রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিভবন ও গার্মেন্ট মালিকদের সঙ্গে পৌরসভা সরকারি দুই সংস্থাও দায়ী
সাভারের রানা প্লাজা ধসের ৬৪ দিনের মাথায়
এসে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করল পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
তাদের তদন্তে ওই ঘটনায় শ্রমিকদের মৃত্যুর জন্য ভবন মালিক সোহেল রানার
পাশাপাশি পোশাক কারখানার মালিকদের দায়ী করা হয়েছে।
একই
সঙ্গে ভবনধসের দায় সাভার পৌরসভা এবং সরকারি সংস্থা কলকারখানা পরিদর্শন
অধিদপ্তর ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকেও (রাজউক) দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএর গঠিত ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনার জন্য ভবন মালিক, কারখানার মালিক, সাভার পৌরসভা ও কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছে। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকের মৃত্যু হত্যা না দুর্ঘটনা, তা বলবেন আদালত।
গত ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১২৯ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ঘটনা তদন্তে ৩০ এপ্রিল তদন্ত কমিটি গঠন করে বিজিএমইএ। গতকাল বুধবার কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তা পারেনি কমিটি। বিজিএমইএ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কয়েকটি পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হওয়াকে এ বিলম্বের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তদন্ত কমিটি ১০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। তবে ৩৫ জনের তথ্য গৃহীত হয়।
প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বিজিএমইএর সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি। প্রতিবেদনে ছয়তলার অনুমোদন নিয়ে ৯ তলা ভবন নির্মাণ; নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার; ভবনের ভারবহন ক্ষমতা কম (৩৫০০ পিএসআইয়ের জায়গায় ২৩০০ পিএসআই) হওয়া; ফ্লোরে জেনারেটর থাকা; ছাদে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের চিলার স্থাপন; কারখানাগুলোতে বয়লার, জেনারেটর ও বিপুল পরিমাণ যন্ত্র স্থাপন; অতিরিক্ত কাঁচামালসহ কাপড় ও তৈরি পোশাক মজুদ রাখা; বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মরত থাকা এবং ধসের দিন ফাটল ধরা ভবনে সব জেনারেটর একসঙ্গে চালু করায় কম্পন বৃদ্ধিকে রানা প্লাজা ধসের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে ধসের ঘটনা তুলে ধরে বলা হয়, ২৩ এপ্রিল আনুমানিক সকাল সোয়া ১০টার দিকে ভবনের তৃতীয় তলার পিলারে একটি আনুভূমিক ও দুটি উলম্ব ফাটলের সৃষ্টি হয়। এর ফলে ভবনে কর্মরত সবার মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হলে সবাই বাইরে বেরিয়ে যান। এ ঘটনা ভবনের মালিক সোহেল রানা ও তাঁর বাবাকে জানানো হয়। ওই সংবাদের ভিত্তিতে ভবনের মালিক পুলিশ, সাভার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে কারখানার ফাটল পর্যবেক্ষণ করেন।
ওই সময় বিজিএমইএর দুজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিদর্শনকারীদের দেখতে পান এবং তাঁরা কারখানার মালিকদের ইমারত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ভবন পরীক্ষা ও বিজিএমইএর পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী সময়ে কারখানাটি চালানোর নির্দেশনা দেন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে আরো বলা হয়, ভবনের মালিক ওই সময় ঘোষণা দেন যে ভবনটির ১০০ বছরেও কিছু হবে না এবং তিনি কারখানার মালিকদের কারখানা খোলা রাখতে বলেন। ভবনের মালিক ও স্থানীয় প্রশাসনের মতামতের ভিত্তিতে মিলাদের ব্যবস্থা করা হয় এবং আল্লাহর কাছে শুকরানা আদায় করে যথানিয়মে পরের দিন কারখানাগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
২৪ এপ্রিল সকালে ভবনের মালিক সোহেল রানা নিজে উপস্থিত থেকে আগত শ্রমিকদের কাজে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করেন এবং নিজেও ভবনটিতে তাঁর কার্যালয়ে যান। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর জেনারেটর চালু হয়। সকাল আনুমানিক ৯টা ১৫ মিনিটে ভবনটি ধসে পড়ে। তখন কারখানার মালিকরা সেখানে পৌঁছাননি বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনের সুপারিশ অংশে ছয়তলার অনুমোদন নিয়ে ৯ তলা ভবন নির্মাণ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর ব্যবহার, ফাটল দেখা দেওয়ার পরও সব কার্যক্রম বন্ধ না করা, কারখানার মালিকদের ভুল তথ্য প্রদান ও কারখানা খোলা রাখার জন্য চাপ প্রয়োগের দায়ে ভবনের মালিককে আইনের আওতায় নেওয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে কারখানার মালিকদের দায় সম্পর্কে বলা হয়, বিজিএমইএ অভিজ্ঞ প্রকৌশলী দিয়ে ভবন পরীক্ষা করে কারখানা চালানোর নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও ভবনের মালিকের চাপে ও তাঁর কথার ওপর নির্ভর করে কারখানার মালিকরা কারখানাগুলো খোলা রাখায় এ ধরনের দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। তাই কারখানার মালিকদেরও আইনের আওতায় আনা যেতে পারে।
ভবনের অনুমোদন ছয়তলার জায়গায় ৯ তলা নির্মাণ করার বিষয়টি তদারক করতে ব্যর্থ হওয়ায় পৌরসভার তদারকি কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়মিত তদারক না করা ও প্রয়োজনীয় পরিদর্শন ছাড়া লাইসেন্স প্রদান করায় কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
পরে ভবন তৈরির সময় মাটি পরীক্ষা ও যথাযথভাবে ভবন তৈরি করা এবং তদারকি সংস্থাগুলো কর্তৃক যথাযথ নিরীক্ষা করে ভবনের অনুমোদন ও কারখানার লাইসেন্স দেওয়ার সুপারিশ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।
বিজিএমইএর গঠিত ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনার জন্য ভবন মালিক, কারখানার মালিক, সাভার পৌরসভা ও কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনা যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছে। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকের মৃত্যু হত্যা না দুর্ঘটনা, তা বলবেন আদালত।
গত ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১২৯ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ঘটনা তদন্তে ৩০ এপ্রিল তদন্ত কমিটি গঠন করে বিজিএমইএ। গতকাল বুধবার কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তা পারেনি কমিটি। বিজিএমইএ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কয়েকটি পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হওয়াকে এ বিলম্বের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তদন্ত কমিটি ১০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। তবে ৩৫ জনের তথ্য গৃহীত হয়।
প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন বিজিএমইএর সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি। প্রতিবেদনে ছয়তলার অনুমোদন নিয়ে ৯ তলা ভবন নির্মাণ; নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার; ভবনের ভারবহন ক্ষমতা কম (৩৫০০ পিএসআইয়ের জায়গায় ২৩০০ পিএসআই) হওয়া; ফ্লোরে জেনারেটর থাকা; ছাদে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের চিলার স্থাপন; কারখানাগুলোতে বয়লার, জেনারেটর ও বিপুল পরিমাণ যন্ত্র স্থাপন; অতিরিক্ত কাঁচামালসহ কাপড় ও তৈরি পোশাক মজুদ রাখা; বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মরত থাকা এবং ধসের দিন ফাটল ধরা ভবনে সব জেনারেটর একসঙ্গে চালু করায় কম্পন বৃদ্ধিকে রানা প্লাজা ধসের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে ধসের ঘটনা তুলে ধরে বলা হয়, ২৩ এপ্রিল আনুমানিক সকাল সোয়া ১০টার দিকে ভবনের তৃতীয় তলার পিলারে একটি আনুভূমিক ও দুটি উলম্ব ফাটলের সৃষ্টি হয়। এর ফলে ভবনে কর্মরত সবার মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হলে সবাই বাইরে বেরিয়ে যান। এ ঘটনা ভবনের মালিক সোহেল রানা ও তাঁর বাবাকে জানানো হয়। ওই সংবাদের ভিত্তিতে ভবনের মালিক পুলিশ, সাভার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে কারখানার ফাটল পর্যবেক্ষণ করেন।
ওই সময় বিজিএমইএর দুজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিদর্শনকারীদের দেখতে পান এবং তাঁরা কারখানার মালিকদের ইমারত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ভবন পরীক্ষা ও বিজিএমইএর পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী সময়ে কারখানাটি চালানোর নির্দেশনা দেন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে আরো বলা হয়, ভবনের মালিক ওই সময় ঘোষণা দেন যে ভবনটির ১০০ বছরেও কিছু হবে না এবং তিনি কারখানার মালিকদের কারখানা খোলা রাখতে বলেন। ভবনের মালিক ও স্থানীয় প্রশাসনের মতামতের ভিত্তিতে মিলাদের ব্যবস্থা করা হয় এবং আল্লাহর কাছে শুকরানা আদায় করে যথানিয়মে পরের দিন কারখানাগুলো খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
২৪ এপ্রিল সকালে ভবনের মালিক সোহেল রানা নিজে উপস্থিত থেকে আগত শ্রমিকদের কাজে যোগদানে উদ্বুদ্ধ করেন এবং নিজেও ভবনটিতে তাঁর কার্যালয়ে যান। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর জেনারেটর চালু হয়। সকাল আনুমানিক ৯টা ১৫ মিনিটে ভবনটি ধসে পড়ে। তখন কারখানার মালিকরা সেখানে পৌঁছাননি বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনের সুপারিশ অংশে ছয়তলার অনুমোদন নিয়ে ৯ তলা ভবন নির্মাণ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর ব্যবহার, ফাটল দেখা দেওয়ার পরও সব কার্যক্রম বন্ধ না করা, কারখানার মালিকদের ভুল তথ্য প্রদান ও কারখানা খোলা রাখার জন্য চাপ প্রয়োগের দায়ে ভবনের মালিককে আইনের আওতায় নেওয়া যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে কারখানার মালিকদের দায় সম্পর্কে বলা হয়, বিজিএমইএ অভিজ্ঞ প্রকৌশলী দিয়ে ভবন পরীক্ষা করে কারখানা চালানোর নির্দেশনা দেওয়া সত্ত্বেও ভবনের মালিকের চাপে ও তাঁর কথার ওপর নির্ভর করে কারখানার মালিকরা কারখানাগুলো খোলা রাখায় এ ধরনের দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। তাই কারখানার মালিকদেরও আইনের আওতায় আনা যেতে পারে।
ভবনের অনুমোদন ছয়তলার জায়গায় ৯ তলা নির্মাণ করার বিষয়টি তদারক করতে ব্যর্থ হওয়ায় পৌরসভার তদারকি কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়মিত তদারক না করা ও প্রয়োজনীয় পরিদর্শন ছাড়া লাইসেন্স প্রদান করায় কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
পরে ভবন তৈরির সময় মাটি পরীক্ষা ও যথাযথভাবে ভবন তৈরি করা এবং তদারকি সংস্থাগুলো কর্তৃক যথাযথ নিরীক্ষা করে ভবনের অনুমোদন ও কারখানার লাইসেন্স দেওয়ার সুপারিশ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে।
No comments