পবিত্র কোরআনের আলো-ইউসুফ (আ.)-এর বিরুদ্ধে বানোয়াট অপবাদ
৭৭. কা-লূ--- ইয়্যাসরিক ফাকাদ সারাকা আখুল
লাহূ মিন কাবলু, ফা আসাররাহা- য়ূসুফু ফী নাফসিহী ওয়া লাম য়ুবদিহা- লাহুম,
কা-লা আনতুম শাররুম মাকা-নান, ওয়াল্লা-হু আ'লামু বিমা- তাসিফূনা।
৭৮. কা-লূ য়া--- আয়্যুহাল 'আযীযু ইন্না লাহূ--- আবান শাইখান কাবীরান ফাখুয
আহাদানা মাকা-নাহূ, ইন্না- নারা-কা মিনাল মুহসিনীনা। (সুরা ইউসুফ, আয়াত
৭৭-৭৮)
অনুবাদ : ৭৭. তারা বলতে লাগল, যদি সে (বিনয়ামিন) চুরি করেই থাকে, (তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কারণ) এর আগে তার এক ভাইও চুরি করেছিল।* তখন ইউসুফ প্রকৃত বিষয় নিজের মনে রাখলেন এবং তাদের জানালেন না। মনে মনে বললেন, তোমরা লোক হিসেবে খুবই খারাপ।* তোমরা যা কিছু বলছ, সেসব বিষয়ে আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন। ৭৮. (এ পর্যায়ে) তারা বলতে লাগল, হে আজিজ, তার পিতা আছেন; তিনি খুবই বয়স্ক। আপনি আমাদের একজনকে তার বদলে রেখে দিন। আমরা আপনাকে সদয় আচরণকারী মহান মানুষ বলেই জানি।
তাফসির : * শৈশবে একবার ইউসুফ (আ.)-এর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উঠেছিল। বিনয়ামিনের বর্তমান পরিস্থিতিতে সৎ ভাইয়েরা কেন ভিত্তিহীন ও সাজানো সেই চুরির অপবাদ এখানে উত্থাপন করল, এর ব্যাখ্যা কোরআন শরিফে উল্লেখ করা হয়নি। নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রখ্যাত মুফাসসিরগণ লিখেছেন, ইউসুফ (আ.) শৈশবেই নিজের মাকে হারিয়েছিলেন। ফলে তাঁর লালন-পালন করতেন ফুফু। শৈশবে যেকোনো শিশুর দেখভালের জন্য নারীই সবচেয়ে উপযুক্ত। তিনি নিজে নিজে চলাফেরা করার মতো বয়সে পৌঁছার পর ইয়াকুব (আ.) সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চাইলেন। কিছুতেই তাঁকে দূরে রাখতে সম্মত হচ্ছিলেন না। এদিকে কোলে-পিঠে করে দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করায় ইউসুফের প্রতি ফুফুর স্নেহ-ভালোবাসা এতটাই গভীর ও দৃঢ়তর হয়ে উঠল যে তাঁকে চোখের আড়াল করা তার পক্ষেও সম্ভব ছিল না। ইউসুফের পিতা ও ফুফু অর্থাৎ ভাই-বোনের এমন জটিল পরিস্থিতিতে বোনের কৌশলের কাছে হেরে গেলেন ভাই ইয়াকুব (আ.)। ইসহাক (আ.)-এর কাছ থেকে ফুফু একটি হাঁসুলি পেয়েছিলেন। এটিকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করা হতো। এই হাঁসুলিটিই ইউসুফের কাপড়ের নিচে কোমরে বেঁধে ইয়াকুব (আ.)-এর কাছে তাঁকে হস্তান্তর করলেন। পরে তিনি জোরেশোরে প্রচার শুরু করলেন, হাঁসুলি চুরি হয়ে গেছে। খোঁজাখুঁজি করার পর ইউসুফের কাছ থেকে তা উদ্ধার করা হয়। ইয়াকুব (আ.)-এর শরিয়তের বিধান অনুযায়ী ফুফু এ ঘটনায় ইউসুফকে গোলাম বানিয়ে রাখার অধিকার পেলেন। ইয়াকুব (আ.) এ নিয়ে কোনো আপত্তি তোলেননি। এ ঘটনার পর ফুফু যত দিন জীবিত ছিলেন, ইউসুফ তাঁর তত্ত্বাবধানেই ছিলেন। তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউসুফের জন্মের পর অল্প দিনের ব্যবধানেই বিনয়ামিন জন্মগ্রহণ করে। এই সন্তান প্রসবই মায়ের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। এরপর ইউসুফ এবং বিনইয়ামিন দুজনই ওই ফুফুর তত্ত্বাবধানে লালিত-পালিত হয়েছিলেন। যা হোক, সেই কথিত চুরির অভিযোগকেই এখানে অপবাদ হিসেবে উল্লেখ করা হলো। তা ছাড়া যে ইউসুফকে আল্লাহ তায়ালা নবী বানাবেন, নবীর পরিবারে জন্মও দিয়েছেন, চুরির ঘটনা সংঘটিত করে তাঁকে এমন কলঙ্কযুক্ত করা নিঃসন্দেহে কল্পনার বাইরের বিষয়।
* বাস্তবতা না জেনে আমাকে তোমরা চোর বলছ, অথচ তোমরা আমার সঙ্গে কী ঘটিয়েছ, তা ভুলে গেছ?
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মা'আরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
অনুবাদ : ৭৭. তারা বলতে লাগল, যদি সে (বিনয়ামিন) চুরি করেই থাকে, (তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। কারণ) এর আগে তার এক ভাইও চুরি করেছিল।* তখন ইউসুফ প্রকৃত বিষয় নিজের মনে রাখলেন এবং তাদের জানালেন না। মনে মনে বললেন, তোমরা লোক হিসেবে খুবই খারাপ।* তোমরা যা কিছু বলছ, সেসব বিষয়ে আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন। ৭৮. (এ পর্যায়ে) তারা বলতে লাগল, হে আজিজ, তার পিতা আছেন; তিনি খুবই বয়স্ক। আপনি আমাদের একজনকে তার বদলে রেখে দিন। আমরা আপনাকে সদয় আচরণকারী মহান মানুষ বলেই জানি।
তাফসির : * শৈশবে একবার ইউসুফ (আ.)-এর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ উঠেছিল। বিনয়ামিনের বর্তমান পরিস্থিতিতে সৎ ভাইয়েরা কেন ভিত্তিহীন ও সাজানো সেই চুরির অপবাদ এখানে উত্থাপন করল, এর ব্যাখ্যা কোরআন শরিফে উল্লেখ করা হয়নি। নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রখ্যাত মুফাসসিরগণ লিখেছেন, ইউসুফ (আ.) শৈশবেই নিজের মাকে হারিয়েছিলেন। ফলে তাঁর লালন-পালন করতেন ফুফু। শৈশবে যেকোনো শিশুর দেখভালের জন্য নারীই সবচেয়ে উপযুক্ত। তিনি নিজে নিজে চলাফেরা করার মতো বয়সে পৌঁছার পর ইয়াকুব (আ.) সন্তানকে নিজের কাছে রাখতে চাইলেন। কিছুতেই তাঁকে দূরে রাখতে সম্মত হচ্ছিলেন না। এদিকে কোলে-পিঠে করে দীর্ঘদিন ধরে লালন-পালন করায় ইউসুফের প্রতি ফুফুর স্নেহ-ভালোবাসা এতটাই গভীর ও দৃঢ়তর হয়ে উঠল যে তাঁকে চোখের আড়াল করা তার পক্ষেও সম্ভব ছিল না। ইউসুফের পিতা ও ফুফু অর্থাৎ ভাই-বোনের এমন জটিল পরিস্থিতিতে বোনের কৌশলের কাছে হেরে গেলেন ভাই ইয়াকুব (আ.)। ইসহাক (আ.)-এর কাছ থেকে ফুফু একটি হাঁসুলি পেয়েছিলেন। এটিকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করা হতো। এই হাঁসুলিটিই ইউসুফের কাপড়ের নিচে কোমরে বেঁধে ইয়াকুব (আ.)-এর কাছে তাঁকে হস্তান্তর করলেন। পরে তিনি জোরেশোরে প্রচার শুরু করলেন, হাঁসুলি চুরি হয়ে গেছে। খোঁজাখুঁজি করার পর ইউসুফের কাছ থেকে তা উদ্ধার করা হয়। ইয়াকুব (আ.)-এর শরিয়তের বিধান অনুযায়ী ফুফু এ ঘটনায় ইউসুফকে গোলাম বানিয়ে রাখার অধিকার পেলেন। ইয়াকুব (আ.) এ নিয়ে কোনো আপত্তি তোলেননি। এ ঘটনার পর ফুফু যত দিন জীবিত ছিলেন, ইউসুফ তাঁর তত্ত্বাবধানেই ছিলেন। তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউসুফের জন্মের পর অল্প দিনের ব্যবধানেই বিনয়ামিন জন্মগ্রহণ করে। এই সন্তান প্রসবই মায়ের মৃত্যুর কারণ হয়েছিল। এরপর ইউসুফ এবং বিনইয়ামিন দুজনই ওই ফুফুর তত্ত্বাবধানে লালিত-পালিত হয়েছিলেন। যা হোক, সেই কথিত চুরির অভিযোগকেই এখানে অপবাদ হিসেবে উল্লেখ করা হলো। তা ছাড়া যে ইউসুফকে আল্লাহ তায়ালা নবী বানাবেন, নবীর পরিবারে জন্মও দিয়েছেন, চুরির ঘটনা সংঘটিত করে তাঁকে এমন কলঙ্কযুক্ত করা নিঃসন্দেহে কল্পনার বাইরের বিষয়।
* বাস্তবতা না জেনে আমাকে তোমরা চোর বলছ, অথচ তোমরা আমার সঙ্গে কী ঘটিয়েছ, তা ভুলে গেছ?
তাফসিরে ইবনে কাছির ও মা'আরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments