আইএমএফের প্রতিবেদনরাজনৈতিক দলগুলোকে ভাবতে হবে
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অধিকতর নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করেছে
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সম্প্রতি প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদনে
এতদ্সংশ্লিষ্ট ছয়টি আশঙ্কার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে তাদের আশঙ্কাগুলোকে বাস্তবভিত্তিক বলে মনে করার
যুক্তি আছে। অন্তত গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে যে হারে রাজনৈতিক অসহনশীলতা থেকে
শুরু করে সহিংসতা লক্ষ করা গেছে, তা দেশটির অর্থনৈতিক চলার পথকে
বাধাগ্রস্ত করেছে। একের পর এক হরতাল, মালবাহী ও যাত্রীবাহী যানবাহনে আগুন
দেওয়া, রেললাইন উপড়ে ফেলার মতো ভয়াবহ কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক উৎপাদনশীলতাকে
বিঘি্নত করেছে। রেমিট্যান্স আসার ক্ষেত্রে কিছুটা আশার আলো দেখা গেলেও তৈরি
পোশাক শিল্পে রানা প্লাজা দুর্ঘটনা বড় আঘাত হিসেবে দেখা দিয়েছে। ক্রেতাদের
মধ্যে দ্বিধা তৈরি হয়েছে। তা থেকে উত্তরণের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে-
এমনটা বলা যায় না। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকারের নীতিগত কিছু
ত্রুটি-বিচ্যুতিও। সরকার কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র চালাতে গিয়ে
তেলের ওপর যে বিশাল ভর্তুকি দিয়েছে এবং আগামী দিনেও যে তা অব্যাহত থাকবে,
তার নেতিবাচক তথ্যও বেরিয়ে এসেছে আইএমএফের প্রতিবেদনে। সরকারের যুক্তি ছিল,
দ্রুত বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে এর বিকল্প ছিল না। কিন্তু বর্তমান সরকারের
মেয়াদের শেষ প্রান্তে এসে আজ তথ্য মিলিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার
সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ ও তেলের ওপর ২৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে সক্ষম
সরকার কেন প্রয়োজনীয় নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপন করতে পারেনি, তা
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আকারে দেখা দেয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনে নতুন প্রকল্প
বাস্তবায়নে ধীরগতি সংগত কারণেই অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে আশঙ্কায় ফেলেছে- এটাও
মেনে নিতে হবে।
আমদানি-রপ্তানিতে ভারসাম্য সৃষ্টির লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে উৎপাদনশীলতাকে উন্নত করা অপরিহার্য। সেখানে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে তা বিরূপ প্রভাব ফেলবে- এটা রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার ও বিরোধী- উভয় পক্ষেরই দলের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখা প্রয়োজন। নির্বাচনী বছরের গতানুগতিক অস্থিতিশীলতা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর- এটা তাদের উপলব্ধিতে এলে হয়তো কিছুটা রক্ষা পাওয়া যাবে। সেই অনুযায়ী তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করুন আর উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা তাদের কাজ করুক- এমন পরিবেশ বহাল থাকলেই দেশের জন্য মঙ্গল।
আমদানি-রপ্তানিতে ভারসাম্য সৃষ্টির লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে উৎপাদনশীলতাকে উন্নত করা অপরিহার্য। সেখানে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে তা বিরূপ প্রভাব ফেলবে- এটা রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার ও বিরোধী- উভয় পক্ষেরই দলের চেয়ে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখা প্রয়োজন। নির্বাচনী বছরের গতানুগতিক অস্থিতিশীলতা অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর- এটা তাদের উপলব্ধিতে এলে হয়তো কিছুটা রক্ষা পাওয়া যাবে। সেই অনুযায়ী তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। রাজনীতিবিদরা রাজনীতি করুন আর উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা তাদের কাজ করুক- এমন পরিবেশ বহাল থাকলেই দেশের জন্য মঙ্গল।
No comments