সফল কোচ মারুফুল হক
তোফায়েল আহমেদ রবিন ॥ মানুষ হিসেবে একেবারেই সাদামাটা এবং শান্ত স্বভাবের তিনি। খেলা চলাকালে ডাগ আউটে আর সব কোচের মতোই উদ্বেগ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। তবে আবেগ কখনই তাকে স্পর্শ করে না। রেফারির সিদ্ধান্তটাই মেনে নেন।
ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে শুধু খেলোয়াড়দের মতো একটু আদটু রণকৌশল প্রয়োগ করেন আর ভুল ত্রুটি চিহ্নিত করে চেষ্টা করেন সেটি থেকে বেরিয়ে আসার। সংবাদমাধ্যমের সামনেও সাদামাটাই তিনি। এভাবেই চলছে তার কোচিং ক্যারিয়ার। তিনি মারুফুল হক মারুফ। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের বর্তমান কোচ। যার হাত ধরে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র এবার নেমেছে শিরোপার বন্ধ্যত্ব ঘোচাতে। প্রিমিয়ার লীগে আর্বিভাবের পর এখন পর্যন্ত যারা শিরোপার স্বাদ পায়নি, সেই শেখ রাসেল এবার বদ্ধপরিকর। দেশসেরা একঝাঁক ফুটবলার নিয়ে শক্তিশালী দল গড়েছে তারা। ক্লাব কর্মকর্তাদের ভাষায়, আগে শেখ রাসেল চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইট দিত আর এবার তারা মাঠে নেমেছে চ্যাম্পিয়নশীপ জিততে। ভাষাতেই আগের বারের চেয়ে তাদের পার্থক্য পরিষ্কার। আর এই লক্ষ্য পূরণে তাদের মূল কা-ারি কোচ মারুফুল হক।
মারুফ এবার দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন শেখ রাসেলের। গতবার তার ওপরই ছিল দলটির দায়িত্ব। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র আর মারুফুল হকের মধ্যে একটা জায়গায় বেশ মিল। শেখ রাসেল এখনও পর্যন্ত প্রিমিয়ারে কোন শিরোপা জিতেনি, মারুফুল হকও এ পর্যন্ত কোন প্রিমিয়ার শিরোপার স্বাদ পাননি। তাই দল এবং কোচ এই দুয়ের জন্যই এবারের মৌসুম একটা ভিশন পূরণ করার আর একটা অপূর্ণতা দূর করার।
মারুফুল হক বাংলাদেশের কোচিং জগতে এখন পরিচিত একটি নাম। তাকে বরাবরই রাখা হয় সেরাদের কাতারে। অথচ সেরা কোচদের একজন মারুফুল হকের কোটিংয়ে আসাটা কিন্তু হঠাৎ করেই। আর তিনি তেমন পরিচিত কোন ফুটবলারও ছিলেন না। এক সময় খেলতেন ময়মনসিংহ লীগে। সেখানে খেলতে খেলতেই ১৯৯৪ সালে চাকরি পান বুয়েটে (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)। চাকরির পাশাপাশি খেলতে শুরু করেন ঢাকা লীগে। কিন্তু বাদ সাধে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। সাফ জানিয়ে দেয় খেলা যাবে না। অগত্যা মারুফ বুট তুলে রাখতে বাধ্য হন। কিন্তু ছাড়তে পারেননি ফুটবলের মায়া। তখন শুরু করেন কোচিং। একেবারে অচেনা এই জগতে নামার আগে কিংবা ফুটবল ক্যারিয়ার শুরুর আগে মারুফ কখনই ভাবেননি এক সময় কোচিংয়ে আসবেন তিনি। পরে ফুচোরা ওয়ান নামে ফিফার এক কোর্সে অংশ নেন। এখানকার ইন্সট্রাক্টরের কাছ থেকে পান প্রশংসা। তারপর সি-লাইসেন্স, বি-লাইসেন্স হয়ে মারুফ এখন এএফসি-এ লাইসেন্সধারী কোচ। এ পর্যন্ত আসতে পারা মারুফ এখন নিজেই মাঝে মধ্যে অবাক হন। ‘আসলে কখনও ভাবিনি আমি কোচিংয়ে আসব। মোহামেডান-শেখ রাসেলের মতো দলের কোচিং করাব। এ পর্যন্ত আসতে পেরে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ’ বলছিলেন মারুফ।
মারুফ সব সময় কর্মে বিশ্বাসী। শিরোপার সংখ্যাকে তিনি কখনই যোগ্যতার মাপকাঠি বানাতে চান না। তার ভাষায়, ‘টিমে পরিবর্তন আনতে পারলাম কিনা সেটাই বড় কথা। শিরোপা জয়ই তো সব কিছুর মাপকাঠি হতে পারে না।’ ‘নো স্পিড, নো ফুটবল’ এই দর্শনে বিশ্বাসী মারুফের এখনও পর্যন্ত অর্জন ফেডারেশন কাপ-২টি, সুপার কাপ-১টি এবং লীগ রানার্সআপ-৩টি। মারুফের এবার মূল লক্ষ্য লীগ শিরোপা জেতা। এই লক্ষ্যপূরণ হলে তার সাফল্যের পালকে যেমন অধরা একটা প্রাপ্তি যোগ হবে, তেমনি শেখ রাসেলে কলঙ্ক দূর হবে। মারুপ জানালেন, ‘গতবারও আমরা ভাল দল গড়ে কোন শিরোপা জিততে পারিনি। এবার তাই গতবারের দুর্বলতা দূর করতে টিমের শক্তি বাড়িয়েছে। তাই এ বছর লীগসহ যে টুর্নামেন্ট হবে সবগুলোর শিরোপাই আমরা ঘরে তুলতে চাই।’ এ কাজটি যে খুব একটা সহজ হবে না তা সহজেই অনুমান করা যায়। কারণ শিরোপাপ্রত্যাশী দলের মধ্যে রয়েছে আবাহনী, বিজেএমসি ও শেখ রাসেলের মতো দলও। তাই মারুফ এটিকে নিচ্ছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে, ‘আসলে শিরোপাপ্রত্যাশী দলের সংখ্যা বাড়ায় ঘরোয়া ফুটবলটা আকর্ষণীয় হবে। এটা ফুটবলের উন্নয়নে দারুণ এক অনুঘটক। প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝে যদি আমরা শিরোপা জিততে পারি সেটা আরও বড় কৃতিত্বের হবে আমাদের জন্য।’ রফিকুল ইসলাম মানিক, সাইফুর বারী টিটোদের কাতারে দাঁড়িয়েও নিজেকে জাতীয় দলের কোচ হওয়ার যোগ্য মনে করেন না মারুফ। জাতীয় দলের কোচ হওয়ার বাসনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলে, ‘জাতীয় দলের কোচ হতে হলে জাতীয় দলে খেলোয়াড় হতে হবে বা মোহামেডান-আবাহনীর মতো টিমের প্লেয়ার হতে হবে। যেহেতু আমি কোনটাতেই খেলিনি তাই আমি মনে করি সেই যোগ্যতা আমার নেই।’ দেশের তার প্রিয় কোচ সাইফুল বারী টিটোর উদাহরণ টেনে মারুফ বলেন, ‘টিটো ভাই কিন্তু কোচিং শুরু করেছেন আমার অনেক পরে। কিন্তু তিনি আজ জাতীয় দলের কোচ। এর কারণ তিনি ওই পর্যায়ে খেলার পাশাপাশি অল্প সময়েই সেই যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
তাই তাদেরই আমি এক্ষেত্রে এগিয়ে রাখব।’ মারুফের এই কথায় তার বড় মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। বড় কোচ হওয়ার পাশাপাশি তিনি যে একজন বড় মনের মানুষ সেটিরই প্রমাণ মিলল তার কথায়। মারুফ স্বপ্ন দেখেন ইউয়েফা-প্রো লাইসেন্সধারী কোচ হওয়ার। আগামী মাসে তিনি উড়াল দেবেন লন্ডনে সেই কোর্স করতে। প্রথমে ইউয়েফা-এ লাইসেন্স এবং পরে করবেন ইউয়েফা-প্রো লাইসেন্স কোর্স। মারুফের স্বপ্ন পূরণ হোক এটিই সব মারুফভক্তের প্রত্যাশা।
মারুফ এবার দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন শেখ রাসেলের। গতবার তার ওপরই ছিল দলটির দায়িত্ব। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র আর মারুফুল হকের মধ্যে একটা জায়গায় বেশ মিল। শেখ রাসেল এখনও পর্যন্ত প্রিমিয়ারে কোন শিরোপা জিতেনি, মারুফুল হকও এ পর্যন্ত কোন প্রিমিয়ার শিরোপার স্বাদ পাননি। তাই দল এবং কোচ এই দুয়ের জন্যই এবারের মৌসুম একটা ভিশন পূরণ করার আর একটা অপূর্ণতা দূর করার।
মারুফুল হক বাংলাদেশের কোচিং জগতে এখন পরিচিত একটি নাম। তাকে বরাবরই রাখা হয় সেরাদের কাতারে। অথচ সেরা কোচদের একজন মারুফুল হকের কোটিংয়ে আসাটা কিন্তু হঠাৎ করেই। আর তিনি তেমন পরিচিত কোন ফুটবলারও ছিলেন না। এক সময় খেলতেন ময়মনসিংহ লীগে। সেখানে খেলতে খেলতেই ১৯৯৪ সালে চাকরি পান বুয়েটে (বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়)। চাকরির পাশাপাশি খেলতে শুরু করেন ঢাকা লীগে। কিন্তু বাদ সাধে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। সাফ জানিয়ে দেয় খেলা যাবে না। অগত্যা মারুফ বুট তুলে রাখতে বাধ্য হন। কিন্তু ছাড়তে পারেননি ফুটবলের মায়া। তখন শুরু করেন কোচিং। একেবারে অচেনা এই জগতে নামার আগে কিংবা ফুটবল ক্যারিয়ার শুরুর আগে মারুফ কখনই ভাবেননি এক সময় কোচিংয়ে আসবেন তিনি। পরে ফুচোরা ওয়ান নামে ফিফার এক কোর্সে অংশ নেন। এখানকার ইন্সট্রাক্টরের কাছ থেকে পান প্রশংসা। তারপর সি-লাইসেন্স, বি-লাইসেন্স হয়ে মারুফ এখন এএফসি-এ লাইসেন্সধারী কোচ। এ পর্যন্ত আসতে পারা মারুফ এখন নিজেই মাঝে মধ্যে অবাক হন। ‘আসলে কখনও ভাবিনি আমি কোচিংয়ে আসব। মোহামেডান-শেখ রাসেলের মতো দলের কোচিং করাব। এ পর্যন্ত আসতে পেরে আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ’ বলছিলেন মারুফ।
মারুফ সব সময় কর্মে বিশ্বাসী। শিরোপার সংখ্যাকে তিনি কখনই যোগ্যতার মাপকাঠি বানাতে চান না। তার ভাষায়, ‘টিমে পরিবর্তন আনতে পারলাম কিনা সেটাই বড় কথা। শিরোপা জয়ই তো সব কিছুর মাপকাঠি হতে পারে না।’ ‘নো স্পিড, নো ফুটবল’ এই দর্শনে বিশ্বাসী মারুফের এখনও পর্যন্ত অর্জন ফেডারেশন কাপ-২টি, সুপার কাপ-১টি এবং লীগ রানার্সআপ-৩টি। মারুফের এবার মূল লক্ষ্য লীগ শিরোপা জেতা। এই লক্ষ্যপূরণ হলে তার সাফল্যের পালকে যেমন অধরা একটা প্রাপ্তি যোগ হবে, তেমনি শেখ রাসেলে কলঙ্ক দূর হবে। মারুপ জানালেন, ‘গতবারও আমরা ভাল দল গড়ে কোন শিরোপা জিততে পারিনি। এবার তাই গতবারের দুর্বলতা দূর করতে টিমের শক্তি বাড়িয়েছে। তাই এ বছর লীগসহ যে টুর্নামেন্ট হবে সবগুলোর শিরোপাই আমরা ঘরে তুলতে চাই।’ এ কাজটি যে খুব একটা সহজ হবে না তা সহজেই অনুমান করা যায়। কারণ শিরোপাপ্রত্যাশী দলের মধ্যে রয়েছে আবাহনী, বিজেএমসি ও শেখ রাসেলের মতো দলও। তাই মারুফ এটিকে নিচ্ছেন চ্যালেঞ্জ হিসেবে, ‘আসলে শিরোপাপ্রত্যাশী দলের সংখ্যা বাড়ায় ঘরোয়া ফুটবলটা আকর্ষণীয় হবে। এটা ফুটবলের উন্নয়নে দারুণ এক অনুঘটক। প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝে যদি আমরা শিরোপা জিততে পারি সেটা আরও বড় কৃতিত্বের হবে আমাদের জন্য।’ রফিকুল ইসলাম মানিক, সাইফুর বারী টিটোদের কাতারে দাঁড়িয়েও নিজেকে জাতীয় দলের কোচ হওয়ার যোগ্য মনে করেন না মারুফ। জাতীয় দলের কোচ হওয়ার বাসনার কথা জানতে চাইলে তিনি বলে, ‘জাতীয় দলের কোচ হতে হলে জাতীয় দলে খেলোয়াড় হতে হবে বা মোহামেডান-আবাহনীর মতো টিমের প্লেয়ার হতে হবে। যেহেতু আমি কোনটাতেই খেলিনি তাই আমি মনে করি সেই যোগ্যতা আমার নেই।’ দেশের তার প্রিয় কোচ সাইফুল বারী টিটোর উদাহরণ টেনে মারুফ বলেন, ‘টিটো ভাই কিন্তু কোচিং শুরু করেছেন আমার অনেক পরে। কিন্তু তিনি আজ জাতীয় দলের কোচ। এর কারণ তিনি ওই পর্যায়ে খেলার পাশাপাশি অল্প সময়েই সেই যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
তাই তাদেরই আমি এক্ষেত্রে এগিয়ে রাখব।’ মারুফের এই কথায় তার বড় মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। বড় কোচ হওয়ার পাশাপাশি তিনি যে একজন বড় মনের মানুষ সেটিরই প্রমাণ মিলল তার কথায়। মারুফ স্বপ্ন দেখেন ইউয়েফা-প্রো লাইসেন্সধারী কোচ হওয়ার। আগামী মাসে তিনি উড়াল দেবেন লন্ডনে সেই কোর্স করতে। প্রথমে ইউয়েফা-এ লাইসেন্স এবং পরে করবেন ইউয়েফা-প্রো লাইসেন্স কোর্স। মারুফের স্বপ্ন পূরণ হোক এটিই সব মারুফভক্তের প্রত্যাশা।
No comments