খেলায় জয়-পরাজয় আছেই
খেলা যেন খেলাই থাকে। তেমনটা প্রত্যাশা সব খেলাপ্রেমীর। খেলার ফলাফলের পরও যদি এমন মানসিকতা থাকে খেলোয়াড়, দর্শক ও শুভানুধ্যায়ীদের_তাহলেই খেলার বৈশিষ্ট্য অটুট থাকে। পরাজিত দলও আগামী খেলায় জয়ের আনন্দ পাওয়ার আশা করতে পারে। এই তো স্বাভাবিক নিয়ম খেলাধুলার।
মোটামুটিভাবে যেকোনো খেলা অনুষ্ঠানের আগে-পরে এমন মানসিকতার ঘাটতি হয় কমই। অন্তত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে তেমন চিত্রই দেখা যাবে। আবার আমাদের এখানে কেউ যদি জানাবশত কিংবা অজান্তেই কিছু খেলার বিষয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো আচরণ করে বসে, তাহলে সে ব্যাপারে ভুল স্বীকার এবং মানসিক কিংবা শারীরিক আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করার মতো ঘটনাও আমাদের চোখে পড়ে। তেমনি একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গেছে ঢাকায় শুক্রবার সকালে। অনেক অনেক যুবক হোটেলে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের কাছে আগের রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছে। আগের রাতে স্টেডিয়াম থেকে হোটেলে যাওয়ার পথে কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলকে বহনকারী বাসের ওপর ঢিল ছোড়ে। মনে করা হচ্ছে, তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের কাছে বাংলাদেশের শোচনীয় হারের কারণে উত্তেজিত হয়ে বাংলাদেশ দলের বাস মনে করেই ঢিল ছুড়েছিল। আর ভুলক্রমে সেই ঢিল গিয়ে পড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের গাড়িতে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ হোটেলে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের খেলোয়াড়দের কাছে দুঃখ প্রকাশ করলেও বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হয়েছে_তা বলতে হবে। কিন্তু পরের দিন সকালেই যখন আমাদের সচেতন যুবকদের বেশ বড় একটি অংশ হোটেলে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে দেখা করে দুঃখ প্রকাশ করেছে, তখন আশা করি আর সংক্ষুব্ধ খেলোয়াড়দের মনে বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো খারাপ ধারণা থাকবে না। অত্যন্ত সোজা কথায়, সাধারণ মানুষও জানে যে খেলায় জয়-পরাজয় আছে। কিন্তু এ জয়-পরাজয়কে নিয়ে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করার কোনো কারণ থাকতে পারে না। আর সেই খেলাটি যদি হয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের, তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে মনে রাখতে হবে, বিদেশিরা আমাদের অতিথি।
শুক্রবারের এ ঘটনা নিছক ভুল নাকি এর পেছনে আর কোনো কারণ লুকিয়ে আছে, সেটিও তদন্ত করে বের করতে হবে। আমাদের ভেবে দেখতে হবে, বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করার জন্য কেউ আছে কি না। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা বিঘি্নত হওয়ায় পাকিস্তানের যে পরিণতি হয়েছে, আশা করি বাংলাদেশের সবাই সেদিকেও খেয়াল রাখবেন; যদিও আমাদের এখানে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তার পরও আবেগও যেন আমাদের সুনাম নষ্ট না করে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কাছে হোটেলে গিয়ে যেসব যুবক দুঃখ প্রকাশ করে এসেছে, তাদেরও সাধুবাদ জানাতে হবে। কারণ তারাও জাতীয় অনুভূতিরই প্রকাশ ঘটিয়েছে সেখানে।
শুক্রবারের এ ঘটনা নিছক ভুল নাকি এর পেছনে আর কোনো কারণ লুকিয়ে আছে, সেটিও তদন্ত করে বের করতে হবে। আমাদের ভেবে দেখতে হবে, বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করার জন্য কেউ আছে কি না। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা বিঘি্নত হওয়ায় পাকিস্তানের যে পরিণতি হয়েছে, আশা করি বাংলাদেশের সবাই সেদিকেও খেয়াল রাখবেন; যদিও আমাদের এখানে এমন কোনো সম্ভাবনা নেই। তার পরও আবেগও যেন আমাদের সুনাম নষ্ট না করে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কাছে হোটেলে গিয়ে যেসব যুবক দুঃখ প্রকাশ করে এসেছে, তাদেরও সাধুবাদ জানাতে হবে। কারণ তারাও জাতীয় অনুভূতিরই প্রকাশ ঘটিয়েছে সেখানে।
No comments