কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব ঋণ সুদে-আসলে শোধ করছে সরকার by কাওসার রহমান
অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে সরকারের উন্নয়ন
কর্মকা-ে গতিলাভ করেছে। ফলে অতিরিক্ত ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে সরকারকে
ব্যাংকের দারস্থ হতে হচ্ছে। তবে অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর বিধায় সরকার এবার
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোন ঋণ নিচ্ছে না।
বরং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার উল্টো আগের নেয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব ঋণ সুদ-আসলে পরিশোধ করে দিয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, অর্থবছরের শেষে এসে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়ে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের এটাই শেষ বছর। এ বছরের শেষ অথবা আগামী বছরের প্রথম দিকে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হবে। ফলে এ সময়ে এসে সরকারের খরচের মাত্রাটা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। ইতোমধ্যে তাঁর প্রতিফলনও ঘটছে সরকারের ব্যাংক ঋণের খতিয়ানে। জুন মাসে এসে প্রায় প্রতিদিনই সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। নয় দিনেই ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার নিয়েছে ৪ হাজার ১২০ কোটি টাকা ঋণ। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, গ্যাস-বিদ্যুতসহ অবকাঠামো খাতের সমস্যার কারণে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবাহ কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে প্রচুর অলস অর্থ পড়ে আছে। এ অলস অর্থ সরকার উন্নয়ন কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ বাড়াতে চাইছে। আর এ কারণেই সরকার ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে। তবে ব্যাংক ঋণ নিয়ে ভোটের জন্য রাজনৈতিক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করলে সেই ঋণ এক ধরনের অপচয়ে পরিণত হবে। তা অর্থনীতির জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়নের এ হার ছিল ৪৫ শতাংশ। তবে চলতি অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত সরকার উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর ৬৩ শতাংশ। শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণ করতেই জুন মাসে এসে উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণ করতে হলে জুন মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে ব্যয় করতে হবে প্রায় ২০ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা।
নির্বাচনের বছর হলেও উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে এবার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে কৌশলের আশ্রয় নিতে দেখা যাচ্ছে সরকারকে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোন ঋণ নিচ্ছে না। উল্টো আগের নেয়া ঋণের সুদ-আসল পরিশোধ করে দিয়েছে।
জানা যায়, বিদায়ী ২০১২-১৩ অর্থবছরের ১১ মাসে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও শেষ দিকে এসে তা অনেক বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১২ হাজার ৬১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার। আর গত ১২ জুন পর্যন্ত এ ঋণ বেড়ে ১৬ হাজার ৭৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এই ১২ দিনের মধ্যে সরকারী ছুটি ছিল তিন দিন। বাকি নয় কার্যদিবসে ৪ হাজার ১২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
অবশ্য সরকার পরিকল্পনা করেই এ ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধি করেছে। ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধির এই পরিকল্পনা সরকারের সংশোধিত বাজেটেই প্রতিফলিত হয়েছে। শেষ দিকে এসে ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নেবে, এ কারণেই সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ মাহবুব আলী বলেন, ‘অর্থবছরের শেষ সময়ে সরকারের উন্নয়ন কাজের গতি বেড়ে যায়। সে খরচ শুধু রাজস্ব আয় দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়। সে কারণেই সরকারকে বাধ্য হয়ে ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে প্রচুর অলস অর্থ পড়ে আছে। এই অর্থ ঋণ নিয়ে উন্নয়ন কাজে লাগালে সমস্যা নেই। তবে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ এই অর্থের ব্যয় না করলেই হলো।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৬২৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ১২ জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৮৮ কোটি ৮২ লাখ টাকায়। তবে আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, বিদায়ী অর্থবছরের ১২ জুন পর্যন্ত সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগের নেয়া ঋণের সুদ-আসল বাবদ ৭ হাজার ৪৫৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা শোধ করে দিয়েছে। বিপরীতে এ সময়ে তফসিলি ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বাজেটে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল, তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে তার চেয়ে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়ে ফেলেছে।
অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে বাজারে টাকার সরবরাহ বেড়ে যায়। এর স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় বেড়ে যায় মূল্যস্ফীতি। এ কারণেই সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের সব ধার শোধ করে দিয়ে মুখাপেক্ষি হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। যদিও ব্যাংক থেকে সরকার বেশি ঋণ নিলে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবাহ কমে যায়।
বিগত ২০১১-১২ অর্থবছরের পুরোটা সময়জুড়ে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল সরকার। ওই অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা ধরা হলেও পরে তা ২৯ হাজার ১১৫ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকে। এরপর অবশ্য সরকারের ব্যাংক ঋণ কমে আসে।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, অর্থবছরের শেষে এসে সরকারের ব্যাংক ঋণ বেড়ে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি স্বাভাবিক ব্যাপার। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের এটাই শেষ বছর। এ বছরের শেষ অথবা আগামী বছরের প্রথম দিকে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হবে। ফলে এ সময়ে এসে সরকারের খরচের মাত্রাটা বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। ইতোমধ্যে তাঁর প্রতিফলনও ঘটছে সরকারের ব্যাংক ঋণের খতিয়ানে। জুন মাসে এসে প্রায় প্রতিদিনই সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে। নয় দিনেই ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার নিয়েছে ৪ হাজার ১২০ কোটি টাকা ঋণ। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, গ্যাস-বিদ্যুতসহ অবকাঠামো খাতের সমস্যার কারণে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবাহ কমে যাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে প্রচুর অলস অর্থ পড়ে আছে। এ অলস অর্থ সরকার উন্নয়ন কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ বাড়াতে চাইছে। আর এ কারণেই সরকার ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে। তবে ব্যাংক ঋণ নিয়ে ভোটের জন্য রাজনৈতিক প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করলে সেই ঋণ এক ধরনের অপচয়ে পরিণত হবে। তা অর্থনীতির জন্য কোন সুফল বয়ে আনবে না।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে (জুলাই-মার্চ) সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৪৯ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বাস্তবায়নের এ হার ছিল ৪৫ শতাংশ। তবে চলতি অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত সরকার উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর ৬৩ শতাংশ। শতভাগ বাস্তবায়নের লক্ষ্য পূরণ করতেই জুন মাসে এসে উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণ করতে হলে জুন মাসে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে ব্যয় করতে হবে প্রায় ২০ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা।
নির্বাচনের বছর হলেও উন্নয়নমূলক কাজ করতে গিয়ে এবার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে কৌশলের আশ্রয় নিতে দেখা যাচ্ছে সরকারকে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোন ঋণ নিচ্ছে না। উল্টো আগের নেয়া ঋণের সুদ-আসল পরিশোধ করে দিয়েছে।
জানা যায়, বিদায়ী ২০১২-১৩ অর্থবছরের ১১ মাসে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও শেষ দিকে এসে তা অনেক বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১২ হাজার ৬১২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার। আর গত ১২ জুন পর্যন্ত এ ঋণ বেড়ে ১৬ হাজার ৭৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এই ১২ দিনের মধ্যে সরকারী ছুটি ছিল তিন দিন। বাকি নয় কার্যদিবসে ৪ হাজার ১২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
অবশ্য সরকার পরিকল্পনা করেই এ ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধি করেছে। ব্যাংক ঋণ বৃদ্ধির এই পরিকল্পনা সরকারের সংশোধিত বাজেটেই প্রতিফলিত হয়েছে। শেষ দিকে এসে ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নেবে, এ কারণেই সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্যমাত্রা ২৩ হাজার কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ মাহবুব আলী বলেন, ‘অর্থবছরের শেষ সময়ে সরকারের উন্নয়ন কাজের গতি বেড়ে যায়। সে খরচ শুধু রাজস্ব আয় দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়। সে কারণেই সরকারকে বাধ্য হয়ে ব্যাংকের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকগুলোতে প্রচুর অলস অর্থ পড়ে আছে। এই অর্থ ঋণ নিয়ে উন্নয়ন কাজে লাগালে সমস্যা নেই। তবে ‘রাজনৈতিক বিবেচনায়’ এই অর্থের ব্যয় না করলেই হলো।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৬২৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ১২ জুন শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৮৮ কোটি ৮২ লাখ টাকায়। তবে আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, বিদায়ী অর্থবছরের ১২ জুন পর্যন্ত সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগের নেয়া ঋণের সুদ-আসল বাবদ ৭ হাজার ৪৫৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা শোধ করে দিয়েছে। বিপরীতে এ সময়ে তফসিলি ব্যাংক থেকে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বাজেটে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার যে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল, তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে তার চেয়ে ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়ে ফেলেছে।
অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে বাজারে টাকার সরবরাহ বেড়ে যায়। এর স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় বেড়ে যায় মূল্যস্ফীতি। এ কারণেই সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের সব ধার শোধ করে দিয়ে মুখাপেক্ষি হয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর। যদিও ব্যাংক থেকে সরকার বেশি ঋণ নিলে বেসরকারী খাতে ঋণ প্রবাহ কমে যায়।
বিগত ২০১১-১২ অর্থবছরের পুরোটা সময়জুড়ে ব্যাংক ঋণ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল সরকার। ওই অর্থবছরের মূল বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ১৮ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা ধরা হলেও পরে তা ২৯ হাজার ১১৫ কোটি টাকায় গিয়ে ঠেকে। এরপর অবশ্য সরকারের ব্যাংক ঋণ কমে আসে।
No comments