পবিত্র কোরআনের আলো-প্রিয় বস্তু দান করা না হলে প্রকৃত দানের মর্যাদা অর্জিত হয় না
৯২. লান তানা-লুল বির্রা হাত্তা- তুনফিক্বূ মিম্মা- তুহিব্বূন; ওয়ামা- তুনফিক্বূ মিন শাইয়িন ফাইন্নাল্লা-হা বিহী আ'লীম।
৯৩. কুল্লু ত্ত্বাআ'-মি কা-না হিল্লান লিবানী ইসরা-ঈলা ইল্লা- মা- হার্রামা ইছরা-ঈলু আ'লা- নাফছিহী মিন ক্বাবলি আন তুনায্যালাত্ তাওরা-তু; ক্বুল ফা'তূ বিত্তাওরা-তি ফাত্লূহা- ইন কুনতুম সা-দিক্বীন।
৯৩. কুল্লু ত্ত্বাআ'-মি কা-না হিল্লান লিবানী ইসরা-ঈলা ইল্লা- মা- হার্রামা ইছরা-ঈলু আ'লা- নাফছিহী মিন ক্বাবলি আন তুনায্যালাত্ তাওরা-তু; ক্বুল ফা'তূ বিত্তাওরা-তি ফাত্লূহা- ইন কুনতুম সা-দিক্বীন।
৯৪. ফামানিফ্তারা- আ'লাল্লা-হিল কাযিবা মিম্ বা'দি যা-লিকা ফাউলা-ইকা হুমুয্ যা-লিমূন।
[সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯২-৯৪]
অনুবাদ
৯২. তোমরা কখনো 'নেকি' অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের পছন্দের সম্পদ ব্যয় করবে। তোমরা যা কিছুই ব্যয় করো আল্লাহ তায়ালা তা জানেন।
৯৩. সব হালাল খাবারই বনি ইসরাইলের জন্য হালাল ছিল। বরং তাওরাত নাজিলের আগে ইসরাইল নিজের জন্য দু-একটা হারাম করেছিল। (হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা (এতে সন্দেহ করলে) তাওরাত নিয়ে এসো এবং পড়ো, যদি তোমরা তোমাদের দাবির ব্যাপারে সত্যবাদী হয়ে থাক।
৯৪. যারা এর পরও আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করে, তারা নিঃসন্দেহে জালেম।
ব্যাখ্যা
৯২ নম্বর আয়াতে প্রকৃত দান কেমন হওয়া উচিত, তা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহর রাস্তায় যেকোনো হালাল সম্পদ ব্যয় করাই সওয়াবের কাজ। কিন্তু উত্তম দান হলো প্রিয় বস্তু দান করা। দান অনেক প্রকারের আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে নিম্নমানের দান হলো অনুগ্রহের দান। আর সবচেয়ে উঁচুমানের দান হলো ভালোবাসার দান। যার প্রচুর সম্পদ আছে, তিনি দয়া করে গরিব-মিসকিনকে কিছু দান করতে পারেন_এটা অনুগ্রহের দান। সে দানের জন্য তিনি অবশ্যই সওয়াব পাবেন এবং সে দানে সমাজ কিছু না কিছু উপকৃতও হয়। এই আয়াতে বলা হয়েছে, সেই দানে কোনো সওয়াব নেই, যে দানে ভালোবাসা নেই। অর্থাৎ প্রিয় জিনিস দান না করা হলে সওয়াব পাওয়া যাবে না। এখানে সবচেয়ে উঁচুমানের দান বা উত্তম দানের কথা বলা হয়েছে। জগতের সব মহৎ কাজের জন্যই উত্তম দানের প্রয়োজন হয়েছে, প্রয়োজন হয় সর্বকালে। সে দান অনুগ্রহের দান হলে চলে না, সে দান হতে হয় ভালোবাসার দান, প্রিয় বস্তু দান। রাসুল (সা.)-এর আমলে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য বিপুল অর্থ-বিত্তের প্রয়োজন হয়েছিল। রাসুলের প্রিয় সাহাবিগণ নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে তাঁদের প্রিয় সম্পদ রাসুলের পদতলে এনে রেখেছেন। সেগুলো ছিল প্রিয় সম্পদ দানের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
৯৩ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম : ইহুদিরা মুসলমানদের উটের মাংস এবং দুধ খাওয়াকে নিন্দনীয় মনে করত। তারা রাসুল (সা.)-কে বলত, আপনি উটের মাংস ও উটের দুধকে হালাল মনে করে খান আর আপনি ইবরাহিমের ধর্মের ওপর আছেন বলে দাবি করেন। অথচ উটের মাংস ও দুধ হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর আমল থেকে, এমনকি হজরত নূহ (আ.)-এর আমল থেকেই হারাম। ইহুদিদের এই দাবি খণ্ডনের জন্য এ আয়াত নাজিল হয়। এ আয়াতে বলা হয়েছে, মুসলমানদের জন্য যা হালাল, তা বনিইসরাইলদের জন্যও হালাল। তবে ইসরাইল বা ইসহাক (আ.) নিজে ইচ্ছা করে কিছু জিনিস খেতেন না_এর মধ্যে রয়েছে উটের মাংস ও উটের দুধ। উল্লেখ করা প্রয়োজন, ইহুদিরা তখন উটের মাংস ও দুধ খেত না, অথচ তাদের তাওরাত কিতাবে এ জিনিস নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো দলিল নেই। এ জন্যই এ বিতর্কের মীমাংসার জন্য এখানে তাওরাত নিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ আয়াতের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হলো, আল্লাহর তরফ থেকে উটের মাংস ও দুধ নিষিদ্ধ করা হয়নি। যারা এ কথা বলছে, তারা আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
[সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৯২-৯৪]
অনুবাদ
৯২. তোমরা কখনো 'নেকি' অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা তোমাদের পছন্দের সম্পদ ব্যয় করবে। তোমরা যা কিছুই ব্যয় করো আল্লাহ তায়ালা তা জানেন।
৯৩. সব হালাল খাবারই বনি ইসরাইলের জন্য হালাল ছিল। বরং তাওরাত নাজিলের আগে ইসরাইল নিজের জন্য দু-একটা হারাম করেছিল। (হে নবী!) আপনি বলুন, তোমরা (এতে সন্দেহ করলে) তাওরাত নিয়ে এসো এবং পড়ো, যদি তোমরা তোমাদের দাবির ব্যাপারে সত্যবাদী হয়ে থাক।
৯৪. যারা এর পরও আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করে, তারা নিঃসন্দেহে জালেম।
ব্যাখ্যা
৯২ নম্বর আয়াতে প্রকৃত দান কেমন হওয়া উচিত, তা বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহর রাস্তায় যেকোনো হালাল সম্পদ ব্যয় করাই সওয়াবের কাজ। কিন্তু উত্তম দান হলো প্রিয় বস্তু দান করা। দান অনেক প্রকারের আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে নিম্নমানের দান হলো অনুগ্রহের দান। আর সবচেয়ে উঁচুমানের দান হলো ভালোবাসার দান। যার প্রচুর সম্পদ আছে, তিনি দয়া করে গরিব-মিসকিনকে কিছু দান করতে পারেন_এটা অনুগ্রহের দান। সে দানের জন্য তিনি অবশ্যই সওয়াব পাবেন এবং সে দানে সমাজ কিছু না কিছু উপকৃতও হয়। এই আয়াতে বলা হয়েছে, সেই দানে কোনো সওয়াব নেই, যে দানে ভালোবাসা নেই। অর্থাৎ প্রিয় জিনিস দান না করা হলে সওয়াব পাওয়া যাবে না। এখানে সবচেয়ে উঁচুমানের দান বা উত্তম দানের কথা বলা হয়েছে। জগতের সব মহৎ কাজের জন্যই উত্তম দানের প্রয়োজন হয়েছে, প্রয়োজন হয় সর্বকালে। সে দান অনুগ্রহের দান হলে চলে না, সে দান হতে হয় ভালোবাসার দান, প্রিয় বস্তু দান। রাসুল (সা.)-এর আমলে ইসলামের প্রচার ও প্রসারের জন্য বিপুল অর্থ-বিত্তের প্রয়োজন হয়েছিল। রাসুলের প্রিয় সাহাবিগণ নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে তাঁদের প্রিয় সম্পদ রাসুলের পদতলে এনে রেখেছেন। সেগুলো ছিল প্রিয় সম্পদ দানের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
৯৩ নম্বর আয়াতের শানেনুজুল এ রকম : ইহুদিরা মুসলমানদের উটের মাংস এবং দুধ খাওয়াকে নিন্দনীয় মনে করত। তারা রাসুল (সা.)-কে বলত, আপনি উটের মাংস ও উটের দুধকে হালাল মনে করে খান আর আপনি ইবরাহিমের ধর্মের ওপর আছেন বলে দাবি করেন। অথচ উটের মাংস ও দুধ হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর আমল থেকে, এমনকি হজরত নূহ (আ.)-এর আমল থেকেই হারাম। ইহুদিদের এই দাবি খণ্ডনের জন্য এ আয়াত নাজিল হয়। এ আয়াতে বলা হয়েছে, মুসলমানদের জন্য যা হালাল, তা বনিইসরাইলদের জন্যও হালাল। তবে ইসরাইল বা ইসহাক (আ.) নিজে ইচ্ছা করে কিছু জিনিস খেতেন না_এর মধ্যে রয়েছে উটের মাংস ও উটের দুধ। উল্লেখ করা প্রয়োজন, ইহুদিরা তখন উটের মাংস ও দুধ খেত না, অথচ তাদের তাওরাত কিতাবে এ জিনিস নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো দলিল নেই। এ জন্যই এ বিতর্কের মীমাংসার জন্য এখানে তাওরাত নিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ আয়াতের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হলো, আল্লাহর তরফ থেকে উটের মাংস ও দুধ নিষিদ্ধ করা হয়নি। যারা এ কথা বলছে, তারা আল্লাহর ওপর মিথ্যা আরোপ করছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments