লিবিয়ায় গাদ্দাফিকে হত্যার পর বিদ্রোহীরা গণহত্যা চালিয়েছে
গত বছর লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে আটক ও হত্যার পর বিদ্রোহীরা গণহত্যা চালিয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) পরিচালক পিটার বোকার্ট বুধবার জানান, “সির্তে শহরে গাদ্দাফির গাড়িবহরের কমপক্ষে ৬৬ জন বন্দিকে বিদ্রোহীরা হত্যা করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
তিনি বলেন, “তারা গাদ্দাফির ছেলে মুতাসিন গাদ্দাফিকে আহত অবস্থায় বন্দরনগরী মিসরাতায় নিয়ে হত্যা করে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে।”
‘একজন স্বৈরশাসকের মৃত্যু: সিরাতে রক্তাক্ত প্রতিশোধ’ শিরোনামের ৫০ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে গাদ্দাফির জীবনের শেষ কয়েক ঘণ্টার বিবরণও দেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য ও মোবাইল ফোনের ফুটেজের ভিত্তিতে কোন পরিস্থিতিতে গাদ্দাফি নিহত হন তারও উল্লেখ আছে প্রতিবেদনটিতে।
এইচআরডব্লিউর অনুসন্ধান মতে, প্রাপ্ত সাক্ষ্যতে দেখা গেছে মিসরাতাভিত্তিক বিদ্রোহীরা গাদ্দাফির বহরের সদস্যদের আটক ও নিরস্ত্র করার পর তাদের নির্মমভাবে পেটায়। এরপর তারা কাছের মাহারি হোটেলে গাদ্দাফির বহরের কমপক্ষে ৬৬ আটক সদস্যকে হত্যা করে।
এএফপির এক প্রতিনিধি গত বছরের অক্টোবরে সির্ত শহর সফর করেন। সে সময় তিনি আল-মাহারি হোটেলের লনে ৬৫ থেকে ৭০টি পচে যাওয়া লাশের সন্ধান পান। এদের অনেকের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। তার এ তথ্যের সঙ্গে এইচআরডব্লিউয়ের পাওয়া প্রমাণের মিল রয়েছে।
এইচআরডব্লিউ জানিয়েছে, সংস্থাটি গাদ্দাফিবিরোধী যোদ্ধাদের মোবাইল ফোনের ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা গেছে গাদ্দাফির গাড়িবহরের সদস্যদের গালিগালাজ ও তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ মানবাধিকার সংগঠনটি আরো জানায়, মোবাইল ফোনের ফুটেজে দেখা কমপক্ষে ১৭ বন্দিকে পরে মারাহি হোটেলে নিয়ে হত্যা করা হয়।
মানবাধিকার সংস্থাটি জোর দিয়ে জানিয়েছে, এসব সাক্ষ্যপ্রমাণ মুয়াম্মার ও মুতাসিম গাদ্দাফির মৃত্যু সম্পর্কে লিবীয় সরকারের দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তারা জানিয়েছিল, সাবেক স্বৈরশাসক ও তার পুত্র বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে জীবিত অবস্থায় বন্দি করা হলেও তার মাথার জখম থেকে রক্ত ঝরছিল। এতে আরো দেখা যায় বিদ্রোহীরা তাকে বেদম প্রহার ও বেয়নেট দিয়ে আঘাত করছে। সূত্র: এএফপি।
No comments