বিপন্ন মাওয়া ফেরিঘাট-পারাপার নির্বিঘ্ন হোক
মাওয়ায় ফেরিঘাটগুলো পদ্মার ভাঙনে বিপন্ন। কোনোরকমে টিকে থাকা একটিমাত্র ফেরিঘাট দিয়ে এখন যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। এতে নদীর উভয় তীরে পাঁচ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়ে আছে।
যাত্রীসাধারণও অশেষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। আসন্ন ঈদ ও পূজা উপলক্ষে যারা এই রুট ব্যবহার করে গন্তব্যে পেঁৗছার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা শঙ্কায় রয়েছেন। অবশ্য নৌপরিবহন মন্ত্রী সোমবার মাওয়াঘাটের ভাঙনকবলিত স্থান পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে অন্তত তিনটি নতুন ফেরিঘাট নির্মাণ করে যাত্রী ও যান চলাচল স্বাভাবিক করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীরা তাদের স্বচ্ছন্দ যাতায়াতের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারছেন না। এই রুটটি পুরোপুরি সচল করা না গেলে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের অনেকটা ঘুরপথে গন্তব্যে পেঁৗছতে হবে। তখন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট অথবা মাওয়ায় লঞ্চ ও স্পিডবোটের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ পড়বে। এতে নৌপথে দুর্ঘটনার যেনম আশঙ্কা বাড়বে, তেমনি নদীর অপর পাড়ে গাড়ি পাওয়ার বিড়ম্বনা আর বাড়তি অর্থ ব্যয়ের বোঝা চাপবে তাদের ওপর। পূজা ও ঈদ উপলক্ষে মানুষকে এমনিতেই যাতায়াত বাবদ বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। তার ওপর এই যাতায়াত বাবদ হঠাৎ ব্যয় বৃদ্ধির বোঝাটি যাত্রীদের অনেকের কাছেই যন্ত্রণাদায়ক মনে হবে। এটা ঠিক যে, পদ্মাকে বশ মানানো সহজ কাজ নয়। তবে ফেরিঘাটগুলো যদি সঠিকভাবে নদীর গতিপথ, মাটির ভাঙন সহ্য করার ক্ষমতাসম্পন্ন আধুনিক প্রযুক্তি ও উপকরণ ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়, তাহলে এগুলোর স্থায়িত্ব হবে অনেক বেশি। এটা ঠিক যে, পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে এখানে ফেরিঘাটের প্রয়োজন ফুরোবে। ততদিন পর্যন্ত ফেরিঘাটই যাত্রী ও যানবাহন চলাচলের সাশ্রয়ী মাধ্যম। সুতরাং দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের জন্য মাওয়া ফেরিঘাটের ওপর আরও কয়েক বছর নির্ভর করতে হবে। আমরা আশা করব এবং দক্ষিণাঞ্চলের মানুষও সাগ্রহে অপেক্ষা করবেন, মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী পূজা ও ঈদ উপলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বাচ্ছন্দ্যে গন্তব্যে পেঁৗছানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে নতুন তিনটি ফেরিঘাটের নির্মাণ কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে। তবে জরুরি নির্মাণ বলে এগুলো যাতে যেনতেনভাবে নির্মাণ না করা হয়, সেদিকেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
No comments