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই। সত্য স্বপ্ন হলে ব্যাখ্যা বলা সম্ভব ছিল। ইসলামে স্বপ্নব্যাখ্যায় পারদর্শিতা অর্জন দোষের কিছু নয়। এর মাধ্যমেও ইসলামের খেদমত করা সম্ভব। বুজুর্গ মুসলিম মনীষীরা এমনটি চর্চা করে থাকেন।
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মা'আরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments