বীমা শিল্পের প্রাণপুরুষ by সালাম মাহমুদ
বীমা শিল্প পৃথিবীব্যাপী এক সম্মানজনক ব্যবসা, তা পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন বীমা শিল্পের প্রবাদপুরুষ তথা বীমা গবেষক এমএ সামাদ। তিনি বৃহত্তর সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১ জানুয়ারি ১৯২৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
শিক্ষাজীবনে একজন তুখোড় মেধাবী ছাত্র ছিলেন এমএ সামাদ। ১৯৪৫ সালে তিনি কলকাতার বিখ্যাত প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে সম্মানসহ বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ইতিহাসে সর্বোচ্চ নম্বরসহ এমএ পাস করেন। তিনি স্বর্ণপদকে ভূষিত হন। এরপর অল ইন্ডিয়া রেডিওর নয়াদিলি্লতে সংবাদ ঘোষক এবং অনুবাদকের দায়িত্বে নিযুক্ত হন। উর্দু ঘেঁষা বাংলা সংবাদ প্রচারের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদী হওয়ায় রেডিও পাকিস্তানের কর্মর্কর্তা জেডএ বোখারীর সঙ্গে তার মতবিরোধ দেখা দেয়। ফলে মাতৃভাষার মর্যাদা ও সম্মান রক্ষার্থে তিনি রেডিওর চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৫১ সালে এমএ সামাদ স্বাধীন ব্যবসা বীমা শিল্পকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এ দেশের বীমা শিল্পকে যখন রাষ্ট্রায়ত্ত করা হলো, তখন প্রথমেই তাকে সুরমা জীবন বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হলো। পরে তিনি অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতা দিয়ে জীবন বীমা করপোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ অর্জন করলেন। বাংলাদেশে বীমা প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত জ্ঞানদানের ক্ষেত্রে এমএ সামাদের নাম সর্বাগ্রে লেখা থাকবে। কারণ বীমা শিল্পের গবেষণা, ডিগ্রি, শিক্ষা, প্রশিক্ষণদানের জন্য তিনি সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। ফলে ১৯৭৩ সালে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী কামরুজ্জামানের সহায়তায় এ দেশের প্রথম এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় বীমা প্রতিষ্ঠান 'বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের ইন্স্যুরেন্স একাডেমীর পরবর্তীকালে গভর্নিং বোর্ডের একজন অন্যতম আজীবন সম্মানিত সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে এমএ সামাদ জীবন বীমা কওপোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালের ২৯ জুলাই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি সাধারণ বীমা কোম্পানী 'বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরন্স কোম্পানি (বিজিআইসি) লিমিটেড'। বিজিআইসি বীমা ব্যবসার ক্ষেত্রে অগ্রপথিক এবং পথপ্রদর্শকের মতো ভূমিকা পালন করছে।
এমএ সামাদ তার কর্মের দক্ষতার পরিচয়ে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানের গুরুদায়িত্ব হাতে নেন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী কর্তৃক শ্রেষ্ঠ বীমা ব্যক্তিত্বের সম্মাননায় ভূষিত হন। এমএ সামাদ শুধু বীমা গবেষকই ছিলেন না, একজন সুলেখকও ছিলেন। 'শনিবারের ছুটি' তার লেখা বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য পাঠক নন্দিত বাস্তব রেখাচিত্রের একটি গ্রন্থ। বীমা শিল্পের ওপর এমএ সামাদ সর্বাধিক গ্রন্থ লিখেছেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য সেমিনার এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে দেশ ও জাতির জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন। ইউএডিপি ফেলোশিপে এমএ সামাদ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বীমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সঙ্গে পরিদর্শন করেছেন।
এমএ সামাদ ছিলেন পরোপকারী। তিনি জীবনযুদ্ধে এক সফল সৈনিক এবং বীমা শিল্পের এক নান্দনিক কারিগর। বর্ণাঢ্য জীবন ছিল তার শান্তির ছায়ায় ঘেরা। বিজিআইসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন এমএ সামাদ তার সহধর্মিণী বেগম ফওজিয়া সামাদ এবং এক পুত্র ও তিন কন্যা, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে ১৭ অক্টোবর ২০০৫ সালে গতায়ু হয়েছেন; কিন্তু তার সৃজনশীল কর্মধারায় বীমাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীর হৃদয়জুড়ে তিনি আজও অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেন। আজ তার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে
স্মরণ করছি।
১৯৫১ সালে এমএ সামাদ স্বাধীন ব্যবসা বীমা শিল্পকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। এ দেশের বীমা শিল্পকে যখন রাষ্ট্রায়ত্ত করা হলো, তখন প্রথমেই তাকে সুরমা জীবন বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হলো। পরে তিনি অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতা দিয়ে জীবন বীমা করপোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ অর্জন করলেন। বাংলাদেশে বীমা প্রশিক্ষণ এবং পেশাগত জ্ঞানদানের ক্ষেত্রে এমএ সামাদের নাম সর্বাগ্রে লেখা থাকবে। কারণ বীমা শিল্পের গবেষণা, ডিগ্রি, শিক্ষা, প্রশিক্ষণদানের জন্য তিনি সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। ফলে ১৯৭৩ সালে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী কামরুজ্জামানের সহায়তায় এ দেশের প্রথম এবং একমাত্র রাষ্ট্রীয় বীমা প্রতিষ্ঠান 'বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী' প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের ইন্স্যুরেন্স একাডেমীর পরবর্তীকালে গভর্নিং বোর্ডের একজন অন্যতম আজীবন সম্মানিত সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে এমএ সামাদ জীবন বীমা কওপোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৮৫ সালের ২৯ জুলাই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি সাধারণ বীমা কোম্পানী 'বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরন্স কোম্পানি (বিজিআইসি) লিমিটেড'। বিজিআইসি বীমা ব্যবসার ক্ষেত্রে অগ্রপথিক এবং পথপ্রদর্শকের মতো ভূমিকা পালন করছে।
এমএ সামাদ তার কর্মের দক্ষতার পরিচয়ে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানের গুরুদায়িত্ব হাতে নেন। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স একাডেমী কর্তৃক শ্রেষ্ঠ বীমা ব্যক্তিত্বের সম্মাননায় ভূষিত হন। এমএ সামাদ শুধু বীমা গবেষকই ছিলেন না, একজন সুলেখকও ছিলেন। 'শনিবারের ছুটি' তার লেখা বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য পাঠক নন্দিত বাস্তব রেখাচিত্রের একটি গ্রন্থ। বীমা শিল্পের ওপর এমএ সামাদ সর্বাধিক গ্রন্থ লিখেছেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অসংখ্য সেমিনার এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে দেশ ও জাতির জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন। ইউএডিপি ফেলোশিপে এমএ সামাদ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বীমা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার সঙ্গে পরিদর্শন করেছেন।
এমএ সামাদ ছিলেন পরোপকারী। তিনি জীবনযুদ্ধে এক সফল সৈনিক এবং বীমা শিল্পের এক নান্দনিক কারিগর। বর্ণাঢ্য জীবন ছিল তার শান্তির ছায়ায় ঘেরা। বিজিআইসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন এমএ সামাদ তার সহধর্মিণী বেগম ফওজিয়া সামাদ এবং এক পুত্র ও তিন কন্যা, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে ১৭ অক্টোবর ২০০৫ সালে গতায়ু হয়েছেন; কিন্তু তার সৃজনশীল কর্মধারায় বীমাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীর হৃদয়জুড়ে তিনি আজও অমর হয়ে আছেন এবং থাকবেন। আজ তার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার সঙ্গে তাকে
স্মরণ করছি।
No comments