প্রবাদ-প্রবচনের-অসারতা
আমাদের বাংলা ভাষায় রয়েছে নানা প্রবাদ-প্রবচন। কথায় কথায় আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই সেগুলো ব্যবহার করি। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রবাদ-প্রবচনগুলো যেন অসার হয়ে পড়েছে। এরই কিছু নমুনা দেখাচ্ছেন আশিকুর রহমান
ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়
আমরা বলি, ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়। কিন্তু হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে, আমরা নিজেরাই ন্যাড়ার মতো বারবার বেলতলায় যাই। তা না হলে জেনেশুনে কী করে আমরা আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের ভোট দিয়ে যাই? তাই বলতে পারেন, প্রতি পাঁচ বছর পর পর আমরা বেলতলায় যাচ্ছি।
দশের লাঠি একের বোঝা
পৃথিবীর সব দেশে এই প্রবাদ চললেও আমাদের দেশে মনে হয় আর চলছে না! এই দেশে একজন ক্ষমতাশালী ব্যক্তি ১০ জন কেন, শতজনের কাছে বোঝাস্বরূপ। হাজার হাজার মানুষ মিলে যা করতে পারে না, একজন ক্ষমতাবান চোখের পলকে সে কাজ করে ফেলেন।
অর্থই অনর্থের মূল
কথাটা মনে হয় আপনি নিজেই আর বিশ্বাস করবেন না; বরং যিনি এই প্রবাদটা চালু করেছেন, তাঁকে পারলে গুম করে ফেলা দরকার। কারণ, অর্থ দিয়েই বিচার হয় সবকিছুর। যার টাকা আছে, তার প্রতি অটোমেটিক শ্রদ্ধা চলে আসে—উল্টো টাকাপয়সাহীন ভালো মানুষকে আমরা পারলে এড়িয়ে চলি।
কাকের মাংস কাকে খায় না
কাকের মাংস কাকে না-ও খেতে পারে, কিন্তু স্বজাতির ক্ষতি করতে আমাদের চেয়ে সিদ্ধহস্ত আর কেউ নেই। নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্য মানুষ তো দূরের কথা, আমরা নিজের বাবা-ভাইদেরও ছাড় দিই না। বরং এই প্রবাদ এখন বললে কাক নিজেই মানুষের গলায় হেসে উঠতে পারে।
ভাঙবে তো মচকাবে না
এ ধরনের কিছু লোক ছিল আমাদের দেশে, কিন্তু এখন খুঁজে পাওয়া দায়। সুযোগ বুঝে টাকা ছাড়লে কিংবা জায়গামতো আপনাকে পৌঁছে দিলে বা বিশেষ বাহিনীর কাছে পাঠালে আপনি ভাঙবেন তো বটেই, একেবারে পুরো মচকে যাবেন। কোনো আদর্শ আপনার আর কাজ করবে না।
কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না
কথা সত্য, কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। কিন্তু এই দেশে আপনি কষ্ট করলেও কেষ্ট পাবেন না; উল্টো কষ্ট করার দায়ে আপনি হয়ে যাবেন ভুক্তভোগী—মানুষ চাইবে আপনাকে দিয়ে আরও কষ্ট করাতে! কেষ্টর নাম-গন্ধও পাবেন না। অন্যদিকে আপনার যদি থাকে টাকা, মামা আর ক্ষমতা—কষ্ট তো করতেই হবে না, উল্টো কেষ্ট আপনার কাছে ছুটে চলে আসবে।
ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়
বছরের পর বছর এ দেশের মহান দুর্নীতিবাজেরা আমজনতার গায়ে সুন্দরভাবে ইট মেরে যাচ্ছে। হিসেবে আমাদেরকে পাটকেল মারা উচিত, কিন্তু পাটকেল তো বহুদূরের বিষয়, তাদের গায়ে ফুলের টোকাও দিতে পারছি না।
পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়
সাধারণত অসৎ পথে উপার্জন প্রায়শ্চিত্তে যায় বলে শোনা যায়। দিন বদলেছে, সব সরকারের আমলে আছে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ। এই সুযোগে তেমন ক্ষতি তো হবেই না, উল্টো হাসতে হাসতে পাপের ধন অথবা কালোটাকা সাদা করে ফেলতে পারেন অনেকেই। তা ছাড়া দেশের অনেক জায়গায় কালোটাকা বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ তো আছেই।
দুই নৌকায় পা দেওয়া
দুই নৌকায় পা দেওয়াকে আগে বিপজ্জনক অবস্থা হিসেবে মানা হতো, কিন্তু এখন যার পা দুই নৌকায় থাকে, তাকেই বুদ্ধিমান বলে মানা হয়। সব সময় তার প্রভাব-প্রতিপত্তি বজায় থাকে। শুধু তা-ই নয়, সবাই তার কাছেই যায় পরামর্শ নিতে। কেউ কেউ তো পারলে দুটো পা-ই তিন বা চার নৌকায় দিয়ে রাখে।
শাক দিয়ে মাছ ঢাকা
কয়েক বছর আগেও আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা তথা ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা শাক দিয়ে নিজেদের মাছ ঢাকার চেষ্টা করতেন; কিন্তু এখন ওই সবের বালাই নেই। কোনো দরকার পড়ে না শাকের, বরং যার মাছ বেশি দেখা যায়, তার প্রতি সালাম পড়ে বেশি।
ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়
কিছু দিন আগেও প্রবাদটা ভালোভাবে চালু ছিল আমাদের দেশে। কিন্তু এই দেশের সিস্টেমের কারণে প্রবাদটা পালিয়ে গেছে। আপনার ইচ্ছা কি, সদিচ্ছা থাকলেও আপনি কাজ করতে পারবেন না। আপনাকে এমন ঘোরান দেওয়া হবে যে শেষ পর্যন্ত উপায় যদি পেয়েও যান, আপনার ইচ্ছাটা যাবে মরে।
আমরা বলি, ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়। কিন্তু হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে, আমরা নিজেরাই ন্যাড়ার মতো বারবার বেলতলায় যাই। তা না হলে জেনেশুনে কী করে আমরা আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের ভোট দিয়ে যাই? তাই বলতে পারেন, প্রতি পাঁচ বছর পর পর আমরা বেলতলায় যাচ্ছি।
দশের লাঠি একের বোঝা
পৃথিবীর সব দেশে এই প্রবাদ চললেও আমাদের দেশে মনে হয় আর চলছে না! এই দেশে একজন ক্ষমতাশালী ব্যক্তি ১০ জন কেন, শতজনের কাছে বোঝাস্বরূপ। হাজার হাজার মানুষ মিলে যা করতে পারে না, একজন ক্ষমতাবান চোখের পলকে সে কাজ করে ফেলেন।
অর্থই অনর্থের মূল
কথাটা মনে হয় আপনি নিজেই আর বিশ্বাস করবেন না; বরং যিনি এই প্রবাদটা চালু করেছেন, তাঁকে পারলে গুম করে ফেলা দরকার। কারণ, অর্থ দিয়েই বিচার হয় সবকিছুর। যার টাকা আছে, তার প্রতি অটোমেটিক শ্রদ্ধা চলে আসে—উল্টো টাকাপয়সাহীন ভালো মানুষকে আমরা পারলে এড়িয়ে চলি।
কাকের মাংস কাকে খায় না
কাকের মাংস কাকে না-ও খেতে পারে, কিন্তু স্বজাতির ক্ষতি করতে আমাদের চেয়ে সিদ্ধহস্ত আর কেউ নেই। নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্য মানুষ তো দূরের কথা, আমরা নিজের বাবা-ভাইদেরও ছাড় দিই না। বরং এই প্রবাদ এখন বললে কাক নিজেই মানুষের গলায় হেসে উঠতে পারে।
ভাঙবে তো মচকাবে না
এ ধরনের কিছু লোক ছিল আমাদের দেশে, কিন্তু এখন খুঁজে পাওয়া দায়। সুযোগ বুঝে টাকা ছাড়লে কিংবা জায়গামতো আপনাকে পৌঁছে দিলে বা বিশেষ বাহিনীর কাছে পাঠালে আপনি ভাঙবেন তো বটেই, একেবারে পুরো মচকে যাবেন। কোনো আদর্শ আপনার আর কাজ করবে না।
কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না
কথা সত্য, কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না। কিন্তু এই দেশে আপনি কষ্ট করলেও কেষ্ট পাবেন না; উল্টো কষ্ট করার দায়ে আপনি হয়ে যাবেন ভুক্তভোগী—মানুষ চাইবে আপনাকে দিয়ে আরও কষ্ট করাতে! কেষ্টর নাম-গন্ধও পাবেন না। অন্যদিকে আপনার যদি থাকে টাকা, মামা আর ক্ষমতা—কষ্ট তো করতেই হবে না, উল্টো কেষ্ট আপনার কাছে ছুটে চলে আসবে।
ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়
বছরের পর বছর এ দেশের মহান দুর্নীতিবাজেরা আমজনতার গায়ে সুন্দরভাবে ইট মেরে যাচ্ছে। হিসেবে আমাদেরকে পাটকেল মারা উচিত, কিন্তু পাটকেল তো বহুদূরের বিষয়, তাদের গায়ে ফুলের টোকাও দিতে পারছি না।
পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায়
সাধারণত অসৎ পথে উপার্জন প্রায়শ্চিত্তে যায় বলে শোনা যায়। দিন বদলেছে, সব সরকারের আমলে আছে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ। এই সুযোগে তেমন ক্ষতি তো হবেই না, উল্টো হাসতে হাসতে পাপের ধন অথবা কালোটাকা সাদা করে ফেলতে পারেন অনেকেই। তা ছাড়া দেশের অনেক জায়গায় কালোটাকা বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ তো আছেই।
দুই নৌকায় পা দেওয়া
দুই নৌকায় পা দেওয়াকে আগে বিপজ্জনক অবস্থা হিসেবে মানা হতো, কিন্তু এখন যার পা দুই নৌকায় থাকে, তাকেই বুদ্ধিমান বলে মানা হয়। সব সময় তার প্রভাব-প্রতিপত্তি বজায় থাকে। শুধু তা-ই নয়, সবাই তার কাছেই যায় পরামর্শ নিতে। কেউ কেউ তো পারলে দুটো পা-ই তিন বা চার নৌকায় দিয়ে রাখে।
শাক দিয়ে মাছ ঢাকা
কয়েক বছর আগেও আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতারা তথা ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা শাক দিয়ে নিজেদের মাছ ঢাকার চেষ্টা করতেন; কিন্তু এখন ওই সবের বালাই নেই। কোনো দরকার পড়ে না শাকের, বরং যার মাছ বেশি দেখা যায়, তার প্রতি সালাম পড়ে বেশি।
ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়
কিছু দিন আগেও প্রবাদটা ভালোভাবে চালু ছিল আমাদের দেশে। কিন্তু এই দেশের সিস্টেমের কারণে প্রবাদটা পালিয়ে গেছে। আপনার ইচ্ছা কি, সদিচ্ছা থাকলেও আপনি কাজ করতে পারবেন না। আপনাকে এমন ঘোরান দেওয়া হবে যে শেষ পর্যন্ত উপায় যদি পেয়েও যান, আপনার ইচ্ছাটা যাবে মরে।
No comments